নগরী জুড়ে তারের জঞ্জাল
কুমিল্লা নগরের বিভিন্ন বিদ্যুতের খুঁটিতে তার আর তার। খুঁটির উপরে বিদ্যুতের তার নিচে ডিস, ইন্টারনেট লাইনসহ বিভিন্ন লাইনের তার ঠাঁই নিয়েছে। নগরী জুড়ে যেন তারের গাছ লাগানো হয়েছে! তারে আটকাচ্ছে চলন্ত গাড়ি। বন্ধ হচ্ছে সড়ক। কোথাও গাড়িতে লেগে তার ছিঁড়ে যাচ্ছে। মানুষ আহত হচ্ছে। যেনতেন ভাবে তার ঝুলানোর কারণে এমনটা হচ্ছে বলে নগরবাসীর অভিযোগ। এদিকে মাকড়সার বাসার মতো তারে নগরীর সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে। এনিয়ে গত সপ্তাহে সাপ্তাহিক আমোদ পত্রিকায় একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।
সংবাদে উল্লেখ করা হয়, নগরীর কান্দিরপাড়, নিউ মার্কেট, পুরাতন চৌধুরীপাড়া, আওয়ার লেডি স্কুল মোড়, ফৌজদারি,কাপ্তান বাজার,মগবাড়ি, রানীরবাজার, রেইসকোর্স, রাজগঞ্জ, পুলিশ লাইন, শাসনগাছা, বাদশা মিয়ার বাজার, ধর্মপুর, চকবাজার, ঝাউতলা, ধর্মসাগর রোড, ভিক্টোরিয়া কলেজ রোড, দৌলতপুর, বিসিক শিল্প নগরী এলাকায় তারের জঞ্জাল রয়েছে। বিশেষ করে নগরীর মনোহরপুরে বিলাসবহুল বিপনী বিতানের সামনে তারের স্তূপ যেন কাকের বাসা হয়ে আছে!
টাউন হল সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ী মোশারফ হোসেন বলেন, নগরীর কান্দিরপাড় বৈদ্যুতিক ঝুঁকিপূর্ণ লাইনের কারণে আমরা বেকায়দায় আছি। তার ওপর নগরীর ফুটপাথ ও মার্কেটগুলো সামনে তারের জটলায় বড় ধরনের দুর্ঘটনার কারণ হতে পারে।
নগরীর বিষ্ণপুর এলাকার বাসিন্দা শিক্ষাবিদ জহিরুল হক দুলাল বলেন, নগরীতে অপরিকল্পিত তারের জঞ্জাল দীর্ঘদিনের। এর কারণে বিভিন্ন প্রকার দুর্ঘটনা ঘটছে। এটি নগরী পরিবেশের জন্য হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এগুলো শৃংখলায় আনতে ব্যবস্থা নিতে হবে।
সচেতন নাগরিক কমিটি কুমিল্লার নির্বাহী সদস্য আনিসুর রহমান আখন্দ বলেন, আমাদের ডিশ ও ইন্টারনেট দুটোরই দরকার আছে। কিন্তু জনজীবন ঝুঁকিতে ফেলে কিছু করাতে সমর্থন দেয়া যায় না। এই বিষয়ে বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড ও সিটি করপোরেশন যৌথ উদ্যোগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারে।
বাংলাদেশ বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ড কুমিল্লা বিতরণ অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী তোফাজ্জল হোসেন বলেন, যেখানে খুঁটি বসছে সেখানেই কিছু লোকজন ঝুঁকিপূর্ণভাবে কেবল ঝুলিয়ে দিচ্ছে। এই প্রক্রিয়াটি অবৈধ ও ঝুঁকিপূর্ণ। এর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের মেয়র মনিরুল হক সাক্কু বলেন, এনিয়ে আমরা বার বার সতর্ক করছি। এগুলো যেন পরিকল্পনা মাফিক করা হয়। তারের জঞ্জাল অপসারণ নিয়ে আমরা ইন্টারনেট ও ক্যাবল নেটওয়ার্ক ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলবো। নগরীর সৌন্দর্য রক্ষায় কোন ছাড় দেয়া হবে না।
আমরা মনে করি,নগরবাসীর ডিশ ও ইন্টারনেট দুটোরই দরকার আছে। কিন্তু এটা সুশৃংখল হওয়া প্রয়োজন। নগরজীবন ঝুঁকিতে ফেলে কিছু করাতে সমর্থন দেয়া যায় না। এই বিষয়ে জেলা প্রশাসন, সিটি করপোরেশন ও বিদ্যুত উন্নয়ন বোর্ডকে যৌথ উদ্যোগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। নগরীকে নিরাপদ ও সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে প্রশাসন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে মনে করি।