পানি সম্পর্কিত কুরআনের আয়াত- দ্বিতীয় পর্ব

।। মতিন সৈকত ।।
সুরা হিজরের ২২, ৪৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন
(২২)  আমি বৃষ্টি -গর্ভ বায়ু প্রেরণ করি, অতঃপর আকাশ হইতে বারি বর্ষণ করি এবং উহা তোমাদিগকে পান করিতে দিই, উহার ভান্ডার তোমাদিগের নিকট নাই।
(৪৫)  মুত্তাকীরা থাকিবে প্রস্রবণ-বহুল জান্নাতে।

সুরা নাহলের ১০, ১৪, ১৫, ৩১,৬৫, আয়াতে আল্লাহ
বলেন”
(১০)  তিনিই আকাশ হইতে বারি বর্ষণ করেন, উহাতে তোমাদিগের জন্য রহিয়াছে পানীয় এবং  উহা হইতে জন্মায় উদ্ভিদ যাহাতে তোমারা পশু চারণ করিয়া থাক।
(১৪)  তিনিই সমুদ্রকে অধীন করিয়াছেন যাহাতে তোমারা উহা হইতে তাজা মৎসাহার করিতে পার এবং যাহাতে উহা হইতে আহরণ করিতে পার রত্নাবলী যাহা তোমরা ভূষণরূপে পরিধান কর, এবং তোমরা দেখিতে পাও, উহার বুক চিরিয়া নৌযান চলাচল করে এবং উহা এই জন্য যে তোমরা যেন তাঁহার অনুগ্রহ সন্ধান করিতে পার  এবং তোমরা যেন কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।
(১৫) এবং তিনি পৃথিবীতে সূদৃঢ়  পর্বত স্থাপন করিয়াছেন, যাহাতে পৃথিবী তোমাদিগকে লইয়া আন্দোলিত না হয় এবং স্থাপন করিয়াছেন নদ-নদী ও পথ, যাহাতে তোমারা তোমাদিগের গন্তব্যস্থলে পৌঁছিতে পার।
(৩১)  উহা স্থায়ী জান্নাত যাহাতে তাহারা প্রবেশ করিবে, উহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, তাহারা যাহা কিছু কামনা করিবে উহাতে তাহাদিগের জন্য তাহাই থাকিবে।  এইভাবেই আল্লাহ পুরস্কৃত করেন মুত্তাকীদিগকে।
(৬৫)  আল্লাহ আকাশ হইতে বারি বর্ষণ করেন এবং তদ্দ্বারা তিনি ভূমিকে উহার মৃত্যুর পর পুনর্জীবিত করেন।  অবশ্যই ইহাতে নিদর্শন আছে, যে -সম্প্রদায় কথা শোনে তাহাদিগের জন্য।

বনী ইসরাঈলের ৬৬, ৬৭, ৬৯, ৭০, ৯০, ৯১আয়াতে আল্লাহ বলেন
(৬৬)  তোমাদিগের প্রতিপালক তিনিই যিনি তোমাদিগের জন্য সমুদ্রে নৌযান পরিচালিত করেন, যাহাতে তোমারা তাঁহার অনুগ্রহ সন্ধান করিতে পার। তিনি তোমাদিগের প্রতি পরম দয়ালু।
(৬৭) সমুদ্রে যখন তোমাদিগকে বিপদ স্পর্শ করে তখন কেবল তিনি ব্যতীত অপর যাহাদিগকে তোমারা আহবান করিয়া থাক তাহারা অন্তর্হিত হইয়া যায়, অতঃপর তিনি যখন তোমাদিগকে উদ্ধার করিয়া স্থলে আনেন তখন তোমারা মুখ ফিরাইয়া লও। মানুষ অতিশয় অকৃতজ্ঞ।
(৬৯)  অথবা তোমারা কি নিশ্চিন্ত আছ যে,  তিনি তোমাদিগকে আর একবার সমুদ্রে লইয়া যাইবেন না এবং তোমাদিগের বিরুদ্ধে প্রচন্ড ঝটিকা পাঠাইবেন না এবং তোমাদিগের কুফুরী করার জন্য তোমাদিগকে নিমজ্জিত করিবেন না? তখন তোমরা এ বিষয়ে আমার বিরুদ্ধে কোন সাহায্যকারী পাইবে না।
(৭০) আমি তো আদম-সন্তানকে মর্যাদা দান করিয়াছি, স্থলে ও সমুদ্রে উহাদিগের চলাচলের বাহন দিয়াছি, উহাদিগকে উত্তম রিযক দান করিয়াছি এবং আমি যাহাদিগকে সৃষ্টি করিয়াছি তাহাদিগের অনেকের উপর উহাদিগকে শ্রেষ্ঠত্ত দিয়াছি।
(৯০) এবং উহারা বলে, ‘ কখনই তোমাতে ঈমান আনিব না, যতক্ষণ না তুমি আমাদিগের জন্য ভূমি হইতে এক প্রস্রবণ উৎসারিত করিবে।
(৯১) অথবা তোমার খেজুরের অথবা আংগুরের এক বাগান হইবে যাহার ফাঁকে ফাঁকে তুমি অজস্র ধারায় প্রবাহিত করিয়া দিবে নদী-নালা।

