“সবার সাথে বন্ধুত্ব-কারো সাথে বৈরিতা নয়”

 

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ১৯৭৩ সালের ২৩ মে বিশ্ব শান্তি পরিষদ কর্তৃক ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করা হয়। বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী ম্যারি কুরি ও পিয়েরে কুরি দম্পতি বিশ্ব শান্তির সংগ্রামে যে অবদান রেখেছেন, তা স্মরণীয় করে রাখতে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৫০ সাল থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে, মানবতার কল্যাণে, শান্তির সপক্ষে বিশেষ অবদানের জন্য বরণীয় ব্যক্তি ও সংগঠনকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করে আসছে।

বঙ্গবন্ধু’র জুলিও কুরি শান্তি পুরস্কার এবং বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় নীতি “সবার সাথে বন্ধুত্ব-কারো সাথে বৈরিতা নয়”

 

নিপীড়িত, নিষ্পেষিত, শোষিত, বঞ্চিত বাংলার মানুষের অধিকার আদায়ের লক্ষ্যে বঙ্গবন্ধু ডাক দিয়েছেন স্বাধীনতা সংগ্রামের। তাঁর ডাকে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ নয় মাস যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করে। স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার পর জাতির স্থপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ফ্যাসিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদ পরিহার করে বন্ধুত্বের ভিত্তিতে দেশ পরিচালনা করে বিশ্বের সুনাম অর্জন করেন। আর বিশ্ব মানবতায় অবদান রাখার কারণে বিশ্ব শান্তি পরিষদ বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ পদকে ভূষিত করে। বিশ্বশান্তি পরিষদের এ পদক ছিল জাতির পিতার কর্মের স্বীকৃতি এবং বাংলাদেশের জন্য প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মান।

ম্যারি কুরি ও পিয়েরে কুরি ছিলেন বিশ্ববিখ্যাত বিজ্ঞানী। রেডিওলজির ওপর উইলিয়াম রঞ্জেনের আবিষ্কারের পথ ধরে কুরি দম্পতি তাদের গবেষণা চালিয়ে যান এবং পলোনিয়াম ও রেডিয়ামের মৌল উদ্ভাবন করেন। তাদের উদ্ভাবন পদার্থবিদ্যায় এক নতুন দিগন্তের উন্মোচন করে। বিশ্ব শান্তির সংগ্রামে এই বিজ্ঞানী দম্পতির মহান অবদান চিরস্মরণীয় করে রাখার লক্ষ্যে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ১৯৫০ সাল থেকে ফ্যাসিবাদবিরোধী, সাম্রাজ্যবাদবিরোধী সংগ্রামে, মানবতার কল্যাণে শান্তির সপক্ষে বিশেষ অবদানের জন্য বরণীয় ব্যক্তি ও সংগঠনকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদকে ভূষিত করে আসছে।

বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে ১৯৪৮ ও ’৫২ সালে কারাবরণ করেন বঙ্গবন্ধু। পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে বৈষম্য, সংখ্যাগরিষ্ঠ বাঙালির ওপর নির্যাতন, নিপীড়ন বঙ্গবন্ধু মেনে নিতে পারেননি। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ রেসকোর্স ময়দানের বিশাল জনসভায় পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বঙ্গবন্ধু বললেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।’

৭ মার্চের ভাষণে বঙ্গবন্ধু মূলত স্বাধীনতারই ঘোষণা দেন। ২৫ মার্চ রাত ১২টার পর তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়। দীর্ঘ ৯ মাসের যুদ্ধ শেষে পাকিস্তানি বাহিনী পরাজিত হলে স্বাধীন বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে। কোটি কোটি বাঙালির দাবির পরিপ্রেক্ষিতে ও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে ১৯৭২ সালের ৮ জানুয়ারি পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্তি পান বঙ্গবন্ধু। ১০ জানুয়ারি স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করেন তিনি।

বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয় তখন বিশ্ব পরিস্থিতি, শান্তি, প্রগতি, গণতান্ত্রিক শক্তিগুলোর এবং গণতন্ত্র ও জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের অনুকূলে পরিবর্তিত হয়েছিল। এ সময় উপমহাদেশে বাংলাদেশ, ভারত ও পাকিস্তানের ভেতর সৎ প্রতিবেশীমূলক সম্পর্ক স্থাপন ও উপমহাদেশে শান্তির সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়।

মুক্তিযুদ্ধের কালপর্বে ভারত-সোভিয়েত শান্তি, মৈত্রী ও সহযোগিতা-চুক্তি ১৯৭১ এবং বাংলাদেশ-ভারত শান্তি, মৈত্রী ও সহযোগিতা-চুক্তি ১৯৭২, বাংলাদেশের মৈত্রী-সম্পর্কে এই উপমহাদেশে উত্তেজনা প্রশমন ও শান্তি স্থাপনের ভিত্তি প্রতিষ্ঠা করেন বঙ্গবন্ধু।

