যে হাসপাতালে প্রাণ পায় মৃত বাস!
হাসিবুল ইসলাম সজিব।।
কয়েক যুগ ধরে মৃত বাসে নতুন প্রাণ দিয়ে আসছে কুমিল্লা নগরীর বিভিন্ন এলাকার বাস মেরামতের গ্যারেজ গুলো। কেউ ব্যস্ত রং করা নিয়ে,কেউ ওয়েল্ডিং করা,কেউ ঝালাই দিচ্ছে। আবার কেউবা কাজ করছেন ইঞ্জিনের। এভাবে দিনের পর দিন, যুগের পর যুগ বাসের বিভিন্ন ধরনের সময় উপযোগী রূপ দিচ্ছে বাস মেকানিকরা। এ যেন বাসের হাসপাতাল!
জানা যায়, ১৯৮১-৮২ সাল হতে কাঠের বডি তৈরি বাস গুলোর চলাচল ছিল। যার খরচ কম হলেও কয়েক বছর পর আবার তা নতুন করে বডি তৈরি করা লাগতো। ১৯৯৬ সালের পর থেকে চালু হয় ব্যাকপুটের স্টিলের বাসের বডি। ২০০২ সালের পর হতে তা বাদ দিয়ে পুরোপুরি ভাবে ইংল্যান্ডের ব্যাকপুটের বডিওয়ালা বাস গুলো চালু হয়। যা স্টিলের বডি। কুমিল্লা শহরে প্রথম নুরপুর গুদুর পুস্কুনীরপাড়ে বাস মেরামতের গ্যারেজ দেওয়া হয়। পরে ১৯৮০-৮২ সালে টমছম ব্রিজ, ১৯৮৫-৮৬ সালে শাসনগাছা, ১৯৯০-৯১ সালে আলেখারচর বিশ্বরোড, ১৯৯৮ সালে ডুলিপাড়া মুচি বাড়ি চৌমুহনী (ভাঙ্গা বিল্ডিং) এবং ২০০৮ সালে জাঙ্গালিয়া বাস মেরামতের গ্যারেজ। এতে মৃত বাসের নতুন প্রাণ দেওয়া হয় এবং বিভিন্ন দুর্ঘটনাজনিত বাস গুলোকে এ স্থান গুলো নিয়ে গেলে তারা আবার পুনরায় নতুন বডি মেরামত করে আগের মতে করে দেন।
সূত্র জানায়, গ্যারেজ গুলোতে বিআরটিসি, কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়, ইস্পাহানি কলেজ, ময়নামতি মেডিকেল কলেজ, সেন্ট্রাল মেডিকেল কলেজ, উপকূল, বোগদাদ, তিশা, কুমিল্লা ট্রান্সপোর্ট, কুমিল্লা প্রিন্স, বলাকা, যমুনা, আল হেরাসহ বিভিন্ন পরিবহনের বাস মেরামত করা হয়।
কুমিল্লা গ্যারেজ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাক (বডি মোস্তাক) সাপ্তাহিক আমোদকে জানান, আমরা পুরাতন ও দুর্ঘটনাজনিত বাসকে নতুন করে সাজিয়ে মানুষের ব্যবহারের উপযোগী করে দেই। মৃত বাসের নতুন প্রাণ দিচ্ছি । আমার এখানে সরকারিসহ বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের বাস তৈরি করে নেওয়া হয়। দেশের বিভিন্ন জায়গায় আমাদের তৈরি বাস চলাচল করে। বিভিন্ন ট্রান্সপোর্ট কোম্পানির বাস আমাদের এখান থেকে তৈরি করে নেয়।
মানুষের মুখে যখন শুনি আমার তৈরি বাস গুলো দেখতে সুন্দর ও যাতায়াত করে আরাম উপভোগ করে যাত্রীরা। তখন গর্ব অনুভব করি। বডির তৈরি বিভিন্ন সরঞ্জামের ভালো এবং গুণগত মান সঠিক থাকায় সরকারি প্রতিষ্ঠানসহ বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের বাস গুলো আমাদের কাছে বানিয়ে নেওয়া হয়।