ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন প্রত্যাশী ১৬ জন!

inside post
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ।।
জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদীয় আসন-২৪৪, ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ)। সমগ্র দেশজুড়েই তুমুল আলোচিত। যেই আসনে এক মেয়াদেই নির্বাচন হয় তিনবার! আগামী ৫ নভেম্বর অনুষ্ঠিতব্য উপ-নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে মরিয়া ১৬ জন! তন্মধ্যে সদ্য প্রয়াত আলোচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভুইয়ার ছেলে মাঈনুল হাসান তুষারও রয়েছেন।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর এই আসনের আলোচিত সংসদ সদস্য উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া মারা যান। পরের দিনই এই আসনটি শূন্য ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন। এরপরই ঘোষণা করা হয় উপ-নির্বাচনের তফসিল। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ নভেম্বর উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে চলতি বছরেই গত ১ ফেব্রুয়ারি উপ-নির্বাচন হয়েছিলো। আগামী ৫ নভেম্বরের নির্বাচন নিয়ে গত ৫ বছরে এই আসনে তিনবার সংসদ নির্বাচনের স্বাদ গ্রহণ করবেন ভোটাররা।
আগামী ৫ নভেম্বরের উপ-নির্বাচনে এই আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেতে দলের কাছে আবেদন করেছেন ১৬  জন। এরমধ্যে সদ্য প্রয়াত আলোচিত সংসদ সদস্য উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়ার ছেলে মাঈনুল হাসান তুষার রয়েছেন।তুষার সাংবাদিকের জানান, শনিবার (০৭ অক্টোবর) আওয়ামী লীগের সদস্যপদ গ্রহণ করে মনোনয়নের আবেদন ফরম সংগ্রহ করেন। মোট ১৬ জন মনোনয়নের আবেদন জমা দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন সাবেক ছাত্রনেতা, মনোনয়ন প্রার্থী আবদুল হান্নান রতন। দলের মনোনয়ন ফরম জমা দিয়েছেন বিগত ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয়ী উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়ার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী মাঈন উদ্দিন মঈন, সংরক্ষিত আসনের নারী সংসদ সদস্য উম্মে ফাতেমা নাজমা বেগম (শিউলী আজাদ), সাবেক ছাত্রনেতা কামরুজ্জামান আনসারী, আবদুল হান্নান রতন, শাহজাহান আলম সাজু, জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবুল বারী চৌধুরী, আশুগঞ্জ উপজেলা আওয়ামীলীগ নেতা হাজী ছফিউল্লাহ মিয়া, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের স্বাস্থ্য ও জনসংখ্যা বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. আশীষ কুমার চক্রবর্তী, স্বাধীনতা শিক্ষক পরিষদ নেতা অধ্যক্ষ শাহজাহান আলম সাজু, সরাইল উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট নাজমুল হোসেন, অ্যাডভোকেট সৈয়দ তানভীর হোসেন কাউসার, শাহ মফিজ, সরাইল উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান রফিক উদ্দিন ঠাকুর, সরাইল উপজেলা যুবলীগ নেতা অ্যাডভোকেট আশরাফ উদ্দিন মন্তু, আবু শামীম মোহাম্মদ পিয়ার পলাশ, এমডি জালাল এবং সদ্য প্রয়াত আলোচিত সাংসদ উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়ার ছেলে মাঈনুল হাসান তুষার।
সমগ্র দেশজুড়েই তুমুল আলোচিত এই আসনটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার ৯টি, আশুগঞ্জ উপজেলার ৮টি সহ মোট ১৭টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এই আসনে মোট ভোটার সংখ্যা চার লাখ ১০ হাজার ১১২ জন। এর মধ্যে সরাইল উপজেলার মোট ভোটার দুই লাখ ৬৬ হাজার ৫৯৭ জন। আর আশুগঞ্জ উপজেলার মোট ভোটার এক লাখ ৪৩ হাজার ৫১৫ জন। বিগত ২০১৮ খ্রিষ্টাব্দে অনুষ্ঠিত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি দলীয় প্রার্থী উকিল আব্দুস সাত্তার ভুইয়া ৮৩ হাজার ৯৯৭ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন স্বতন্ত্র প্রার্থী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাঈন উদ্দিন মঈন। তিনি পেয়েছিলেন ৭৫ হাজার ৪১৯ ভোট। এরপর উকিল আবদুস সাত্তার ভূইয়া সংসদ থেকে পদত্যাগ করে উপ-নির্বাচনে আবারো স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। গত ১ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত ওই উপ-নির্বাচনে উকিল আব্দুস সাত্তার ভুইয়া ৪৪ হাজার ৯১৬ ভোট পেয়ে নির্বাচিত হন। তার  নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাপা’র আবদুল হামিদ ভাসানী পান মাত্র হাজার ৬৩৫ ভোট।গত ৩০ সেপ্টেম্বর উকিল আব্দুস সাত্তার ভূইয়া মারা যাবার পরদিনই নির্বাচন কমিশন আসনটি শূন্য ঘোষণা করেন, ঘোষণা করা হয় উপ-নির্বাচনের তফসিল। ঘোষিত তফসিল অনুযায়ী আগামী ৫ নভেম্বর এখানে উপ-নির্বাচনের ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
আরো পড়ুন