ব্রাহ্মণবাড়িয়ার টাউন খালের নাব্যতা ফেরাতে ‘নোঙর’র প্রয়াস
আরো পড়ুন:
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
তিতাস থেকে তিতাসেই পতিত। প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দৈর্ঘের খালটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের বুক চিড়ে প্রবাহিত বলেই এর নাম ‘টাউন খাল’। সংস্কার-রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে এটি অস্তিত্বহীনতায় পরিণত হচ্ছে ড্রেইনে। ইতিমধ্যেই দু’পাড়ের বেশ কিছু অংশ দখলও করে ফেলেছেন প্রভাবশালীরা। এছাড়াও রাতের আঁধারে শহরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরা, মার্কেটের ময়লা-আবর্জনা-বর্জ্যও ফেলা হয়। খননের মাধ্যমে ঐতিহ্যবাহী খালের নাব্যতা ফেরানো জেলাবাসীর দীর্ঘদিনের দাবীও হচ্ছে উপেক্ষিত। এরই মাঝে সামাজিক সংগঠন ‘নোঙর’ দিনব্যাপী পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার মাধ্যমে খালটির নাব্যতা ফেরাতে চালালো প্রয়াস।
শনিবার (১৪ আগস্ট) সামাজিক সংগঠন ‘নোঙর’র উদ্যোগে দিনব্যাপী খাল পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান শুরু হয়। সকাল ১০ টায় ঐতিহ্যবাহী টাউন খালের থানা ঘাট এলাকায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযান কর্মসূচির উদ্বোধন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সভাপতি রিয়াজ উদ্দিন জামি। নোঙর জেলা কমিটির সভাপতি শামীম আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন নোঙর কেন্দ্রীয় কমিটির প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি সুমন শামস। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো. লোকমান হোসেন, ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাবের সহ-সভাপতি ইব্রাহিম খান সাদাত, বিশিষ্ট বাচিক শিল্পী প্রভাষক মো. মনির হোসেন, নোঙর জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক খালেদা মুন্নী।
খাল পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, সংস্কার ও রক্ষনাবেক্ষণের অভাবে ঐতিহ্যবাহী টাউন খালটি দিন দিন অস্তিত্বহীন হয়ে যাচ্ছে। এটিকে খনন করে নাব্যতা ফিরেয়ে আনা, নৌ-চলাচলের ব্যবস্থা করতে জেলাবাসী দীর্ঘদিন ধরে দাবী জানিয়ে আসলেও জেলা পরিষদ কোনো কার্যকর ভূমিকা পালন করেনি। ইতিমধ্যেই খালের দুইপাড়ের বেশ কিছু অংশ দখল করে ফেলেছে প্রভাবশালীরা। এছাড়াও শহরের বিভিন্ন হোটেল-রেস্তোরা, বিভিন্ন মার্কেটের ময়লা-আবর্জনা-বর্জ্য রাতের বেলায় খালে ফেলার কারনে খালটি আস্তে আস্তে ড্রেইনে পরিণত হচ্ছে। অথচ তিতাস নদীর থেকে গোকর্ণঘাট থেকে এই খালের উপর দিয়েই যাত্রী ও মালামালবাহী নৌকা যাতায়াত করত শহরের ব্যবসা-বাণিজ্যের কেন্দ্রস্থল আনন্দবাজার, টানবাজার, জগতবাজার ঘাটে।
উল্লেখ্য, ঐতিহ্যবাহী ব্রাহ্মণবাড়িয়া টাউন খালটির দৈর্ঘ প্রায় পাঁচ কিলোমিটার। এটি তিতাস নদীর টানবাজার এলাকা থেকে শুরু হয়ে শহরের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়ে পৌর এলাকার গোকর্ণঘাট দিয়ে পুনরায় তিতাস নদীতেই মিলিত হয়েছে। সামাজিক সংগঠন ‘নোঙর’ আয়োজিত পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা অভিযানের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বক্তারা ঐতিহ্যবাহী টাউন খালটি রক্ষায় খালের পাড়ের অবৈধ দখলবাজদের উচ্ছেদ, খনন করে খালের নব্যতা ফিরিয়ে আনা ও খালের বিভিন্ন অংশে থাকা অবৈধ সাঁকো অপসারণ করে নৌ-চলাচলের ব্যবস্থা স্বাভাবিক করার জোর দাবী জানান