বেকায়দায় কুমিল্লার প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকরা

 

কেউ মধু বিক্রি করছেন-কেউবা দিচ্ছেন হিজামা

 

অফিস রিপোর্টার।।
গণিত থেকে স্নাতকোত্তর করে ১৪তম নিবন্ধনে উত্তীর্ণ হন বিল্লাল হোসেন। প্রথমবার গণবিজ্ঞপ্তি হলেও প্রতিষ্ঠান পাননি বিল্লাল। এরপর আবার অপেক্ষা। মাঝে গণবিজ্ঞপ্তি বন্ধ। তাই বাধ্য হয়ে খণ্ডকালীন শিক্ষকতার চাকরি নেন কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়ার এক জুনিয়র স্কুলে। এরপর বিয়েও করেন বিল্লাল। কিন্তু বিয়ের এক সপ্তাহের মাথায় করোনার প্রভাব শুরু হওয়ার পরপরই শিক্ষপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। প্রতিষ্ঠান কয়েকমাস তার বেতন চালু রাখে। এক পর্যায়ে বেতন বন্ধ করে দেয় তার স্কুল। বর্তমানে তেমন প্রাইভেট-কোচিংয়ের সুযোগও নেই। এ নিয়ে নিদারুণ কষ্টে আছেন তিনি।

বিল্লাল হোসেন জানান, ‘চাকরিহারা হয়ে কুমিল্লায় একটা টিউশন শুরু করি। এখন সেটাও নেই। কিছুদিন পূর্বে শিক্ষক নিয়োগের গণবিজ্ঞপ্তি জারি করে এনটিআরসিএ। রিটের কারণে নিয়োগ স্থগিত হয়ে যায়। জটিলতা কাটলেও কখন নিয়োগ হয়, তা নিয়ে ভাবনায় আছি।’
কুমিল্লা নগরীর হাউজিং এস্টেটের একটি কিন্ডারগার্টেনের প্রতিষ্ঠার সাথে যুক্ত আছেন ইকবাল হোসেন। লম্বা সময় প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় বর্তমানে হিজামা থেরাপির কাজ করছেন তিনি।


ইকবাল জানান, ‘তাবলিগ জামাতের সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম। তাই ছাত্রদের অভিভাবকরা খুব পছন্দ করত। এ কারণে প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেলেও প্রায় ৪মাস অভিভাবকরা স্বেচ্ছায় বেতন পাঠিয়ে দেন। বন্ধ দীর্ঘায়িত হওয়ায় বেঁকে বসেন তারা। হিজামি থেরাপির প্রশিক্ষণ জানা ছিল। তা দিয়ে কোনোমতে জীবন পার করছি।’

করোনায় শিক্ষকতা পেশা ছেড়ে দিলেও সংগ্রাম করে ঘুরে দাঁড়িয়েছেন এমদাদুল হক মাইনাস। নগরীর একটি ননএমপিও কলেজের বাংলার লেকচারার ছিলেন তিনি। কলেজ বন্ধ থাকায় উদ্যোক্তা হয়ে যান তিনি। শীত-বসন্তে অনলাইনে মধু বিক্রি আর এ মৌসুমে আম বিক্রি করে বেশ সফল মাইনাস। শিক্ষকতার চেয়ে তুলনামূলক ভালো উপার্জন হওয়ায় চলতি মাসে স্বেচ্ছায় চাকরি ছেড়েছেন তিনি। সফল উদ্যোক্তা হয়ে বাকি জীবন কাটানোর ইচ্ছা রয়েছে তার।