শতবর্ষী হোক আমাদের আমোদ

॥ইসরাত শিরিন॥
কুমিল্লায় জন্ম গ্রহণ করা বা কুমিল্লায় যাঁদের নাড়িপোতা তাঁরা বিগত ৬৮ বছর ধরে প্রকাশিত হয়ে আসা সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকার নাম শোনেন নি বা এই পত্রিকা পড়েন নি এমন মানুষ হয়তো পাওয়া বিরল। এই পত্রিকার পেছনের স্বপ্নদ্রষ্টা যে মানুষটি ছিলেন মোহাম্মদ ফজলে রাব্বী, তাঁর সাথে আমার পারিবারিক আদিসূত্র খুব শক্ত করে বাঁধা। তিনি আমার বাবার আপন বড় মামা। তাঁর থেকেও বড় কথা আমার বাবা চাচা ফুপিদের মধ্যে এই মানুষটির জীবন যাপন দর্শনের শতভাগ অনুসরণের প্রচেষ্টা আমি দেখে আসছি আজ অবধি ভীষণ প্রকট ভাবে। ফজলে রাব্বী দাদাভাই মুক্তিযুদ্ধ পূর্ববর্তী পাকিস্তান সেনাবাহিনীতে সেনা অফিসার ছিলেন, জীবদ্দশায় শেষদিন পর্যন্তও তিনি তার কথা কাজ জীবন দর্শনে প্রচণ্ড অনড়, প্রখর দেশাত্মবোধ সম্পন্ন, অনৈতিক যেকোন কিছুর সাথে আপোষহীন কড়া ব্যক্তিত্বের একজন মানুষ ছিলেন। এখনো যাপিত জীবনের যে কোন বিষয়ে তাৎপর্যপূর্ণ কোন আলোচনা উঠলেই বাবার মুখে তাঁর বড় মামার আদেশ উপদেশ আর জীবন ভাবনার হাজারো ইতিহাস আমি মুগ্ধ হয়ে শুনতে থাকি।
একটা পত্রিকা কিভাবে পরিবারের একজন সদস্যের মত আদরে যত্নে বড় হতে পারে আমি নিজ চোখে সেই সব কর্ম যজ্ঞ অবাক হয়ে দেখেছি।
পরবর্তীতে দাদার সুযোগ্য সন্তান বাকীন রাব্বী চাচুকে দেখেছি কি পরম মমতায় সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকাকে একই রকম যত্নে পরিচর্যায় গতিময় রাখতে। সুদূর পরবাসে বসতি গড়েও তিনি তাঁর দায়িত্ব থেকে সরে যান নি।
ঐতিহ্যবাহী আমোদ পত্রিকা তাই শুধু ছাপার অক্ষরের একটা কাগজ নয় এটি আমাদের পরিবারের কয়েক প্রজন্মের আবেগ ভালোবাসা আর সৎ কর্মশীল উদ্যোগের উত্তরোত্তর সাফল্যময় এক গৌরব ঐতিহ্যের নাম। আজকের এ আনন্দঘন দিনে কায়মনোবাক্যে প্রার্থনা করি, শতবর্ষী হোক আমাদের আমোদ।
লেখক: আমোদ প্রতিষ্ঠাতা সম্পাদকের দৌহিত্রী। তিনি টিভি চ্যানেলে সঙ্গীতা খান নামে সংবাদ পাঠ করতেন।