শয়তানদের মহাসম্মেলন: এবার আয়োজক বাংলাদেশ!

মনোয়ার হোসেন রতন ।।
সারা বিশ্বের শয়তানদের মহাসম্মেলন এবার বসেছে বাংলাদেশে!
শয়তানদের প্রধান সর্দার ইবলিশ নিজে ঘোষণা দিয়েছেন—
“এবার শয়তানি নীতিমালার নব সংযোজন হবে বাংলাদেশ থেকেই।”
ইবলিশের এ ঘোষণা শুনেই পৃথিবীর চার দিক থেকে ছোট-বড়, দেশি-বিদেশি, রাজনৈতিক-অরাজনৈতিক, ধর্মীয়-অধর্মীয় সব রকমের শয়তানেরা বাংলাদেশমুখী। সম্মেলনের ভেন্যুতে বিশাল ব্যানার, ফেস্টুন, ডিজিটাল বিলবোর্ডে ঝুলছে নতুন নতুন স্লোগান:
“শয়তানি আমার অধিকার!”
“সত্যের চেয়ে গুজব শক্তিশালী!”
“যেখানে বিশৃঙ্খলা, সেখানেই উন্নয়ন!”
আরও লেখা আছে—
“তথ্যের বদলে সন্দেহ ছড়াও”, “মানুষকে মানুষ থেকে আলাদা করো”, “ছোট ভুলে বড় আগুন লাগাও”।
সম্মেলন মঞ্চে একে একে উঠে আসছে নামী-দামী শয়তানেরা। তারা ইবলিশের সামনে দাঁড়িয়ে তাদের গর্বিত কর্মকাণ্ডের ফিরিস্তি দিচ্ছে—
একজন বলল, “আমি জাতিকে বিভক্ত করেছি ধর্মের নামে।”
আরেকজন বলল, “আমি ফেসবুকে একটা পেইজ খুলে মিথ্যা তথ্য দিয়ে লাখো মানুষকে উত্তেজিত করেছি।”
তৃতীয়জন হাসতে হাসতে বলল, “আমি শুধু বিদ্যুৎ-গ্যাসের দাম বাড়িয়েছি। মানুষ রেগে গিয়ে একে অপরকে শত্রু বানিয়েছে!”
ইবলিশ খুশিতে মঞ্চে দাঁড়িয়ে হাততালি দিচ্ছে।
হঠাৎ সে চোখ রাখল মঞ্চের এক কোণে দাঁড়িয়ে থাকা এক ছোট শয়তানের দিকে।
ইবলিশ বলল, “তুই চুপ করে আছিস কেন? তোর কীর্তির কথা বল!”
ছোট শয়তান মাথা নিচু করে বলল,
“সর্দার, আমি আসলে বড় কিছু করিনি। আমি শুধু একটা গরীব লোকের ঘরের বেড়ায় একটু আটা মাখিয়ে এসেছিলাম।”
—“তারপর?”
—“সেই আটার গন্ধে এলো পিঁপড়া,
পিঁপড়া খেতে এলো তেলাপোকা,
তেলাপোকা খেতে এলো টিকটিকি,
টিকটিকি খেতে এলো মুরগি,
মুরগিকে খেতে এলো প্রতিবেশীর কুকুর।
গরীব লোকটা কুকুরটাকে পিটালো,
কুকুরের মালিক এসে লোকটার মাথায় বাড়ি মারলো।
গ্রাম দু’ভাগে ভাগ হয়ে গেল—
এক দল বলল ‘মুরগি নির্দোষ’,
অন্য দল বলল ‘কুকুর ছিল উসকানিমূলক’।
এর মাঝে এল পুলিশ।
গ্রেপ্তার হলো সেই গরীব লোকটাই,
যার ঘরে ছিল একটু আটা।”
ছোট শয়তান থেমে গেল।
ইবলিশ দাঁড়িয়ে উঠে করতালি দিতে দিতে চিৎকার করে বলল—
“সাবাস! তুই-ই প্রকৃত শয়তান!
অন্যরা আগুন লাগিয়েছে খোলাখুলি,
আর তুই আগুন লাগিয়েছিস ছায়ার নিচে!
তুই-ই হবি আগামী সম্মেলনের সভাপতি!”
inside post
আরো পড়ুন