যে দিগন্তে সূর্যশিখা চিরদীপ্যমান
।। সফিকুল বোরহান।।
কোটি বছর আগে ভূ-সৃষ্টিতে যে উন্মাতাল বিবর্তন এসেছিল তার স্থিতিমানে কুমিল্লা এক অবিস্মরণীয় অবস্থানে মহাজাগতিক পরিবারে স্বর্ণপ্রভায় দীপ্যমান। নয়নাভিরাম সৌন্দর্য আর প্রাকৃতিক অফুরন্ত
সম্পদ নিয়ে কুমিল্লা নিজস্ববলয়ে চিরভাস্বর। সে ধারাবাহিকতায় কুমিল্লা শিক্ষায়, সাংস্কৃতিতে, সৌকর্যে, কর্ষণে উজ্জ্বলতম। বহমান জাগতিকতায় সবকিছুর একটা ধীরচলন চলে আসে। নদী যেমন শীর্ণ হয় কালপরিক্রমায় তেমনি কুমিল্লাও কেমন সরসহীন সুর তুলছিল। এরকম ধীরচলনে কখনো কখনো কোনো নক্ষত্র বিদ্যুৎচ্ছটা হয়ে ক্রমে আবির্ভূত হয়। আমরা কুমিল্লাবাসী তেমন এক প্রজ¦লমান দীপশিখার জাগরিত পথে এগুতে থাকি ক্রমে। এ এগুনোর আলোকবর্তিকার মহানায়ক আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার, সংসদ সদস্য, কুমিল্লা-৬। প্রণতি তাঁকে।
‘কুমিল্লা এগুলে এগুবে বাংলাদেশ’ সমকালীন এই স্লোগান কুমিল্লার দিগন্তে আজ প্রসারিত। আপামর জনতার কাঙ্খিত উচ্চারণ- প্রিয় বাহার ভাই, জাগৃত কুমিল্লার নন্দিত প্রদর্শক আ. ক. ম. বাহাউদ্দিন বাহার এর সৃজনী স্লোগানের আলোকমালায় কুমিল্লার প্রতিটি অঞ্চল আজ আলোকিত। সে আলোর ঝর্ণাধারার অবগাহনে কুমিল্লার জনগণ পুলকিত, শিহরিত। অভিনন্দনের শাব্দিক উচ্চারণ সব নয়, কী সীমাহীন কর্মপরিসরে একজন নন্দিত জনকর্ণধারকে প্রতিনিয়ত ডুবে থাকতে হয়, কাছ থেকে না দেখলে বোঝা যায় না, জানা যায় না।
কর্ষিত জমি আর জমির বীজ পুষ্ট থাকলে ফলন আশাতীত হয়ে ওঠে। তেমনি এক সম্ভ্রান্ত উচ্চবংশীয় মুসলিম পরিবারের সুঠামগঠনের সৌম্য ও বলিষ্ঠ মানুষ আমাদের সবার বাহার ভাই। চলনে রাজকীয় প্রভা, বলনে দৃপ্ততা উদ্ভাসিত; জীবনধারণ জৌলুশহীন, সচকিত। একটা মোহময়ী হাসির প্রদ্যুৎ চমক মন ভরে যাওয়ার মতো। আর বৈরী প্রবাহে বাঘের হুঙ্কার, যে সামনে থেকেছে সে দেখেছে।
কৈশোর উত্তীর্ণ সময়ে আমরা অবাক হয়ে একজন বরেণ্য ‘অমিতাভ’কে দেখতাম বিষ্মিত দৃষ্টিতে। অমিতাভ বুঝি নিজেও অবাক হতেন যদি দেখতেন বাহার ভাইকে সেই বয়সটায়। আর যৌবন শুরুর সেই সময়টাতেই রাজনীতিকে বুকে আগলে নিলেন গভীরভাবে। তারও আগে একাত্তরে যখন আমাদের দেশটা পোড়া শুরু হয়েছিল, পাকিস্তানী রাজজান্তা যখন তার আগুনবাহিনী আমাদের স্বত্বায় লেলিয়ে দিল, যখন আমার মা-বোন-জমি-সবুজ জ¦লছিল, তখন আমাদের রাজপুতটাও বিদ্রোহী মানসে ঝাঁপালো দেশমাতৃকা রক্ষায়। বাহার ভাইয়ের ফরসা চামড়ায় কোনো যুদ্ধ পোড়া ক্ষত কিংবা মুখমন্ডলে মুক্তিযোদ্ধার তেজোদীপ্ত আভা আমরা চাক্ষুস দেখতে পাইনি। কিন্তু শুনে যে শিহরণ আমাদের হৃৎপিন্ডকে বিবশ করেছে, তা বলে প্রকাশ করা যায় না।