বঙ্গবন্ধু সরকার কর্তৃক জোট নিরপেক্ষ নীতি অনুসরণ এবং শান্তি ও ন্যায়ের পক্ষে অবস্থান গ্রহণের নীতির ফলে বাংলাদেশ বিশ্ব সভায় একটি ন্যায়ানুগ দেশের মর্যাদা লাভ করে। সবার প্রতি বন্ধুত্বের ভিত্তিতে বৈদেশিক নীতি ঘোষণা করে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেন, ‘পৃথিবীর বৃহত্তম শক্তি যে অর্থ ব্যয় করে মানুষ মারার অস্ত্র তৈরি করছে, সেই অর্থ গরিব দেশগুলোকে সাহায্য দিলে পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠা হতে পারে।’

সেই পরিপ্রেক্ষিতে ১৯৭২ সালের ১০ অক্টোবর চিলির রাজধানী সান্তিয়াগোতে বিশ্ব শান্তি পরিষদের প্রেসিডেন্সিয়াল কমিটির সভায় বাঙালি জাতির মুক্তি আন্দোলন এবং বিশ্ব শান্তির সপক্ষে বঙ্গবন্ধুর অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ জুলিও কুরি শান্তি পদক প্রদানের জন্য শান্তি পরিষদের মহাসচিব রমেশ চন্দ্র প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। পৃথিবীর ১৪০টি দেশের শান্তি পরিষদের ২০০ প্রতিনিধির উপস্থিতিতে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।

শান্তি পরিষদের ওই সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে ১৯৭৩ সালের মে মাসে এশিয়ান পিস এন্ড সিকিউরিটি কনফারেন্স অনুষ্ঠান উপলক্ষে বিশ্ব শান্তি পরিষদ ঢাকায় দুই দিনব্যাপী এক সম্মেলনের আয়োজন করে। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ থেকে বিশ্ব শান্তি পরিষদের শাখাগুলোর বহু প্রতিনিধি এই সভায় যোগ দেন। এসব প্রতিনিধি ছাড়াও আপসো, পিএলও, এএমসি সোয়াপো ইত্যাদি সংস্থার অনেক প্রতিনিধি উপস্থিত হয়েছিলেন।

অধিবেশনের দ্বিতীয় দিন ২৩ মে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের উত্তর প্লাজায় উন্মুক্ত চত্বরে সুসজ্জিত প্যান্ডেলে বিশ্ব শান্তি পরিষদ আয়োজিত অনুষ্ঠানে আন্তর্জাতিক কূটনীতিকদের বিশাল সমাবেশে বিশ্ব শান্তি পরিষদের তৎকালীন মহাসচিব রমেশ চন্দ্র বঙ্গবন্ধুকে ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক প্রদান করেন। এরপর তিনি বলেন, ‘শেখ মুজিব শুধু বঙ্গবন্ধু নন, আজ থেকে তিনি বিশ্ববন্ধুও বটে।’

বঙ্গবন্ধুর আগে যারা ‘জুলিও কুরি’ শান্তি পদক লাভ করেছিলেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন- ফিদেল ক্যাস্ট্রো, হো চি মিন, ইয়াসির আরাফাত, সালভেদর আলেন্দে, নেলসন ম্যান্ডেলা, ইন্দিরা গান্ধী, মাদার তেরেসা, কবি ও রাজনীতিবিদ পাবলো নেরুদা, জওহরলাল নেহেরু, মার্টিন লুথার কিং, নিওনিদ ব্রেজনেভ প্রমুখ।

উপমহাদেশের শান্তি ও প্রগতি সম্বন্ধে বঙ্গবন্ধুর দূরদর্শী চিন্তাধারা প্রকাশ পেয়েছিল দেশে-বিদেশে তার বিভিন্ন বিবৃতিতে। ফেব্রুয়ারি ১৯৭২ সালে কলকাতায় তার সম্মানে প্রদত্ত নাগরিক সংবর্ধনায় তিনি পাকিস্তানের প্রতি দৃষ্টি রেখে বলেছিলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি না প্রতিশোধ গ্রহণে কোনো মহৎ কর্তব্য পালন করা যায়।’ ১৯৭২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি, সন্ধ্যায় কলকাতার রাজভবনে তার সম্মানে প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী প্রদত্ত ভোজসভায় তিনি একটি ঐতিহাসিক উক্তি করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন, ‘আমার একান্ত কামনা, উপমহাদেশে অবশেষে শান্তি ও সুস্থিরতা আসবে। প্রতিবেশীদের মধ্যে পারস্পরিক বিরোধিতার বন্ধ্যানীতির অবসান হোক। আমাদের জাতীয় সম্পদের অপচয় না করে আমরা যেন তা আমাদের দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে ব্যবহার করি। দক্ষিণ এশিয়াকে একটি শান্তিপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত করায় আমরা সচেষ্ট রইব, যেখানে আমরা সুপ্রতিবেশী হিসেবে পাশাপাশি বাস করতে পারি এবং যেখানে আমাদের মানুষের মঙ্গলার্থে আমরা গঠনমূলক নীতিমালা অনুসরণ করতে পারি। যদি আমরা সেই দায়িত্বে ব্যর্থ হই, ইতিহাস আমাদের ক্ষমা করবে না।’

