কুমিল্লায় দুর্বোধ্য ব্যবস্থাপত্রে রোগীর ভোগান্তি

 

হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে ঔষধ ক্রয়ের নির্দেশ

আবু সুফিয়ান রাসেল।।

কুমিল্লার কয়েকটি হাসপাতালে চিকিৎসকের অস্পষ্ট ব্যবস্থাপত্র নিয়ে প্রতিদিন বিপাকে পড়ছেন রোগীরা। রোগী দেখা শেষ হলে হাসপাতাল ফামের্সি থেকে ঔষধ ক্রয়ের পরামর্শ দিচ্ছেন ডাক্তার। একই কথা আবার ব্যবস্থাপত্রের সিলে লিখা আছে। সূত্রমতে বাইরে থেকে যেন রোগী ওষুধ কিনতে না পারেন তাই অস্পষ্ট করে লিখেন কিছু চিকিৎসক।

সূত্রমতে, ২০১৭ সালের ৯ জানুয়ারি চিকিৎসকদের পরিষ্কার অক্ষরে ব্যবস্থাপত্র (প্রেসক্রিপশন) লেখার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। ব্যবস্থাপত্র ব্লক লেটারে বা প্রিন্ট করে দিতে রুল জারি করে আদালত।

ভুক্তভোগী মোহম্মদ রায়হান তালুকদার অভিযোগ করেন, মঙ্গলবার তার মাকে নিয়ে চক্ষু হাসপাতাল গিয়েছন। ডাক্তার রোগী দেখার পর বলেন ১১৩ নম্বর রুম থেকে ঔষধ ক্রয় করুন। প্রেসক্রিপশন আবার সিল দেওয়া আছে, ঔষধ এবং চশমা এই হসপিটালের ফার্মেসি এবং চশমা দোকান থেকে সংগ্রহ করুন। এ নিয়ে রায়হান ফেসবুকে লিখেছেন, ডাক্তার মহোদয় (ডা. মাঈনুদ্দিন ইমন) ঠিক কি মেডিসিন লিখল কেউ যদি বুঝেন বা জানেন দয়া করে জানাবেন। শহরের কয়েকটা ফার্মেসিতে দেখাইছি ওনারা (ব্যবস্থাপত্রের লিখা) বুঝেতেছে না। রায়হান আরও জানান, শাসনগাছা এলাকার একাধিক পাইকার ঔষধ দোকানীরাও এ লেখা পড়তে পারেননি।

সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সাবেক সভাপতি বদরুল হুদা জেনু মনে করেন, ডাক্তার অপষ্ট ব্যবস্থাপত্র লিখা অর্থহীন। রোগীর জন্যও এটি বিব্রতকর। বিষয়টি আদালতের নির্দেশনাকে অমান্য করা হয়েছে। চিকিৎসকসহ সংশ্লিষ্ট যারা আছেন সবার আরো যত্নবান হওয়া উচিত।

এ বিষয়ে ডা. মোহাম্মদ মাঈনুদ্দিন ইমনের ব্যক্তিগত মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল ও ক্ষুদে বার্তা দিয়েও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাংলাদেশ জাতীয় অন্ধ কল্যাণ সমিতি কুমিল্লার সাধারণ সম্পাদক ডা. একেএম আব্দুস সেলিম জানান, একজন চিকিৎসকের জন্য অস্পষ্ট ব্যবস্থাপত্র লিখা লজ্জার। এখানে গড় দৈনিক ৩০০-৪০০ জন রোগী আউট ডোরে সেবা নেন। রবিবার ও বুধবার রোগী বেশী থাকে। ডাক্তার কম থাকলে একটু দ্রুত রোগী দেখতে হয়। হয়তো এ কারণে অস্পষ্ট। বিষয়টি আমরা দেখবো। ডা. মাঈনুদ্দিন সাহেবের সাথেও আলোচনা করবো। বাইরে নকল ঔষধ থাকে, তাই আমরা বলি হাসপাতালের ফার্মেসি থেকে ঔষধ ক্রয় করতে। তবে হাসপাতাল থেকে কোন সিল তৈরি করে দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে আমি জানি না। হয়তো ডাক্তার বা অন্য কেউ এ জাতীয় সিল তৈরি করেছে।