দুইশ’ টাকায় সেচ দেয়া  মতিন সৈকতকে এআইপি প্রদান

 প্রতিনিধি।।
বিঘাপ্রতি মৌসুমব্যাপী মাত্র দুইশ টাকার বিনিময়ে ত্রিশ বছর যাবত বোরোধানে সেচ দেয়া  মতিন সৈকত এআইপি(এগ্রিকালচার ইনপটেন্ড পার্সন) খেতাবে ভূষিত হয়েছেন ।
 কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার আদমপুর গ্রামের বাসিন্দা মতিন সৈকত। তিনি চার দশক ধরে কৃষি পরিবেশ সমাজ উন্নয়নে অবদান রাখছেন। কৃষি উদ্ভাবন জাত/প্রযুক্তি বিভাগে মতিন সৈকতকে এআইপি সন্মানা দেয়ার সরকারি সিদ্ধান্ত হয়।  ৭ জুলাই ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে আনুষ্ঠানিকভাবে মতিন সৈকতসহ অন্যান্য এআইপিদের সন্মাননা প্রদান করা হবে। কৃষি মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মলয় কুমার চৌধুরী স্বাক্ষরিত পত্র থেকে এই তথ্য জানা যায়।
পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি উদ্ভাবন ব্যবহার এবং সম্প্রসারণে অবদানের  জন্য ২০১০ এবং ২০১৭ সালে প্রধানমন্ত্রী মতিন সৈকতকে দুইবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় কৃষি পদক এবং  পরিবেশ সংরক্ষণ ও দূষণ নিয়ন্ত্রণে ব্যক্তিগত ক্যাটাগরিতে ২০২১ সালে  জাতীয় পরিবেশ পদক প্রদান করেন।
প্লাবন ভূমিতে মৎস্য চাষে দাউদকান্দি মডেল এবং নিরাপদ খাদ্য উপজেলা দাউদকান্দি মডেলের অন্যতম অংশীজন তিনি। সারাদেশে বোরোধান উৎপাদন করতে সেচের পানির জন্য কৃষককে যখন ১২০০ থেকে ২০০০ টাকা বিঘাপ্রতি সেচ খরচ  দিতে হয়, সেখানে মতিন সৈকত বিঘাপ্রতি এককালীন মৌসুমব্যাপী মাত্র দুইশ টাকার বিনিময়ে ত্রিশ বছর যাবত বোরোধান লাগানো থেকে পাকা ধান কাটা পর্যন্ত যার যতবার সেচের পানির প্রয়োজন ততবারই সেচের পানি সরবরাহ করে জাতীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।
বোরোধানের জমিতে ধান উৎপাদনের পাশাপাশি মৎস্য চাষ করে  বিঘাপ্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা মুনাফা পাচ্ছেন কৃষক। মতিন সৈকতের দীর্ঘ আন্দোলনের ফলে সরকার কালাডুমুর নদী পুনর্খনন করে। মতিন সৈকত
 খাল-নদী পুনর্খনন,  জলাভূমি সংরক্ষণ, বন্যপ্রাণী, পাখি প্রকৃতি, জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণে কাজ করছেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ‘তিনি নিজ এলাকা দাউদকান্দি কুমিল্লায় ২০০৬ সালে ১০,০০০ কৃষক নিয়ে আইপিএম-আইসিএম ক্লাব গঠন করেন। তার এ উদ্যোগের ফলে ২০১৭ বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও) দাউদকান্দি উপজেলাকে বিষমুক্ত নিরাপদ খাদ্য উপজেলা হিসেবে ঘোষণা করে।
এআইপি খেতাব প্রাপ্তির বিষয়ে মতিন সৈকত বলেন, কৃষি ও পরিবেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পেরে আমি আনন্দিত। এই প্রাপ্তি আমাকে আরও দায়বদ্ধ করেছে।
উল্লেখ্য-কৃষিতে উৎসাহ-উদ্দীপনা দেয়ার জন্য ২০১৯ সালের নীতিমালা অনুযায়ী কৃষি ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে সিআইপির সমমর্যাদায় এআইপি প্রবর্তন করে সরকার। এআইপিরা সিআইপিদের  মতো  সুযোগ-সুবিধা পাবেন।