৪৭ বছর বয়সে ৪৭কেজি ওজনের ম্যারাথন জসিম!

 

আবু সুফিয়ান রাসেল।

মো. জসিম সিদ্দিকী। বয়স ৪৭। তার ওজন ৪৭। পেশায় ব্যক্তিগত গাড়ি চালক। সহকর্মীরা তার নাম দিয়েছেন ম্যারাথন জসিম। শখের এ কাজকে জীবন সঙ্গী করেছেন কুমিল্লার এ দৌড়বিদ। তার অর্জনের জুলিতে রয়েছে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ে নানা পদক। একবার জাতীয় পর্যায় খেলে হয়েছেন চতুর্থ।

সর্বশেষ মুজিববর্ষ ম্যারাথনে কুমিল্লায় দ্বিতীয় হয়েছেন।

 

সূত্রমতে, ১৯৭৩ সালে মুরাদনগর উপজেলার মুগশাই গ্রামে জন্ম জসিম সিদ্দিকীর। পারিবারিক ভাবে বাসবাস করেন আদালতপাড়ায়। দৌড়ের হাতেখড়ি স্কুল জীবন থেকে। বরুড়া তলাগ্রাম উচ্চবিদ্যালয়ের প্রতিবছর দৌড় প্রতিযোগিতায় হয়েছেন প্রথম। দৌড়ের নেশা সেখান থেকে।

দৌড়বিদ হিসাবে যোগ দিয়েছেন নৌ বাহিনীতে। সেখানে মন বসেনি। ১৯৯৭ থেকে ২০০৩ পর্যন্ত সরকারি প্রতিষ্ঠান (বাংলাদেশ জুট মিলস করপোরেশন) বিজেএমসিতে দৌড়বিদ হিসাবে চাকরি করেছেন।
তার সহকর্মী প্রাইভেট কার চালক রফিকুল ইসলাম রানা বলেন, তিনি হাস্যোজ্জল মানুষ। নিজের পাঁচটা গাড়ি আছে ভাড়া দেন। নিজেও চালান। অনেক ড্রাইবারের খারাপ অভ্যাস থাকে। তার কোন খারাপ অভ্যাস নেই। মা বাবার সাথেই বসবাস করেন। সংসার জীবনে পা দেননি। ম্যারাথন তার নেশা। তার এ স্বাস্থ্য নিয়ে আমরা হাসি আনন্দ করি। ম্যারাথন জসিম ডাকলে খুশি হয়।
বাংলাদেশ ব্যাডমিন্টন ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক, জাতীয় ক্রীড়াবিদ কবিরুল ইসলাম শিকদার বলেন, ম্যারাথন বিশ্বের প্রাচীন একটি খেলা। ম্যারাথন বাংলাদেশে তেমন পৃষ্ঠপোষকতা পায়নি। তবে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকীতে সকল পর্যায়ে ম্যারাথন আয়োজন করা হয়েছে। ব্যাপক, আগ্রহ উদ্দীপনায় মানুষ অংশ নিয়েছে। অন্য দেশের তুলনায় ম্যারাথনে আমরা পিছিয়ে আছি। কেনিয়া ও ইথিওপিয়ায় এ খেলা খুবই জনপ্রিয়। যুক্তরাজ্য, রাশিয়া, জাপান, ইথিওপিয়ার নারীদের ম্যারাথন দৌড়ের সোনালী ইতিহাস রয়েছে।

দৌড়বিদ জসিম সিদ্দিকী বলেন, আসলে আমি শখ থেকে দৌড়াই। প্রতিদিন গড়ে ৭-৮ কিলো মিটার দৌড়ানো হয়। মোবাইল ফোনের অ্যাপে সময় আর দৌড়ের দূরত্ব জানতে পারি। একবার জাতীয় ভাবে অংশ নিয়ে চতুর্থ হয়েছি। ছয়বার বিভাগীয় খেলায় অংশ নিয়ে চারবার পুরষ্কার পেয়েছি। জেলা পর্যায়ে অনেক পুরষ্কার পেয়েছি। বিজেএমসিতে আমার অনেক অর্জন, অনেক স্মৃতি আছে। সেখানে তিন হাজার টাকা বেতনে ম্যারাথন পদে সাত বছর চাকরি করেছি। সর্বশেষ মুজিববর্ষ ম্যারাথনে অংশ নিয়ে পুরষ্কার পেয়েছি। সুস্থ থাকার জন্য দৌড়ের বিকল্প নেই। শেষ দিন পর্যন্ত সখের এ খেলা ধরে রাখতে চাই। সামনের মাসে সিলেটে বড় একটি খেলায় অংশ নেবো। আমার ইচ্ছা আন্তর্জাতিক খেলায় অংশ গ্রহণ করা।