ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রামবাসীর সংঘর্ষে আহত ৪০
বাড়িঘর-দোকানপাট ভাঙচুর-লুট
আহলে সুন্নাত ও তাবলীগ অনুসারীদের সংঘর্ষ
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.)’র জশনে জুলুসে বাধা, মারধরের জেরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগরে হয়েছে ফের সংঘর্ষ। বৃহস্পতিবার (১৯ সেপ্টেম্বর) সকালে উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়ন এলাকায় আহলে সুন্নাতুল জামাত ও তাবলীগ জামাতের অনুসারীদের মধ্যে টানা পাঁচ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে ৪০ জন আহত হয়েছে। এসময় দাঙ্গাবাজরা হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট চালায় বেশকিছু বাড়িঘর-দোকানপাটে। পরবর্তী সংঘাত এড়াতে এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) এর দিন বিজয়নগর উপজেলার চম্পকনগর ইউনিয়নের সাটিরপাড়া গ্রাম থেকে দৌলতবাড়ি দরবার শরিফের পীর সৈয়দ নাঈম উদ্দিন আহমেদ হুজুর ও মাজেদুল হাসানের নেতৃত্বে একটি জশনে জুলুসের মিছিল বের হয়। মিছিলটি চম্পকনগর গ্রামে পৌঁছালে স্থানীয় তাবলীগ জামাত নেতা রহমত উল্লাহর সমর্থনে ওই গ্রামের লোকজন বাধা দেয়াসহ কামাল নামীয় একজনকে মারধর করে। এরই জের ধরে বৃহষ্পতিবার সকাল আটটায় সাটিরপাড়া, ইছাপুরা ও খাদুরাইল গ্রামের লোকজন চম্পকনগর গ্রামে হামলা চালায়। এসময় চম্পকনগর গ্রামের পক্ষে পার্শ্ববর্তী গেরারগাঁও এবং নুরপুর গ্রামে লোকজনও সংঘর্ষে অংশ নেন। এতে উভয়পক্ষের সহস্রাধিক লোকজন রামদা, বল্লম, চাইনিজ কুড়ালসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্র নিয়ে সংঘর্ষে লিপ্ত হলে পুরো এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। থেমে থেমে টানা পাঁচ ঘন্টাব্যাপী সংঘর্ষে উভয়পক্ষের কমপক্ষে ৪০ জন আহত হয়। আহতরা স্থানীয় বিজয়নগর উপজেলা হাসপাতালসহ বিভিন্ন প্রাইভেট হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। এদিকে সংঘর্ষ চলাকালে দাঙ্গাবাজরা প্রতিপক্ষের বেশকিছু বাড়িঘর-দোকানপাটে হামলা-ভাঙচুর-লুটপাট চালায়। ঘটনার খবর পেয়ে পুলিশ, সেনাবাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে দুপুরের দিকে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়। স্থানীয় গেরারগাঁও গ্রামের বাসিন্দা নাসির উদ্দিন বলেন, জশনে জুলুসের র্যালী নিয়ে ঈদে মিলাদুন্নবীর দিনের ঝামেলাকে কেন্দ্র করে গতকাল বৃহষ্পতিবার ফের সংঘর্ষ হয়। সড়কের পাশে বাড়ি হওয়ায় দাঙ্গাবাজরা আমার ঘরসহ অনেকের বাড়িঘরে ব্যাপক ভাঙচুর-লুটপাট চালায়।
বিজয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. মাছুম মিয়া জানান, ‘হাসপাতালে ৩০ জনেরও অধিক আহত মানুষ চিকিৎসা নিয়েছেন।’ অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) বিল্লাল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ‘বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। পরবর্তী সংঘর্ষ এড়াতে ঘটনাস্থলে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।’