সুরা কাহফের ২৯, ৩১, ৩৩, ৪০, ৪১, ৪৫, ৬০, ৬১, ৬৩, ৭১, ৭৯, ৮৬, ৯৯, ১০৯ আয়াতে আল্লাহ বলেন
(২৯) বল, ‘সত্য তোমাদিগের প্রতিপালকের নিকট হইতে প্রেরিত, সুতরাং যাহার ইচ্ছা বিশ্বাস করুক ও যাহার ইচ্ছা সত্য  প্রত্যাখান করুক’। আমি জালিমদের জন্য প্রস্তুত রাখিয়াছি অগ্নি, যাহার বেষ্টনী উহাদিগকে পরিবেষ্টন করিয়া থাকিবে। উহারা পানীয় চাহিলে উহাদিগকে দেওয়া হইবে গলিত ধাতুর ন্যায় পানীয়, যাহা উহাদিগের মুখমণ্ডল দগ্ধ করিবে, ইহা নিকৃষ্ট পানীয় ও অগ্নি কত নিকৃষ্ট আশ্রয়!
(৩১)  উহাদিগেরই জন্য আছে স্থায়ী জান্নাত যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেথায় উহাদিগকে স্বর্ণ কংকনে অলংকৃত করা হইবে,  উহারা পরিধান করিবে সুক্ষ ও পুরু রেশমের সবুজ বস্ত্র ও সমাসীন হইবে সুসজ্জিত আসনে, কত সুন্দর পুরস্কার ও উত্তম আশ্রয়স্থল!
(৩৩)  উভয় উদ্যানই ফলদান করিত এবং ইহাতে কোন ত্রুটি করিত না এবং উভয়ের ফাঁকে ফাঁকে প্রবাহিত করিয়াছিলাম নহর।
(৪০)  তবে হয়ত আমার প্রতিপালক আমাকে তোমার উদ্যান অপেক্ষা উৎকৃষ্টতর কিছু দিবেন এবং তোমার উদ্যানে আকাশ হইতে নির্ধারিত বিপর্যয় প্রেরণ করিবেন, যাহার ফলে উহা উদ্ভিদশূন্য মৃত্তিকায় পরিণত হইবে।

