আর চামড়া নদীতে ফেলতে চান না কুমিল্লার ব্যবসায়ীরা

মাহফুজ নান্টুঃ
মাটি চাপা দিয়েছিলেন কেউ। অনেকেই আবার ফেলে দিয়েছিলেন নদীতে। রাস্তার পাশে ফেলে রাখা হয় দীর্ঘদিন। চামড়া পঁচা গন্ধে হাটাচলা করা দায় ছিলো। গত বছর কোরবানির ঈদে পশুর চামড়া বিক্রি না করতে পারার দৃশ্য ভাইরাল হয়েছিলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। সিন্ডিকেটের কবলে পড়ে অনেক চামড়া ব্যবসায়ী সর্বস্বান্ত হয়েছিলেন। বছরজুড়ে লোকসানের ক্ষত চিহ্ন বয়ে বেড়িয়েছেন ব্যবসায়ীরা। তাই এ বছর উদ্বিগ্ন কুমিল্লার চামড়া ব্যবসায়ীরা। তারা আর চামড়া নদীতে ফেলতে চান না।

inside post

কুমিল্লা ঋষিপট্টির চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রতন ঋষি জানান, গত বছর ঢাকা ও স্থানীয় সিন্ডিকেটের কারণে অনেক লোকসান গুণতে হয়েছে। আমরা স্থানীয়ভাবে চামড়া ক্রয় করেছি। তবে পরে বিক্রি করতে পারিনি। গত বছরের চামড়া এখনো আমরা লবণ দিয়ে রেখেছি।
কুমিল্লা ঋষিপট্টির চামড়া ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক হরি ঋষি জানান, গত বছরের ঘটনায় আমরা যারা চামড়া ব্যবসায়ীরা চরম ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছি। এ বছর এমন ঘটনার পুনারাবৃত্তি চাই না। এ জন্য তিনি প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
কুমিল্লা নগরীর অন্তত ১৫ জন ব্যবসায়ী রয়েছেন। যারা পৈত্রিকভাবে চামড়াজাত প্রক্রিয়াকরণের সাথে জড়িত। তাদের মধ্যে সাজু নামে একজন চামড়া ব্যবসায়ী জানান, প্রতি বছর মৌসুমি চামড়া ব্যবসায়ীর আবির্ভাব হয়। তারা কেউ সরকারি নিয়ম নীতি মানে না। সিন্ডিকেট সৃষ্টির মাধ্যমে কোরবানির পশুর চামড়া ক্রয় করে। যারা প্রকৃত চামড়া ব্যবসায়ী তারা ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এ বিষয়ে যদি প্রশাসন কঠোর হতো তাহলে চামড়া ব্যবসায়ীর স্বার্থ রক্ষা হতো।

তবে এ বছর সিন্ডিকেট থেকে চামড়ার ব্যবসায়ীদের রক্ষা করতে উদ্যোগ নিয়েছে কুমিল্লা জেলা প্রশাসন।

কুমিল্লা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ নুরুজ্জামান জানান, সচারাচর যারা চামড়া কিনবেন তারা কিনতে পারবেন। অনেকেই আছেন যারা চামড়া মাদ্রায় কিংবা এতিম খানায় দান করবেন। তবে যারা চামড়া বিক্রি করতে পারবেন না তাদের জন্য স্থানীয় এতিমখানা কিংবা মাদ্রাসায় সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসাররা ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন। দু’ মাস পর সংরক্ষণ করা চামড়া বিক্রি করে একটি অংশ মাদ্রাসায় দান করা হবে। বাকি অংশ চামড়ার মালিককে দেয়া হবে।

আরো পড়ুন