চৌদ্দগ্রামে নির্মাণের পরপরই ভেঙ্গে পড়ছে সড়ক


সানোয়ার হোসেন,চৌদ্দগ্রাম ।।
কাজ শেষ হওয়ার সপ্তাহখানেকের মধ্যে ভেঙ্গে পড়ছে পিচ ঢালাই দেয়া সড়ক, উঠে যাচ্ছে পিচ। সড়কের দুই পাশে ভালোভাবে মাটি না দিয়ে, সড়কের উপরের গাছ, দেয়াল ও বিদ্যুতের খুঁটি অপসারণ না করে কাজ শেষ করেছে ঠিকাদার। জায়গায় জায়গায় জমছে বৃষ্টির পানি।
দীর্ঘদিনের ভোগান্তির পর পাকা সড়ক নির্মাণে আশার আলো দেখা স্থানীয়রা হয়েছেন হতবাক। নির্মাণকাজে ব্যাপক অনিয়ম ও নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগে ক্ষোভ প্রকাশ করে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও প্রকৌশলী বরাবর পৃথকভাবে লিখিত অভিযোগ দিয়েছে স্থানীয়রা। ঘটনাটি ঘটেছে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শুভপুর ইউনিয়নের গুরুত্বপূর্ণ জশপুর-কাদৈর বাজার সড়কে।
জানা গেছে, ৪ কোটি ৪১ লাখ টাকা ব্যায় চুক্তিতে ৩১৮০ মিটার সড়ক নির্মাণের ঠিকাদারি কাজ পায় শুভপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও সাবেক চেয়ারম্যান খলিলুর রহমানের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মজুমদার ট্রেডার্স। ২০২৪ এর ২৫ আগস্ট শুরু করে একই বছরের ১২ ডিসেম্বর কাজ শেষ করার নির্ধারিত সময় থাকলেও ঠিকাদার চলতি মাসে কাজ শেষ করে। কাজ শেষের সপ্তাখানেক পর একদিনের বৃষ্টিতে তিন কিলোমিটার সড়কের অধিকাংশ জায়গায় ফাটল ও ভেঙ্গে পড়ে।
সরজমিনে দেখা যায়, বৃষ্টিতে নবনির্মিত সড়কের দুই পাশে ভেঙ্গে পড়েছে পিচঢালা সড়কের গর্তগুলো মাটি দিয়ে ভরাট করছেন শ্রমিকরা। পুরো সড়ক জুড়েই এমন ভাঙ্গনের চিত্র। হাতের স্বাভাবিক টানে উঠে যাচ্ছে পিচ। চাকা চাকা পিচ এর অংশ হাতে নিয়ে চাপ দিলেই ভেঙ্গে গুড়ো হয়ে যাচ্ছে। স্থানে স্থানে জমেছে বৃষ্টির পানি। সড়কের মাঝেই ঠাঁয় দাঁড়িয়ে বড় বড় গাছ, বিদ্যুতের খুঁটি। সেগুলোর চারপাশ দিয়ে করা হয়েছে পিচঢালাই। সড়ক নিরাপত্তায় সড়কের দু’পাশে ভালোভাবে মাটি দেয়ার নিয়ম থাকলেও দেয়া হয়নি তা। সামান্য পায়ের ঘষাতেই উঠে যাচ্ছে সড়কের পাথর। এলাকাবাসীর অভিযোগ, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাবেই এমন নিম্নমানের সড়ক তৈরি হয়েছে।
স্থানীয় যুবক তারেক জানান, কাজের অনিয়ম দেখে শুরুতেই আমি প্রতিবাদ করি। কিন্তু কে শোনে কার কথা। রাতের অন্ধকারে ড্রাম ট্রাক দিয়ে বিক্রি করতে দেখা যায় সড়কের দু’পাশের মাটি। দু’পাশে ভালোভাবে মাটি দেয়ার পরিবর্তে উল্টো মাটি বিক্রি করে দেয়ায় এমন ভাঙ্গণের সৃষ্টি হয়েছে বলে এই যুবক।
স্থানীয় রজব আলী জানান, নিন্মমানের কাজের প্রতিবাদ করায় ঠিকাদারের লোক লেবার সর্দার জিয়া হুমকি ধমকি দিয়ে বলে আমরা রাস্তার কাজ করি, তোরা কি জানিস।
সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক পলাতক, তার লোক আবদুল কাদের নিন্মমানের কাজের প্রসঙ্গে বলেন, চুক্তি অনুযায়ী আগামী এক বছর সড়কের ত্রুটি দেখা দিলে তা মেরামত করার দায়িত্ব আমাদের। সড়ক ভেঙ্গেছে, খসে পড়ছে, তা আবার মেরামত করা হবে।
উপজেলা প্রকৌশলী মোঃ নুরুজ্জামান বলেন, ঠিকাদার এখনো কাজ বুঝিয়ে দেয়নি। কাজ চলমান। কাজ বুঝিয়ে দেয়ার পর পরীক্ষা নিরীক্ষা করে বিল দেয়া হবে। কাজ বুঝিয়ে দেয়ার পর এক বছর পর্যন্ত সমস্যা হলে তা সমাধানের দায়দায়িত্ব ঠিকাদারের। পাকা সড়কের ভাঙ্গা অংশ মাটি দিয়ে ভরাটের সুযোগ নেই বলেও তিনি জানান।