হোটেল,নেতার বাসা ও স্বজনের বাসায় লক্ষাধিক নেতা-কর্মী
তৈয়বুর রহমান সোহেল ।।
আগামী শনিবার (২৬ নভেম্বর) কুমিল্লায় অনুষ্ঠিত হবে বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশ। বৃহত্তর কুমিল্লার তিন জেলা চাঁদপুর, কুমিল্লা ও ব্রাহ্মণবাড়িয়াকে নিয়ে এ সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হবে। সমাবেশ উপলক্ষে কুমিল্লায় চাঁদপুর, ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও কুমিল্লা সদরের বাইরের উপজেলার লোকজনরা কুমিল্লা নগরীর আশেপাশের এলাকায় উপস্থিত হতে শুরু করেছেন। ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত বিএনপির লক্ষাধিক নেতা-কর্মী কুমিল্লায় অবস্থান নিয়েছেন বলে বিএনপি নেতারা দাবি করেছেন। পাশাপাশি জেলা শহরের সবগুলো হোটেলের সিট ২৩ থেকে ২৫ নভেম্বর পর্যন্ত বুকিং হয়ে গেছে।
সূত্র জানায়, হোটেল-মোটেল ছাড়াও বিভিন্ন নেতার বাসা, আত্মীয়স্বজনদের বাসায় অবস্থান নিয়েছেন নেতা-কর্মীরা।
সূত্র আরও জানায়, শিক্ষা, চাকরি, চিকিৎসা ও সহজ যাতায়াত ব্যবস্থার কারণে চাঁদপুর ও ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার প্রচুর মানুষের বসবাস কুমিল্লা শহরে। সুতরাং বাইরে থেকে আসা বিএনপির কর্মীদের কুমিল্লায় অবস্থান নিতে বেগ পেতে হচ্ছে না। তারা স্বজনদের বাসায় উঠছেন।
এদিকে টাউন হল মাঠে সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায়,মাঠের পাশের কোন ভবন খালি নেই। সেখানে ঝুলছে বিভিন্ন জেলা,মহানগর,উপজেলা নেতৃবৃন্দের ব্যানার ফেস্টুন। মাঠে এসে ঘুরাঘুরি করছেন বিভিন্ন উপজেলার নেতা-কর্মীরা। অনেকে মাঠে পলিথিন বিছিয়ে বিশ্রাম নিচ্ছেন।
মাঠে কথা হয় লাকসামের মনপাল গ্রামের সাদ্দাম হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, ধর্মঘটের আশংকায় আগেই চলে এসেছেন। একটা হোটেলে উঠেছেন।
লাকসাম উপজেলা বিএনপির আহবায়ক আবদুর রহমান বাদল বলেন,আমাদের অধিকাংশ নেতা-কর্মী আগেই চলে এসেছেন। আমাদের দুই উপজেলা থেকে ১৫হাজারের বেশি নেতাকর্মী আসবেন।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিন বলেন, এ সমাবেশ হবে আমজনতার। কারণ, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি, সরকারের অনাচারে মানুষ আজ দিশেহারা। মানুষ পরিবর্তন চায়। তাই বিএনপির নেতা-কর্মীরা ছাড়াও সাধারণ মানুষের উপস্থিতি ব্যাপক থাকবে গণসমাবেশে। আমার ধারণা সমাবেশে চার লক্ষাধিক মানুষের সমাগম হবে। সমাবেশস্থল টাউন হলে শুধুমাত্র স্টেজ থাকবে। কর্মীরা অবস্থান নিবে কান্দিরপাড় হতে শুরু করে টমছমব্রিজ, শাসনগাছা, চকবাজার ও ফৌজদারী মোড় পর্যন্ত।
দেওয়া হয়নি পরিবহন ধর্মঘটঃ
ময়মনসিংহ ব্যতীত বিএনপির অন্যান্য বিভাগীয় সমাবেশগুলোতে পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেওয়া হলেও ২৪ নভেম্বর বিকেল পর্যন্ত কুমিল্লায় পরিবহন ধর্মঘটের ডাক দেয়নি মালিক ও শ্রমিক পরিবহনের কোনো পক্ষ। সূত্র বলছে, ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে কুমিল্লায় কোনো পরিবহন ধর্মঘট কাজে আসবে না। জেলার রেললাইন ঢাকা-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম-সিলেট, ময়মনসিংহ-চট্টগ্রাম, নোয়াখালী-ঢাকা ও চাঁদপুর-চট্টগ্রামের সাথে সংযুক্ত। এছাড়া দেশের লাইমলাইট খ্যাত ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ১০৫ কিলোমিটার কুমিল্লার ওপর দিয়ে অতিবাহিত। তাই কুমিল্লায় পরিবহন ধর্মঘট ডাকা হলে দেশের অর্থনীতির ওপর বিরাট আঘাত আসতে পারে। সে কারণে কুমিল্লায় ধর্মঘট ডাকার বিষয়ে ঐক্যমতে পৌঁছাতে পারেনি কর্তৃপক্ষ।
বৃহস্পতিবার বিকেলে দি মোটরস অ্যাসোসিয়েশন কুমিল্লার সভাপতি জামিল আহমেদ খন্দকার বলেন, ধর্মঘটের ব্যাপারে পরিবহন সংশ্লিষ্ট কোনো পক্ষই এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেননি। ধর্মঘট না হওয়ার সম্ভাবনা বেশি।
কুমিল্লা দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ও গণসমাবেশের প্রধান সমন্বয়ক আমিন-উর-রশিদ ইয়াছিন বলেন, আমরা শুনে আসছি পরিবহন ধর্মঘট হবে না। এমন হলে আমাদের কর্মীরা সমাবেশের দিনই আসতে পারতেন। কিন্তু এই সরকারকে বিশ্বাস করা যায় না। তারা মুখে একটা বলে, অন্তরে অন্যটা ধারণ করে। সমাবেশের আগে তারা বাস চলাচল সীমিত করে দিতে পারে, বিভিন্ন মাধ্যমে আমরা এমন তথ্য পাচ্ছি।