দেবিদ্বারে গায়ে হলুদে মেয়েদের উত্ত্যক্ত, সংঘর্ষে দুই যুবক নিহত
অফিস রিপোর্টার।।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে একটি বিয়ের গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা নিয়ে দুইপক্ষের সংঘর্ষে দুইজন নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন ১৫জন। বুধবার রাত ১টার দিকে দেবিদ্বার উপজেলার আব্দুল্লাহপুর ইনসাফ মার্কেটের সামনে এ ঘটনা ঘটে। নিহতরা হলেন- উপজেলার আব্দুল্লাহপুর গ্রামের হাবিব মিয়ার ছেলে সাইফুল (১৮) ও পাশের মুরাদনগর উপজেলার গুঞ্জুর গ্রামের রেনু মিয়ার ছেলে রাহিম (২০)। রাতে ঘটনাস্থলে গিয়ে থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আরিফুর রহমান।
স্থানীয় সূত্র জানায়, দেবিদ্বারের আবদুল্লাহপুর গ্রামের ওমান প্রবাসী জাকির হোসেনের মেয়ে নাজমা আক্তারের সাথে একই উপজেলার বুড়িরপাড় গ্রামের প্রবাসী হোসাইন মিয়ার ৯ মাস আগে মোবাইল ফোনে বিয়ে হয়। সম্প্রতি হোসাইন মিয়া দেশে আসেন। ওই বিয়ের অনুষ্ঠান ছিল বৃহস্পতিবার। বুধবার সন্ধ্যা থেকে কনের বাড়িতে গায়ে হলুদের আয়োজন চলছিল। রাতে সেখানে যান পাশ্ববর্তী মুরাদনগর উপজেলার গুঞ্জুর গ্রামের সজিব, মামুন ও আক্তারসহ আরও কয়েকজন। এসময় মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা নিয়ে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে তাদের বাকতিবণ্ডা হয়। এর জেরে রাত ১টার দিকে বিয়ে বাড়ি সংলগ্ন আবদুল্লাহপুর ইনসাফ মার্কেটের সামনে স্থানীয় যুবকদের সঙ্গে গুঞ্জুর গ্রামের যুবকরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। এতে সাইফুল ও রাহিম মারা যান। একজন ঘটনাস্থলে অন্যজন দেবিদ্বার হাসপাতালে নেয়ার পথে মারা যান। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের অন্তত ১৫ জন আহত হন।
আহতদের মধ্যে সজিব, মামুন, আক্তার হোসেনকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এদিকে বৃহস্পতিবারের বিয়ের অনুষ্ঠানটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।
কনের মা সেলিনা আক্তার বলেন, রাতে গ্রামের ছেলেরা ছাড়াও আশপাশের গ্রামের অনেক ছেলে আমাদের বাড়িতে আসে, আমরা অনুষ্ঠান নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তাদের মধ্যে কি নিয়ে হয়েছে জানতে পারিনি। পরে লোকজনের মাধ্যমে জানতে পারি বাড়ির পাশে মার্কেটের সামনে মারামারি হয়েছে।
নিহত রাহিমের পিতা আবু হানিফ জানান, আমার ছেলে পাশ্ববর্তী গ্রামে তার বন্ধু সাইফুল ইসলামের সাথে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠান দেখতে গিয়ে খুন হয়েছে। কে বা কারা হত্যা করছে তা জানিনা, রাতে থানা পুলিশের মাধ্যমে ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে দেবিদ্বার থানায় আনা হয়। প্রকৃত আসামিদের বিচারের দাবি জানাচ্ছি।
বৃহস্পতিবার দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আরিফুর রহমান বলেন, গভীর রাতে ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। দুইজনের মরদেহ মর্গে পাঠিয়েছি। দোষীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুইজনকে আটক করা হয়েছে।
দেবিদ্বার ও ব্রাহ্মণপাড়া সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার মো. আমির উল্লাহ জানান, আব্দুল্লাহপুর গ্রামে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করা নিয়ে দুইপক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। রাতে যখন ঘটনাস্থলে গিয়ে থানা পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।