(৪১)  অথবা উহার পানি ভূগর্ভে অন্তর্হিত হইবে এবং তুমি কখনও উহার সন্ধান লাভে সক্ষম হইবে না।
( ৪৫) উহাদিগের নিকট পেশ কর উপমা পার্থিব জীবনেরঃ ইহা পানির ন্যায় যাহা আমি বর্ষণ করি আকাশ হইতে, যদ্দ্বরা ভূমিজ উদ্ভিদ ঘন সন্নিবিষ্ট হইয়া উদগত হয়, অতঃপর উহা বিশুষ্ক হইয়া এমন চূর্ণ -বিচূর্ণ হয় যে, বাতাস উহাকে উড়াইয়া লইয়া যায়।  আল্লাহ সর্ব বিষয়ে শক্তিমান।
(৬০)  স্মরণ কর,  যখন মূসা তাহার সংগীকে বলিয়াছিল, ‘দুই সমুদ্রের সংগমস্থলে না পৌঁছিয়া আমি থামিব না- অথবা আমি যুগ যুগ ধরিয়া চলিতে থাকিব’।
(৬১) উহারা উভয়ে যখন দুই সমুদ্রের সংগমস্থলে পৌঁছিল উহারা নিজদিগের মৎস্যের কথা ভুলিয়া গেল,  উহা সুড়ংগের মত পথ করিয়া সমুদ্রে নামিয়া গেল।
(৬৩)  সে বলিল, ‘ আপনি কি লক্ষ্য করিয়াছেন, আমরা যখন শিলাখন্ডে বিশ্রাম করিতেছিলাম তখন আমি মৎস্যের কথা ভুলিয়া গিয়েছিলাম?  শয়তান উহার কথা বলিতে আমাকে ভুলাইয়া দিয়াছিল, মৎস্যটি আশ্চর্যজনকভাবে নিজের পথ করিয়া নামিয়া গেল সমুদ্রে। ‘
(৭১)  অতঃপর উভয়ে চলিতে লাগিল,পরে যখন উহারা নৌকায় আরোহন করিল তখন সে উহা বিদীর্ণ করিয়া দিল। মূসা বলিল, ‘আপনি কি আরোহীদিগকে নিমজ্জিত করিয়া দিবার জন্য উহা বিদীর্ণ  করিলেন?  আপনি তো এক গুরুতর অন্যায় কাজ করিলেন।
(৭৯) নৌকাটির ব্যাপারে- ইহা ছিল কতিপয় দরিদ্র ব্যাক্তির, উহারা সমুদ্রে জীবিকা অন্বেষণ করিত, আমি ইচ্ছা করিলাম নৌকাটিকে ত্রুটিযুক্ত করিতে, কারণ উহাদিগের সম্মুখে ছিল এক রাজা, যে বলপ্রয়োগে নৌকা সকল ছিনাইয়া লইত।
(৮৬) চলিতে চলিতে সে যখন সূর্যের অস্তগমন স্থানে পৌঁছিল তখন সে সূর্যকে এক পংকিল জলাশয়ে অস্তগমন  করিতে দেখিল এবং সে তথায় এক সম্প্রদায়কে দেখিতে পাইল। আমি বলিলাম ‘ হে যুলকারনায়ন! তুমি ইহাদিগকে শাস্তি দিতে পার অথবা উহাদিগের ব্যাপারে সদয়ভাবে গ্রহন করিতে পার’।
(৯৯) সেই দিন আমি উহাদিগকে ছাড়িয়া দিব এই অবস্থায় যে একদল আর একদলের উপর তরঙ্গের ন্যায় পতিত হইবে এবং শিংগায় ফুৎকার দেওয়া হইবে। অতঃপর আমি উহাদিগের সকলকেই একত্র করিব।
(১০৯) বল, আমার প্রতিপালকের কথা লিপিবদ্ধ করিবার  জন্য সমুদ্র যদি কালি হয়, তবে আমার প্রতিপালকের কথা শেষ হইবার পূর্বেই সমুদ্র নিঃশেষ হইয়া যাইবে – সাহায্যর্থে ইহার অনুরূপ আরও সমুদ্র আনিলেও।

সুরা মারয়ামের ২৪, ২৬,৮৬ আয়াতে আল্লাহ বলেন
(২৪) ফিরিশতা তাহার নিন্ম পার্শ হইতে আহবান করিয়া তাহাকে বলিল, ‘ তুমি দুঃখ করিও না, তোমার পাদদেশে তোমার প্রতিপালক এক নহর সৃষ্টি করিয়াছেন’।
(২৬)  সুতরাং আহার কর, পান কর ও চক্ষু জুড়াও। মানুষের মধ্যে কাহাকেও যদি তুমি দেখ তখন বলিও, ‘ ‘আমি দয়াময়ের উদ্দেশ্যে মৌনতাবলম্বনের মানত করিয়াছি। সুতরাং আজ আমি কিছুতেই কোন মানুষের সহিত বাক্যালাপ করিব না।’
(৮৬) এবং অপরাধীদিগকে তৃষ্ণাতুর অবস্থায় জাহান্নামের দিকে খেদাইয়া লইয়া যাইব।

