শিক্ষানুরাগী সামছুল হক আর নেই
মমিন মোল্লা, মুরাদনগর, কুমিল্লা।।
কুমিল্লা জেলার, মুরাদনগর উপজেলা, বাঙ্গরা বাজার থানা, হায়দরাবাদ গ্রামের কৃতি সন্তান।
হায়দরাবাদ সামছুল হক কলেজ ও জাহানারা হক ডিগ্রী কলেজসহ বহু শিক্ষা-প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও শিক্ষানুরাগী, জনাব আলহাজ্ব সামছুল হক
১৫ ডিসেম্বর রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।।
ঢাকায় রাত ১১:৩০ ঘটিকায় প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয়েছে।দ্বিতীয় নামাজে জানাজা ১৬ ই ডিসেম্বর, দুপুর ২:৩০ মিনিটে হায়দরাবাদে, কলেজ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কুমিল্লা জেলাধীন মুরাদনগর উপজেলার উত্তর পূর্বাঞ্চলের বুড়ি নদী সংলগ্ন নিম্নাঞ্চলের মানুষের শিক্ষায় অগ্রগতি ও নিম্ন আয়ের সাধারন মানুষের সন্তানদের উচ্চ শিক্ষা দানের উদ্দেশ্যে ৬ষ্ঠ হতে স্নাতক শ্রেনি পর্যন্ত এবং ধর্মীয় শিক্ষা দানের উদ্দেশ্যে ১ম শ্রেনি হতে দাখিল পর্যন্ত একই শিক্ষা কমপ্লেক্সে প্রায় ১৩ একর ভূমির উপর ব্যাক্তিগত ভাবে একক অর্থায়নে পল্লী গ্রামের এ অঞ্চলে শিক্ষার আলো বিস্তারে উদ্যোগী হয়ে নির্মান করেছেন,
হায়দরাবাদ মাসুম বিল্লাহ মেমোরিয়াল মাদ্রাসা।
বেগম জাহানারা হক বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়।
৩সামছুল হক কলেজ।
বেগম জাহানারা হক ডিগ্রি কলেজ।
সায়মা হক মেমোরিয়াল এতিমখানা।
মুরাদনগর উপজেলার আন্দিকুট ইউনিয়নের হায়দরাবাদ গ্রামের মৃত মো: আবদু মিয়ার গর্বিত ছেলে নিজের একান্ত প্রচেষ্টায় কেমিক্যাল ব্যবসার মাধ্যমে ঢাকায় প্রতিষ্ঠা লাভ করেন জনাব মো: শামসুল হক সাহেব ।
কিন্তু তিনি ভুলে যাননি নিজ জন্ম ভূমি হায়দরাবাদের কথা। তিনি ছেলে বেলায় দেখেছেন এলাকার ছেলে মেয়েরা কষ্ট করে অনেক দূর দূরান্তে পড়ালেখা করার জন্য যায়।
এ বিষয়টি মনে রেখে তিনি ১৯৯১ সালে ৩.১৪ একর ভূমির উপর নিজ নামে নির্মান করেন হায়দরাবাদ সামছুল হক কলেজ।
তিন তলা ভবনের এ কলেজটিতে বিজ্ঞান, বানিজ্য, মানবিক বিভাগে রয়েছে প্রায় পাচঁ শত ছাত্র-ছাত্রী। শিক্ষক ২৪ জন ও কর্মচারি ১০জন।
নারী শিক্ষা প্রসারের উদ্দেশ্যে ১৯৯২ সালে ৩.১০ একর ভূমির উপর স্ত্রীর নামে হায়দরাবাদ বেগম জাহানারা হক বালিকা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে এ বিদ্যালয়ে প্রায় ৬০০ জন ছাত্রী রয়েছে।
এলাকার ছেলে-মেয়েদের উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষে ১৯৯৪ সালে ৩.১১ একর ভূমির উপর স্ত্রীর নামে প্রতিষ্ঠা করেন হায়দরাবাদ বেগম জাহানারা হক ডিগ্রি কলেজ। অবকাঠামো গত ভাবে এ কলেজের একটি দুতলা ভবন, একটি টিনসেড বিল্ডিং এবং ছাত্রাবাস হিসাবে একটি টিনসেড ঘর রয়েছে।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিনে বিএ, বিএসএস, বিবিএস ও বিএসসি কোর্স সমূহে বর্তমানে এ কলেজে প্রায় চার শত শিক্ষার্থি রয়েছে।
এ কলেজে কারিগরি বোর্ডের অধীনে এইচ এস সি (বিএম) ও বাংলাদেশ উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের এইচ এস সি শাখা রয়েছে।
কলেজ কতৃপক্ষ এ কলেজে অচিরেই অনার্স কোর্স চালুর বিষয়ে বিশেষ ভাবে চিন্তুা-ভাবনা করছে।
ধর্মীয় শিক্ষার ব্যাপারে ও রয়েছে গভীর আগ্রহ। এ কারনে একমাত্র ছেলের অকাল মৃত্যুতে এ ছেলের নামে প্রায় ৩ একর ভূমির উপর হায়দরাবাদ মাসুম বিল্লাল মেমোরিয়াল মাদ্রাসা নামে একটি দাখিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠা করেন।
১ম শ্রেনি হতে দাখিল পর্যন্তু এ মাদ্রাসায় বর্তমানে প্রায়ই ২০০ এর অধিক শিক্ষার্থি রয়েছে।
এ ছাড়াও এ মাদ্রাসায় কারিগরি শিক্ষা বোর্ডের অধিনে এস এস সি শাখা রয়েছে।
সামছুল হক প্রতিষ্ঠিত শিক্ষা ক্যাম্পাস গুলো এক সাথে হওয়ায় এখানে সব সময় শিক্ষার সুন্দর পরিবেশ বিরাজ করছে।
প্রতিষ্ঠান গুলোতে রয়েছে প্রতিষ্ঠান প্রধান সহ অভিজ্ঞ শিক্ষক মন্ডলী। ২০১২ সালের ২০ ফেব্রুয়ারি প্রতিষ্ঠাতাসহ এলাকার কয়েকজন কৃতি সস্তানের উদ্যোগে প্রায় ৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে এক শহীদ মিনার নির্মান করা হয়েছে।
২০১৫ সালের ২৮ জানুয়ারী সেখানে সায়মা হক মেমুরিয়াল এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করা হয়।