ঈদকার্ড ও ৯০ দশকের কৈশোরের অনুভূতি

।। প্রকৌশলী মীর ফজলে রাব্বী ।।
একটা সময় ঈদ কার্ডের বেশ চল ছিল। বিশেষ করে ৯০ দশকে রোজার শুরু থেকেই বইয়ের দোকানে এমনকি রাস্তার পাশে টেবিল, চেয়ারে বসে হরেক রং, দামে, ডিজাইনে ঈদকার্ড গুলি বিক্রি হত। অসাধারণ ক্যারিওগ্রাফিতে ঈদ শুভেচ্ছা বার্তাগুলি নজর কাড়তো। বন্ধু-বান্ধব, আত্মীয়-স্বজন, ছোটদের মাঝে বিনিময় হত রং-বেরং এর কার্ড। কে কতগুলি কার্ড পেত, তা নিয়ে হত হুলস্থুল। কার্ডে মনের মত শুভেচ্ছা বার্তা। অনেকে হাতে বানানো ঈদকার্ড প্রিয়জনকে উপহার দিতেন। আস্তে আস্তে মুঠোফোন ক্ষুদেবার্তা ঈদকার্ডের জায়গা নিল, যুক্ত হলো ক্ষুদেবার্তায় এনিমেশন ; যেন শুভেচ্ছা বার্তা জীবন্ত হয়ে ধরা দিচ্ছে। যোগাযোগ প্রযুক্তির দ্রুত বিবর্তনগুলি ৯০ দশকের কৈশোরে কাটানো আজকের মধ্যবয়সীরা উপলব্দি করতে পেরেছেন, যেন প্রযুক্তির দ্রুত বিবর্তনগুলি তাদের সহোদর। প্রযুক্তির এই বিবর্তনগুলিতে আন্তরিকতা ও ভালবাসার স্পর্শ নাই। এমনকি ডিজিটাল মেইল, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, ক্ষুদেবার্তা অনেকে পড়েও দেখেন না। কিছু কর্পোরেট হাউজ, অফিস-আদালতে সীমিত আকারে ঈদশুভেচ্ছা কার্ড প্রচলন থাকলেও প্রযুক্তির অগ্রগতি অন্যান্য অনেক জিনিসের মত ঈদকার্ডের চল অচিরেই হারিয়ে যাবে, যেমন হারিয়ে যায় সময়। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বুদ হওয়া প্রজন্ম ভাবতে পারবেনা কতটা আপন ছিল এক একটি কার্ড। এক একটি কার্ড যেন এক-একটি প্রিয়মানুষ, বন্ধু-বান্ধবের অনুভুতির গল্প।
লেখক: ব্যবস্থাপক (ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস), বাখরাবাদ গ্যাস, কুমিল্লা।