সুরা তাহা’র  ৩৯, ৫৩, ৭৬,৭৭,৭৮, ৯৭ আয়াতে আল্লাহ বলেন
(৩৯)  এই মর্মে যে, তুমি তাহাকে সিন্দুকের মধ্যে রাখ, অতঃপর উহা দরিয়ায় ভাসাইয়া দাও যাহাতে দরিয়া উহাকে তীরে ঠেলিয়াদেয়, উহাকে আমার শত্রু ও উহার শত্রু লইয়া যাইবে। আমি আমার নিকট হইতে তোমার উপর ভালবাসা ঢালিয়া দিয়াছিলাম যাহাতে তুমি আমার তত্ত্বাবধানে প্রতিপালিত হও।
(৫৩) যিনি তোমাদিগের জন্য পৃথিবীকে করিয়াছেন বিছানা এবং উহাতে করিয়া দিয়েছেন তোমাদিগের চলিবার পথ, তিনি আকাশ হইতে বারি বর্ষণ করেন এবং আমি উহা দ্বারা বিভিন্ন প্রকারের উদ্ভিদ উৎপন্ন করি।
(৭৬)  স্থায়ী জান্নাত যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেথায় তাহারা স্থায়ী হইবে এবং এই পুরস্কার তাহাদিগেরই, যাহারা পবিত্র।
(৭৭) আমি অবশ্যই মূসার প্রতি প্রত্যাদেশ করিয়াছিলাম এই মর্মে আমার বান্দাদিগকে লইয়া রজনীযোগে বহির্গত হও এবং উহাদিগের জন্য সমুদ্রের মধ্য দিয়া এক শুষ্ক পথ নির্মাণ কর। পশ্চাৎ হইতে আসিয়া তোমাকে ধরিয়া ফেলা হইবে -এই আশংকা করিও না এবং ভয়ও করিও না।
(৭৮) অতঃপর ফির’আওন তাহার সৈন্য বাহিনীসহ তাহাদিগের পশ্চাদ্ধাবন করিল, অতঃপর সমুদ্র উহাদিগকে  সম্পূর্ণরূপে নিমজ্জিত করিল।
(৯৭) মুসা বলিল, ‘দূর হও, তোমার জীবদ্দশায় তোমার জন্য ইহাই রহিল যে, তুমি বলিবে, ‘ আমি অস্পৃশ্য ‘ এবং তোমার জন্য রহিল এক নিদিষ্ট কাল, তোমার বেলায় যাহার ব্যাতিক্রম হইবে না এবং তুমি তোমার সেই ইলাহের প্রতি লক্ষ্য কর যাহার পূজায় তুমি রত ছিলে, আমারা উহাকে জ্বালাইয়া দিবই, অতঃপর উহাকে বিক্ষিপ্ত করিয়া সাগরে নিক্ষেপ করিবই।’
(১১৯)  ‘এবং সেথায় পিপাসার্ত হইবে না এবং রৌদ্র-ক্লিষ্টও হইবে না।’

সুরা আম্বিয়া’র ৭৭ আয়াতে আল্লাহ বলেন
(৭৭)  এবং আমি তাহাকে সাহায্য করিয়াছিলাম সেই সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে যাহারা আমার নিদর্শনাবলী অস্বীকার করিয়াছিল, উহারা ছিল এক মন্দ সম্প্রদায়। এইজন্য উহাদিগের সকলকেই আমি নিমজ্জিত করিয়াছিলাম।

