সাবেক এমপি কালামসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে মামলা

 

আল-আমিন কিবরিয়া ।।
কুমিল্লা-৪ আসনের(দেবিদ্বার) সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ ও তার ছোট ভাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদসহ ৭৩ জনের বিরুদ্ধে হত্যা চেষ্টার অভিযোগে আদালতে একটি মামলা হয়েছে।  বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ৪নং আমলী আদালতে মামলাটি দায়ের করেছেন আবু বক্কর (১৯) নামের এক ভুক্তভোগীর বাবা আবুল খায়ের(৫৫)।
হত্যাচেষ্টার অভিযোগটি আমলে নিয়ে বিচারক মো. কামাল হোসেন  দেবিদ্বার থানাকে এফআইআর হিসেবে গণ্য করার আদেশ দেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদী পক্ষের আইনজীবী আরিফুর রহমান।

মামলার বাদী আবুল খায়েরের বাড়ি কুমিল্লার দেবিদ্বার উপজেলার শাকতলা গ্রামে। তিনি ওই গ্রামের মৃত বাদশা মিয়ার ছেলে। আবুল খায়েরের ছোট ছেলে আবু বক্করকে হত্যাচেষ্টার অভিযোগ এনে এ মামলা করেন তিনি।

জানা যায়, গত ৪ আগস্ট দেবিদ্বার উপজেলা সদরে ছাত্র-জনতার আন্দোলন প্রতিহত করতে সাবেক এমপি আবুল কালাম আজাদ ও তার ছোট ভাই উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, ছাত্রলীগসহ লীগের অন্যান্য সংগঠনের হাজারো অস্ত্রধারী ঝাঁপিয়ে পড়ে ছাত্র জনতার উপর। এ সময় নির্বিচারে গুলি বর্ষণ, কুপিয়ে ও পিটিয়ে আহত করে অর্ধশত ছাত্র-জনতাকে। তাদের মধ্যে দেবিদ্বার পৌর এলাকার বারেরা গ্রামের বাস চালক রুবেলের মৃত্যুর হয়। হাসপাতালে এখন পর্যন্ত চিকিৎসাধীন ৫জন। চিকিৎসাধীনদের মধ্যে একজন আবু বক্কর(১৯)। তিনি রাজধানীর ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব নিউরো সাইন্স এন্ড হসপিটালের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন।

আন্দোলনে হামলার কয়েকটি ভিডিও ফুটেজ বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, আবু বক্করকে হত্যাচেষ্টার নির্মম দৃশ্য। ৪ আগস্ট বেলা সাড়ে ১১ টা। দেবিদ্বার সদরের ডা. কালাচাঁন সুপার মার্কেটের সামনে অবস্থান নেয় আন্দোলনরত ছাত্র-জনতা। তাদের থেকে কিছুটা দূরে দেবিদ্বার-চান্দিনা সড়কের মোড় থেকে ছাত্র-জনতাকে উদ্দেশ্য করে নির্বিচারে গুলি করা শুরু করে অস্ত্রধারীরা।
এ সময় পিছু হটতে থাকে ছাত্র-জনতা। তাদের পিছনে পরে যায় আবু বক্কর। অস্ত্রধারীদের মধ্যে দুই জন দৌঁড়ে এসে অস্ত্র হাতে ঝাপিয়ে পড়েন আবু বক্করের উপর। এর পরপরই অন্তত ৬ জন আবু বক্করকে লাঠিপেটা ও কোপাতে দেখা যায়। এক পর্যায়ে আবু বক্কর মাটিতে লুটিয়ে পড়লে মৃতভেবে ছেড়ে দেন অস্ত্রধারীরা।

আহত আবু বক্করের ভাই মোহাম্মদ আলী বলেন, পরিবারের অনেক টাকা খরচ হয় ভাইয়ের চিকিৎসার পেছনে। গতকাল আমার আব্বা আমার ভাইয়ের হত্যা চেষ্টাকারীদের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন। আমার পরিবার থেকে দাবি জানাই আসামিদের দ্রুত গ্রেফতার করে বিচারের আওতায় আনার।

দেবিদ্বার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রফিকুল ইসলাম বলেন, আবু বক্কর হত্যাচেষ্টায়ে আদালতে মামলার কাগজপত্র আমার হাতে এখন পর্যন্ত আসেনি। তবে আমি লোকমুখে শুনেছি আবু বক্কর হত্যাচেষ্টায় আদালতে একটি মামলা হয়েছে। বিজ্ঞ আদালত থেকে কাগজপত্র আমার হাতে আসার পর আমরা তদন্ত শুরু করবো।