সাবেক এম.পি শিউলী আজাদ গ্রেপ্তারের পর রিমান্ডে

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় হত্যা মামলায় সংরক্ষিত আসনের সাবেক মহিলা সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ গ্রেপ্তারের পর ৮ দিনের রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। সোমবার (০৭ অক্টোবর) দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এই রিমাণ্ড মঞ্জুর করেন। এর আগে রোববার রাতে রাজধানী ঢাকার নিকেতনের বাসা থেকে ডিবি পুলিশের হাতে সাবেক মহিলা এম.পি শিউলী আজাদ গ্রেপ্তার হন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, বিগত ২০২১ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি বিরোধী আন্দোলনে সরাইল বিশ্ব রোড মোড় এলাকায় নিহত লিটনের পক্ষে মাওলানা সুলতান উদ্দিন বাদী হয়ে সাবেক মহিলা এম.পি শিউলী আজাদসহ ৬৭ জনের নামোল্লেখ ছাড়াও অজ্ঞাত আরো ৩০০ জনের নামে সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। রোববার (০৬ অক্টোবর) রাতে রাজধানী ঢাকার নিকেতনের বাসা থেকে ডিবি পুলিশ শিউলী আজাদকে গ্রেপ্তার করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সরাইল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রহমান খান পাঠান সোমবার তাকে আদালতে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ড প্রার্থনা করলে দীর্ঘ শুনানি শেষে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পঞ্চম আদালতের বিচারক স্বাগত সাম্য ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
সরাইল থানা সূত্রে জানা গেছে, ৩ সেপ্টেম্বর উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম, সাবেক গৃহায়ণ ও গণপূর্তমন্ত্রী এবং জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি র.আ.ম. উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরীসহ ৬৭ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে সরাইল থানায় একটি হত্যা মামলা হয়। শিউলী আজাদ ওই মামলার ৪ নম্বর আসামি। উপজেলার চুন্টা ইউনিয়নের রসুলপুর গ্রামের বাসিন্দা মাওলানা সুলতান উদ্দিন বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। এতে অজ্ঞাতনামা আরও ৩০০ জনকে আসামি করা হয়েছে। মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে বিগত ২০২১ সালের ২৮ মার্চ হেফাজতে ইসলামের আন্দোলন চলাকালে সরাইলের বিশ্বরোড মোড় এলাকায় গুলিতে নিহত হন জেলার সরাইল উপজেলার নোয়াগাঁও ইউনিয়নের কাটানিশার গ্রামের মুজান মিয়ার ছেলে লিটন মিয়া (২৭)। তিনি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার চালক ছিলেন। ওই ঘটনায় মাওলানা সুলতান উদ্দিন বাদী হয়ে মামলা করেন।
উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম শিউলী আজাদ ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের তিনজনের আংশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য। তিনি সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রাক্তন জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি প্রয়াত এ.কে.এম ইকবাল আজাদের সহধর্মিনী। ইকবাল আজাদ নিহতের দুই বছর পর ২০১৪ সালের ১০ ডিসেম্বর উম্মে ফাতেমা উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক হন। এরপর ২০২২ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনের মাধ্যমে দলের কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতাদের উপস্থিতিতে তিনজনের নাম ঘোষিত আংশিক কমিটির সাধারণ সম্পাদক হন উম্মে ফাতেমা। কিন্তু দীর্ঘ দুই বছরেও ওই কমিটি পূর্ণাঙ্গ হয়নি। গত ৫ আগস্ট আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর থেকেই তিনি ছিলেন আত্মগোপনে।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আদালত পুলিশ পরিদর্শক (সিআই) মো. হাবিবুল্লাহ সরকার বিষয়ের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘গত ৩ সেপ্টেম্বরের একটি হত্যা মামলায় পুলিশ তাকে আটক করে। আদালতে ১০ দিনের রিমাণ্ড চাইলে আদালত তাকে ৮ দিনের রিমান্ড মনজুর করেন। পরে তাকে কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে জেলা কারাগারে পাঠানো হয়েছে।’