সুরা হাজজের ৫, ১৪,২৩,৪৫,৬৩,৬৫ আয়াতেআল্লাহ বলেন
(৫) হে মানুষ!  পুনরুত্থান সম্বন্ধে যদি তোমারা সন্দিগ্ধ হও তবে অবধান কর-আমি তোমাদিগকে সৃষ্টি করিয়াছি মৃত্তিকা হইতে,  তাহার পর শুক্র হইতে, তাহার পর ‘আলাকা’ হইতে, তাহার পর পূর্ণাকৃতি অথবা অপূর্ণাকৃতি গোশতপিন্ড হইতে,  তোমাদিগের নিকট ব্যাক্ত করিবার জন্য, আমি যাহা ইচ্ছা করি তাহা এক নিদিষ্টকালের জন্য মাতৃগর্ভেস্থিত রাখি, তাহার পর আমি তোমাদিগকে শিশুরূপে বাহির করি, পরে যাহাতে তোমারা পরিণত বয়সে উপনীত হও। তোমাদিগের মধ্যে কাহারেও কাহারেও প্রত্যাবৃত্ত করা হয় হীনতম বয়সে যাহার ফলে, উহারা যাহা কিছু জনিত সে সম্বন্ধে উহারা সজ্ঞান থাকে না। তুমি ভূমিকে দেখ শুস্ক, অতঃপর উহাতে আমি বারি বর্ষণ করিলে উহা শস্য -শ্যামলা হইয়া আন্দোলিত ও স্ফীত হয় এবং উদগত করে সর্বপ্রকার নয়নাভিরাম উদ্ভিদ।
(১৪)  যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাহাদিগকে দাখিল করিবেন জান্নাতে, যাহার নিন্মদেশে নদী প্রবাহিত, আল্লাহ যাহা ইচ্ছা তাহাই করেন।
(২৩)  যাহারা ঈমান আনে ও সৎকর্ম করে আল্লাহ তাহাদিগকে দাখিল করিবেন জান্নাতে যাহার পাদদেশে নদী প্রবাহিত, সেথায় তাহাদিগকে অলংকৃত করা হইবে স্বর্ণ-কঙ্কন ও মুক্তা দ্বারা এবং সেথায় তাহাদিগের পোশাক-পরিচ্ছদ হইবে রেশমের।
(৪৫)  আমি ধ্বংস করিয়াছি কত জনপদ যেইগুলির বাসিন্দা ছিল জালিম এই সব জনপদ তাহাদের ঘরের ছাদসহ ধ্বংসস্তুূপে পরিণত হইয়াছিল এবং কত কূপ পরিত্যক্ত হইয়াছিল ও কত সুদৃঢ় প্রাসাদও!
(৬৩)  তুমি কি লক্ষ্য কর না যে, আল্লাহ বারি বর্ষণ করেন আকাশ হইতে যাহাতে সবুজ শ্যামল হইয়া উঠে ধরিত্রী? আল্লাহ সম্যক সুক্ষ্মদর্শী, পরিজ্ঞাত।
(৬৫) তুমি কি লক্ষ্য কর না যে,  আল্লাহ তোমাদিগের কল্যাণে নিয়োজিত করিয়াছেন পৃথিবীতে যাহা কিছু আছে তৎসমুদয়কে এবং তাঁহার নির্দেশে সমুদ্রে বিচরণশীল নৌযানসমূহকে, এবং তিনিই আকাশকে স্থির রাখেন যাহাতে উহা পতিত না হয় পৃথিবীর উপর তাহার অনুমতি ব্যাতীত? আল্লাহ নিশ্চয়ই মানুষের প্রতি দয়ার্দ্র, পরম দয়ালু।