পৌর চেয়ারম্যান তখনকার বয়সে কাউকে কী মানায়! পৌরপিতা হওয়ার দৃশ্যমান সৌষ্ঠব কী তখন বাহার ভাইয়ের হয়েছিল? কী অমলিনভাবে তিনি গৌরবময় কুমিল্লার সিংহাসনটাকে প্রস্ফূটিত করেছিলেন। আর আজ সফল জনপ্রতিনিধি হয়ে শিক্ষাঙ্গন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, মসজিদ, মাদ্রাসা, দেবালয়, মন্দির, সড়ক, ফ্লাইওভার, সড়ক বাতি, মার্কেট, দিঘি-পুকুরের প্রভূত উন্নতি সাধন করেছেন। দল-মত নির্বিশেষে সমস্ত প্রশাসনিক শক্তিমানদের নিয়ে মাদক, চাঁদাবাজী, সন্ত্রাস, টিজিং এর মতো ভয়াবহ বিষকে রীতিমতো ঘোষণা দিয়ে নিয়ন্ত্রণাধীনে কুমিল্লাকে আলোকিত করেছেন। সুদূর প্রসারী পরিকল্পনায় স্বাপ্নিক স্রোতধারা গড়ছেন কুমিল্লাকে নিয়ে।
বিষ্ময়কর সৃষ্টির এক সেরা উপাদান মানব শরীর। তিনি কী অবলীলায় দূরন্ত রাজনীতি আর মানব কল্যাণে ঝড়ো গতিতে বিরামহীন চলার পরও অমোঘ নিয়মে আসা অসুস্থতাকে জয় করে নিয়েছেন। বিশ্রাম কখন নেন তিনি আমাদের জানা নেই। কাছ থেকে দেখা এতো ব্যস্ততা কোনো রাজনীতিবীদের, কোনো জনপ্রতিনিধির, কোনো মানুষের থাকতে পারে আমাদের জানা ছিল না। প্রশাসন থেকে শুরু করে নির্বাচনী এলাকার যতো ঝুট-ঝামেলা, বিচার-আচার, কালো আধিপত্য নিয়ন্ত্রণ, রাষ্ট্রীয় বিধিমালা পালন থেকে জনগণের সার্বিক নিরাপত্তা, ধর্মীয়, রাষ্ট্রীয়, সামাজিক আচার কিংবা যে কোনো উৎসব নির্ভিঘœ বলয়ে পালন করার মহান দায়িত্ব মাথায় তুলে নেয়া- বাহার ভাই আপনি এতো শক্তি পান কোথা থেকে!
আপনার ধার্মিক প্রজ্ঞা আমাদের জন্য অনুকরণীয়। আপনার দানশীলতায় আমরা মুগ্ধ। বিপদগ্রস্থ, শোকগ্রস্ত, রোগক্লিষ্ট, অভাবী জনতার পাশে আপনার হস্ত প্রসারন স্বর্গময়। দারিদ্র বিমোচন এবং করোনাকালীন দূর্যোগে আপনার ভূমিকা অতুলনীয়। আপনার শিষ্টাচার, আপনার সাহস, আপনার বিচারিক কার্যক্রম পুরো দেশটাকে যদি আপনার ক্ষেত্র অনুকরণীয় করা যেত- সোনার বাংলা আক্ষরিক অর্থেই সোনার বাংলা হতো।
পারিবারিক বলয়ে স্ত্রীর কাছে এক অনন্য স্বামী, কন্যাদের কাছে অসাধারণ বাবা, ভাই-বোনদের কাছে স্নেহার্দ ভাই, আত্মীয়দের কাছে শুভার্থী ছায়া। আর প্রতিবেশীদের কাছে প্রিয়তি অভিভাবক। জনগণের কাছে বটবৃক্ষসম সীমাহীন আশ্রয়। একটা মানুষের কাছে আমরা আর কত আশা করতে পারি! দীর্ঘ জীবন এরকম পরিধিকে শক্তিমান করুক।
আপনার মহিমান্বিত পদক্ষেপে কুমিল্লার প্রতিটা ক্ষেত্র, প্রতিটা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, প্রতিটা শিক্ষার্থী, প্রতিটা কর্মালয়, প্রতিটা মানুষ আরো অগ্রসরমানের দিপ্তশিখা হয়ে উঠুক। সে স্ফূরণ ছড়িয়ে পড়ুক সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, মহানায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সৃষ্ট সারা বাংলাদেশে। প্রিয় মুক্তমনা, আমাদের দৈন্যতা জনসম্মুখে উচ্চারণ না করে ভবিষ্যতে আমরা আপনার প্রসারিত মননশীলতার প্রয়োজনীয় আশ্রয় কামনা করবো। শক্তিমান আপনাকে আরো ব্যপ্তি বর্ষণ করুক।
লেখক:অন্বেষা, রানির দিঘির পূর্ব পাড়, কুমিল্লা।
০১৭১৪-৩৭২২০০