মনোহরগঞ্জে মহিলা ভাইস চেয়ারম্যানকে হত্যা চেষ্টার অভিযোগ ইউপি চেয়ারম্যান স্বামীর বিরুদ্ধে
আমোদ প্রতিবেদক।।
কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা কুসুমকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় তার স্বামী উপজেলার ঝলম দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান জিয়াউর রহমান ওরফে শাহীন জিয়াকে অভিযুক্ত করেছেন তিনি। বুধবার দুপুরে উপজেলা পরিষদে অবস্থিত নিজ বাসভবনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই অভিযোগ করেন তিনি। এছাড়া জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে এই ঘটনায় মনোহরগঞ্জ থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন আফরোজা কুসুম।
কুসুম উপজেলা আওয়ামী লীগের মহিলা বিষয়ক সম্পাদিকা ও কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা মহিলা লীগের সিনিয়র সহ-সভাপতির পদে রয়েছেন। জিয়াউর রহমান উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম-আহবায়কের পদে রয়েছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আফরোজা কুসুম জানান, গত ৩ জুলাই সন্ধ্যায় তিনি উপজেলার বাংলাইশ গ্রাম থেকে প্রাইভেটকারযোগে বাসভবনে ফিরছিলেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টার দিকে গাড়িটি লালচাঁদপুর আসার পর প্রাইভেটকার চালকের মোবাইল ফোনে স্বামী জিয়াউর রহমান ফোন দিয়ে লোকেশন জানতে চায়। চালক জানায় তারা লালচাঁদপুর আছে। পরবর্তীতে রাত ৮ টার দিকে মনোহরগঞ্জ উত্তর বাজারে গেলে তার স্বামী গাড়ি থামাতে বলে। গাড়ির জানালার ভিতর মাথা ঢুকিয়ে গাড়িতে একা আছেন কিনা তা নিশ্চিত হন। পরবর্তীতে প্রাইভেটকারটি মনোহরগঞ্জ বাজারের দক্ষিণ মাথায় যাওয়া মাত্র ৭/৮ জন ব্যক্তি মুখে মাস্ক ও হেলমেট পরিহিত মোটরসাইকেল নিয়ে গাড়ির পেছনে ধাওয়া করে। মনোহরগঞ্জ বাজারের খোদাইভিটা এলাকার বালুর মাঠের সামনের পাকা রাস্তার ওপর তারা মোটরসাইকেল দিয়ে ঘেরাও করে গাড়ি থামিয়ে দরজা খুলতে বলে। এ সময় চালক দরজা না খুললে তারা গালমন্দ করতে থাকে। পরবর্তীতে গাড়ির দরজা খুললে ওই লোকগুলো তাকে হত্যাসহ বিভিন্ন রকমের হুমকি প্রদান করে। আক্রমণের চেষ্টার সময় লোকজন এগিয়ে আসলে ওই লোকগুলো চলে যায়।
আফরোজা কুসুম আরো জানান, শাহীন জিয়া বিয়ের পর থেকে প্রায়ই যৌতুকের জন্য তাকে নির্যাতন ও মারধর করেছে। এ ঘটনায় আদালতে একটি মামলাও করেছেন তিনি। মামলাটি বর্তমানে পিবিআই তদন্ত করছেন। এরপর থেকে সে বিভিন্ন সময় মামলা প্রত্যাহারের জন্য আমাকে হত্যা করাসহ বিভিন্ন হুমকি দিয়ে আসছিল। সে প্রকাশ্যে হুমকি দিয়ে বলেছে মামলা প্রত্যাহার না করলে আমাকে একশ’ পুরুষ দিয়ে ধর্ষণ করাবে। এছাড়া আমার বাবার বাড়িতেও ২০/২৫ জন সন্ত্রাসী পাঠিয়ে হামলা করিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করিয়েছে সে। কুসুমের বিশ্বাস তার স্বামী জিয়াউর রহমানই সেদিন তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেছিলো। লোকজন চলে আসায় তিনি প্রাণে রক্ষা পান।
এসব প্রসঙ্গে জানতে অভিযুক্ত জিয়াউর রহমান ওরফে শাহীন জিয়ার ফোনে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি রিসিভ করেননি। এক পর্যায়ে মোবাইল ফোন বন্ধ করে ফেলেন।
মনোহরগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মাহাবুব কবির বলেন, উপজেলা পরিষদের মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আফরোজা কুসুম থানায় একটি জিডি করেছেন। আমরা সেটির তদন্ত করে দেখছি।