উপমহাদেশের উত্তেজনাময় পরিস্থিতিতে যখন রণাঙ্গন থেকে রক্তের দাগও মুছে যায়নি, আঞ্চলিক সহযোগিতা বিকাশের এই উদাত্ত আহ্বান, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশের একজন রাষ্ট্রনায়কের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা আর পরিপক্বতার পরিচায়ক দেশে বঙ্গবন্ধু করেছিলেন একই কথার পুনরাবৃত্তি। ১৯৭৪ সালের ৪ মার্চ তিনি কুমিল্লার দাউদকান্দিতে এক জনসভায় বলেছিলেন, ‘এই উপমহাদেশে আমরা বাংলাদেশ, ভারত, পাকিস্তান, নেপাল আর শ্রীলংকা মিলে শান্তিতে বসবাস করতে চাই। আমরা কারও সঙ্গে বিবাদ চাই না। আমরা স্বাধীন এবং সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে, আত্মমর্যাদার সঙ্গে একে অন্যের সঙ্গে ভ্রাতৃত্বপূর্ণ মনোভাব নিয়ে বাস করতে চাই। আমি চাই না যে আমাদের বিষয়াদিতে কেউ হস্তক্ষেপ করুক। আমরাও অন্যের বিষয়াদিতে হস্তক্ষেপ করতে আগ্রহী নই।’

১৯৭৪ সালের জুলাই মাসেই বার্মার (বর্তমান মিয়ানমার) সঙ্গে সমুদ্রসীমা নির্ধারণের জন্য বঙ্গবন্ধু সেই দেশে একটি প্রতিনিধি দল প্রেরণ করেন। সেই দলের নেতৃত্ব প্রদান করেন সেই সময়ে রেঙ্গুনে (বর্তমান ইয়াঙ্গুন) বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত খাজা কায়সার। প্রতিনিধি দলটির সদস্যদের মধ্যে ছিলেন, সেই সময়ের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আইন উপদেষ্টা ব্যারিস্টার হারুনুর রশিদ আর চিফ হাইড্রোগ্রাফার আবু হেনা। সেটাই ছিল মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশের সমুদ্রসীমা নির্ধারণ সমঝোতার প্রথম পদক্ষেপ। আমরা এখন সবাই জানি, বঙ্গবন্ধু সমুদ্র আইন করেছিলেন ১৯৭৪ সালে আর জাতিসংঘ তা করেছে ১৯৮২ সালে। বঙ্গবন্ধুর ধারাবাহিকতায় বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সৃজনশীল কূটনৈতিক দক্ষতায় ভারত ও মিয়ানমারের সাথে সমুদ্রসীমা বিরোধের নিষ্পত্তি করেছেন। বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার আরেক অনন্য সাধারণ উদাহরণ।

১৯৭৫ সালের মে মাসে জ্যামাইকার কিংস্টনের কমনওয়েলথ শীর্ষ সম্মেলনে তার একক প্রচেষ্টায়। সেই সম্মেলনের যুগ্ম ইশতেহারের ১৪ অনুচ্ছেদ রয়েছে একটি ঘোষণা। তাতে বলা হয়েছে যে, কিছু অমীমাংসিত সমস্যার জন্য বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কষ্টের সৃষ্টি হয়েছে, হয়েছে জাতীয় পুনর্গঠনের গতি শ্লথ। তার মধ্যে রয়েছে ‘মানুষের স্বদেশ পুনঃপ্রেরণ এবং সম্পত্তির বাটোয়ারা’। সেই ঘোষণায় কমনওয়েলথ সরকারপ্রধানরা আশা করেন যে ‘সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর’ মধ্যে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে এই সমস্যাবলির সমাধান ঘটবে।

