কুবি প্রশাসন ও ওসির সামনে অস্ত্রের মহড়া
মহিউদ্দিন মোল্লা,
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়(কুবি) শাখা ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্তির ঘোষণাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা বিরাজ করছে। শনিবার বিকেলে দুই পক্ষ কুবি প্রশাসন ও ওসির সামনে অস্ত্রের মহড়া দিয়েছে। এ সময় তারা আতশবাজি ফুটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হয়। কুবি প্রশাসন ও ওসির সামনে অস্ত্রের মহড়া হলেও তাদের চুপ থাকতে দেখা গেছে।
সন্ধ্যায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ক্যাম্পাসে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের মূল ফটকের সামনে পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, অর্ধশতাধিক মোটরসাইকেল নিয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রেজা এ এলাহী সমর্থিত ছাত্রলীগ নেতা মাহি হাসনাইন, ইকবাল খান, আমিনুলসহ বহিরাগতরা।
কুবি ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ সমর্থিতরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল হতে বের হয়ে দেশীয় অস্ত্রসহ ক্যাম্পাস ফটকে অবস্থান নেন। এ সময় উভয় পক্ষের নেতাকর্মীদের হাতে রাম দা, ছেনি, হকিস্টক দেখা যায়। এই ঘটনায় ক্যাম্পাসজুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
ছাত্রলীগের একাধিক নেতাকর্মী জানান, শুক্রবার রাতে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ কমিটি বিলুপ্তি ঘোষণা করেন কেন্দ্রীয় নেতারা। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সম্পাদক স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে কুবি ছাত্রলীগের সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ তার ফেইসবুক আইডিতে উল্লেখ করেন, কমিটি বিলুপ্তির কোন ঘটনা ঘটেনি। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি দিবেন।
রাতের এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে আধিপাত্য বিস্তার করার জন্য শনিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগ ও বহিরাগতরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে মুখোমুখি হয়।
নাম না প্রকাশ করার শর্তে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক ছাত্রলীগ নেতা দাবি করেন, বিকেল ৩ টায় বর্তমান সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ ও ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বর্তমানে ছাত্রলীগের সভাপতি প্রার্থী রেজা ই এলাহী গ্রুপ মুখোমুখি হয়। অস্ত্র হাতে নিয়ে তারা মুখোমুখি অবস্থান নেয়। ফার্মাসি ১০ম ব্যাচের শিক্ষার্থী ছাত্রলীগ নেতা মাসুমসহ কয়েকজনকে রাম দা হাতে ক্যাম্পাসে প্রকাশ্যে প্রক্টর এবং ওসির সামনে মহড়া দিতে দেখা গেছে। অস্ত্রের মহড়া দেখেও কুবি প্রশাসন ও ওসিকে নির্বিকার থাকতে দেখা গেছে।
কুবি ছাত্রলীগ সভাপতি ইলিয়াস হোসেন সবুজ অভিযোগ করেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও পুলিশের সামনে বহিরাগতরা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও আগামী কমিটিতে পদপ্রত্যাশী রেজা- ই- ইলাহী বলেন, আমাদের কেউ ক্যাম্পাসে যায়নি। তারা ক্যাম্পাসে আতংক সৃষ্টি করে উল্টো আমাদের উপর দোষ চাপাচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী বলেন, ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে আমরা প্রক্টরিয়াল বডির সদস্য ও অন্যান্য হলের প্রভোস্টদের নিয়ে জরুরি বৈঠকে বসেছি। উপাচার্য মহোদয় ও সংশ্লিষ্টদের সাথে কথা বলে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা দেবাশীষ চৌধুরী বলেন, ঘটনা শুনে ক্যাম্পাসে ফোর্স নিয়ে উপস্থিত হয়েছি। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।