সুরা মু’মিনূনের ১৮, ২২, ২৭,২৮, ৪১, ৫০ আয়াতে আল্লাহ বলেন
(১৮)  এবং আমি আকাশ হইতে বারি বর্ষণ করি পরিমিতভাবে, অতঃপর আমি উহা মৃত্তিকায় সংরক্ষিত করি, আমি উহাকে অপসারিত করিতেও সক্ষম।
(২২)  এবং তোমারা উহাতে ও নৌযানে আরোহণও করিয়া থাক।
(২৭)  অতঃপর আমি তাহার নিকট ওহী করিলাম, ‘ তুমি আমার তত্ত্বাবধানে ও আমার ওহী অনুযায়ী নৌযান নির্মাণ কর, অতঃপর যখন আমার আদেশ আসিবে ও উনুন উথলিয়া উঠিবে তখন উঠাইয়া লইও প্রত্যেক জীবের এক এক জোড়া এবং তোমার পরিবার পরিজনকে, তাহাদিগের মধ্যে যাহাদিগের বিরুদ্ধে পূর্বে সিদ্ধান্ত হইয়াছে তাহাদিগের সম্পর্কে তুমি আমাকে কিছু বলিও না, তাহারা তো নিমজ্জিত হইবে।
(২৮)  যখন তুমি ও তোমার সংগীরা নৌযানে আসন গ্রহণ করিবে তখন বলিও, ‘ সমস্ত প্রশংসা আল্লাহরই, যিনি আমাদিগকে উদ্ধার করিয়াছেন জালিম সম্প্রদায় হইতে।
(৪১) অতঃপর সত্য সত্যই এক বিকট আওয়াজ উহাদিগকে আঘাত করিল এবং আমি উহাদিগকে তরংগ-তাড়িত আবর্জনা সদৃশ করিয়া দিলাম। সুতরাং ধ্বংস হইয়া গেল জালিম সম্প্রদায়।
(৫০)  এবং আমি মারয়াম-তনয় ও তাহার জননীকে করিয়াছিলাম এক নিদর্শন, তাহাদিগকে আশ্রয় দিয়াছিলাম এক নিরাপদ ও প্রস্রবণ বিশিষ্ট উচ্চ ভূমিতে।

সুরা নূরের ৩৯, ৪০, ৪৩,৪৫ আয়াতে আল্লাহ বলেন

(৩৯)  যাহারা কুফরী করে তাহাদিগের কর্ম মরুভূমির মরীচিকা সদশ, পিপাসার্ত যাহাকে পানি মনে করিয়া থাকে, কিন্তু সে উহার নিকট উপস্থিত হইলে দেখিবে উহা কিছু নহে এবং সে পাইবে সেথায় আল্লাহকে, অতঃপর তিনি তাহার কর্মফল পূর্ণ মাত্রায় দিবেন।  আল্লাহ হিসাব গ্রহণে তৎপর।
(৪০)  অথবা গভীর সমুদ্র তলের অন্ধকার সদৃশ যাহাকে আচ্ছন্ন করে তরংগের উপর তরংগ, যাহার উর্ধে মেঘপুঞ্জ, অন্ধকারপুন্জ স্তরের উপর স্তর, এমনকি সে হাত বাহির করিলে তাহা আদৌ দেখিতে পাইবে না আল্লাহ যাহাকে জ্যোতি দান করেন না তাহার জন্য কোন জ্যোতিই নাই।
(৪৩) তুমি কি দেখ না, আল্লাহ সঞ্চালিত করেন মেঘমালাকে, তৎপর তাহাদিগকে একত্র করেন এবং পরে পুঞ্জীভূত করেন, অতঃপর তুমি দেখিতে পাও, উহার মধ্য হইতে নির্গত হয় বারিধারা, আকাশস্থিত শিলা স্তুপ হইতে তিনি বর্ষণ করেন শিলা এবং ইহা দ্বারা তিনি যাহাকে ইচ্ছা আঘাত করেন এবং যাহাকে ইচ্ছা তাহার উপর হইতে ইহা অন্য দিকে ফিরাইয়া দেন। মেঘের বিদ্যুৎ ঝলক দৃষ্টি শক্তি প্রায় কাড়িয়া লয়।
(৪৫) আল্লাহ সমস্ত জীব সৃষ্টি করিয়াছেন পানি হইতে, উহাদিগের কতক পেটে ভর দিয়া চলে, কতক দুই পায়ে চলে এবং কতক চলে চারি পায়ে, আল্লাহ যাহা ইচ্ছা সৃষ্টি করেন,  আল্লাহ সর্ব বিষয়ে সর্বশক্তিমান।
চলমান————-
(লেখক: সহকারী অধ্যাপক। চারবার জাতীয় পদক প্রাপ্ত এগ্রিকালচারাল ইম্পর্ট্যান্ট পারসন এআইপি)

(ছবিঃইলিয়াছ হোসাইন)