এ ধরনের একটি প্রস্তাব পাস করানো ছিল বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের অভিপ্রায়। পাকিস্তানের কূটনীতিবিদদের প্রতি ভুট্টোর আদেশ ছিল যে বাংলাদেশের এই উদ্যোগ বানচালের যেন সর্বাত্মক প্রচেষ্টা করা হয়। সেই উদ্দেশ্যে কিংস্টনে এসেছিল কানাডায় পাকিস্তানের হাইকমিশনার ইফতেখার আলী। বাংলাদেশে ভুট্টোর সফর সম্বন্ধে তিনি অন্য সরকারপ্রধানদের জ্ঞাত করা এবং বাংলাদেশের শান্তি প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে অবস্থান নেয়া। বঙ্গবন্ধুর বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী মাইকেল ম্যানলি বললেন যে তার মতে, যুগ্ম ইশতেহারে বাংলাদেশের বক্তব্যটি ব্যক্ত হওয়া উচিত এবং কী ব্যক্ত হবে তার একটি খসড়া যেন বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল প্রণয়ন করে। স্বাগতিক দেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মাইকেল ম্যানলি ছিলেন সেই সম্মেলনের সভাপতি। তার বক্তব্যের গুরুত্ব তাই ছিল অনেক। সেই বক্তব্যের সঙ্গে সঙ্গেই বক্তব্য প্রদান করলেন হ্যারল্ড উইলসন। তিনি বললেন যে বাংলাদেশের দাবি ব্রিটেন সর্বান্তঃকরণে সমর্থন করে। তার ভাষায়, ইতিহাসের এমন কোনো নজির নেই যে দুই জাতিতে পরিণত রাষ্ট্রের মধ্যে সম্পত্তির যথাযথ বাটোয়ারা হয়নি।

শুধু বাদ সাধলেন তানজানিয়ার জুলিয়াস নায়েরেরে। তার বক্তব্য, তিনি বাংলাদেশের প্রতি সহানুভূতিশীল। তবে কমনওয়েলথ একটি ক্লাব। পাকিস্তান তার সদস্য নয়। অতএব, এই ক্লাবটির কি উচিত হবে সেই দেশকে জড়িয়ে কোনো প্রস্তাব পাস করা? বোঝা গিয়েছিল বঙ্গবন্ধুর বক্তব্য আর মাইকেল ম্যানলি ও হ্যারল্ড উইলসনের সমর্থন বঙ্গবন্ধুর সপ্তাহ শেষের পরিকল্পনা উদ্ভূত। উপস্থিত সবাই উৎকণ্ঠিত হয়েছিলেন এই ভেবে, সেই প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু কী বলবেন জুলিয়াস নায়েরেরের কথার জবাবে। বঙ্গবন্ধু চোখ থেকে তার কালো ফ্রেমের চশমাটি অপসরণ করে স্থির দৃষ্টিতে তাকিয়ে ছিলেন জুলিয়াস নায়েরেরের দিকে।

তারপর বললেন, ‘তুমি ঠিকই বলছো, জুলিয়াস। কমনওয়েলথ একটি ক্লাব। কিন্তু আমি সেই ক্লাবেরই একজন সদস্য। অন্য সদস্যরা যদি সামান্য একটি প্রস্তাব পাস করে আমাকে সাহায্য না করেন, তাহলে এই ক্লাবের সদস্য হওয়ার আমার কীইবা প্রয়োজন ছিল? একটি দরিদ্র দেশের রাষ্ট্রপ্রধান আমি। কেন তবে আমি অর্ধেক পৃথিবী পেরিয়ে এসেছি এই সম্মেলনে?’ অখণ্ডনীয় যুক্তি। হতবাক জুলিয়াস নায়েরেরে। হেসে বললেন, ‘ঠিক আছে, মুজিব। তুমি যা চাও, তা-ই হবে।’ বঙ্গবন্ধু আজ উপস্থিত না থাকলেও তার মহান আদর্শ, উদ্দেশ্য এবং তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আছে। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের মধ্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন, চিরকাল বেঁচে থাকবেন। তার প্রতিষ্ঠিত শান্তির বার্তা নিয়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি পৃথিবীর বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে চলছে।

বঙ্গবন্ধু আজ উপস্থিত না থাকলেও তার মহান আদর্শ, উদ্দেশ্য এবং তার নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ আছে। বাংলাদেশের কোটি কোটি মানুষের মধ্যে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু বেঁচে আছেন, চিরকাল বেঁচে থাকবেন। তাঁর প্রতিষ্ঠিত শান্তির বার্তা নিয়ে বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্রটি পৃথিবীর বুকে শান্তি প্রতিষ্ঠা করে চলছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিশ্ব শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য বঙ্গবন্ধুর আদর্শের পথ ধরে এগিয়ে চলেছেন।

ড. ফখরুল ইসলাম বাবু
যুগ্ম সাধারন সম্পাদক, হংকং আওয়ামী লীগ।
নির্বাহী পরিচালক, চায়না বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ সেন্টার লিমিটেড -CBFCL