‘আমাদের কেউ চিনেন না তাই কুরবানির গোস্তও পাই না’

 

‘বাড়িতে গেলেই আমাদের ঈদ’

হাসিবুল ইসলাম সজিব।।

শহিদুল ইসলাম। মাথায় সাদা-কালো চুল,মুখে হালকা দাড়ি, গায়ে রং শ্যমলা। পেশা  রিকশা চালক। বাড়ি কুড়িগ্রাম । পরিবারের সদস্য ছয়জন। বাবা-মা, দুই মেয়ে এবং স্বামী-স্ত্রী। ১৩-১৪ বছর যাবৎ রিকশা চালান কুমিল্লা নগরীতে।

নেউরা গরু বাজারে দেখা হয় রিকশা চালক শহিদুল ইসলামের সাথে।  প্রশ্ন করা হয়. ঈদ কোথায় করবেন? তার চোখের কোনে পানি জমে। মুখে হাসি ঝুলিয়ে বলেন,  যখন বাড়িতে যাই তখনই আমাদের ঈদ।

তার দুই মেয়ে। বড় মেয়ের বয়স ১৩ এবং ছোট মেয়ের বয়স আড়াই বছর। খরচ একা বহন করতে না পারায় স্ত্রীকে সাথে করে নিয়ে আসেন দেড় বছর আগে। তখন তার ছোট মেয়ের বয়স ০১ বছর। স্ত্রীকে কুমিল্লা এসে চাকরি দেন ইপিজেড।

তিনি জানান, বর্তমানে মেয়েরা তার দাদা দাদির সাথে গ্রামে থাকে। আমি রিকশা চালাই। দিনে ৬-৭ শত টাকা পাই। আমার স্ত্রী ইপিজেডে বেতন পাই ১০-১২ হাজার। মাস শেষ হতে বাসা ভাড়া এবং প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র কিনে বাকি টাকা গ্রামে মেয়েদের জন্য পাঠিয়ে দেই। তাতে লেখা পড়া এবং খাওয়া চলে। ঈদের বাড়িতে যাওয়া নিয়ে তিনি বলেন- আমাদেরও ইচ্ছে হয় মা বাবা এবং মেয়েদেরকে নিয়ে ঈদ করি। কিন্তু ভাড়া এমন পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে তা বলা বাহুল্য। আগে জন ৬শত-৭শত টাকা দিয়ে বাড়িতে চলে যেতাম। তাও সন্ধ্যা গাড়িতে উঠলে সকালে বাসায়। বর্তমানে জনপ্রতি টিকেট আঠারো শত থেকে দুই হাজার টাকা। যা ঈদের দুইজনে আসা-যাওয়া ভাড়া আট হাজার টাকা। সময়ও লাগে বেশি। তাই বাড়িতে যাবো না। যখন বাড়িতে যাবো সেদিনই আমাদের পরিবারের ঈদ।

শহরে আমাদের কেউ চিনেন না তাই কুরবানির গোস্তও পাই না। বিকেল বেলায় কান্দিরপাড় বা স্টেশন রোডে টোকাইদের কাছে থেকে যা পারি গোস্ত কিনে বউ জামাই খেয়ে ঘুমাই যাবো।