এবারের ঈদ গ্রামে নয় শহরেই হউক–মাসুদা তোফা
ঈদুল আযহায় আমরা কি যেখানে আছি, সেখানে থেকে ঈদ উৎসব উদযাপন করতে পারি না। গ্রামে যাওয়া কি খুব জরুরি ! সবাই মিলে একসাথে ঈদ পালন একবার না করলে কি খুব ক্ষতি হয়ে যাবে ।
সবাই অবলীলায় বেরিয়ে ঘুরছেন, কেউ মাস্ক ব্যবহার করছেন, কেউ করছেন না। খামখেয়ালিপনা । এটি অনুচিত । আপনার সচেতনতায় বাঁচবেন আপনি, আপনার পরিবার এবং বাঁঁচবে দেশ। প্লিজ আর অবহেলা নয় ।
কভিড ১৯ একটা দীর্ঘ সময় ধরে অবস্থান করছে এবং করবে বলেই বিশেষজ্ঞদের মতামত ।
এত সহজে করোনা যাচ্ছে না, তাহলে তার জন্য একটাই কথা
সচেতনতা , সচেতনতা আর সচেতনতা।
আপনার অসাবধানতায় হাজারো মানুষ সংক্রমিত হউক তা আপনি কখনোই চান না নিশ্চয়। জীবন জীবিকার প্রয়োজনে বাইরে বের হতেই হচ্ছে, সেটিও খুব সাবধানে এবং খুব সচেতনভাবে সকল স্বাস্থ্যবিধি মেনেই করতে হবে। খুব সাধারণ খেটে খাওয়া মানুষগুলো কে জীবনজীবিকার প্রয়োজনে বাইরে বের হতেই হচ্ছে। তা না হলে না খেয়ে মরতে হবে তাদের। সরকারই বা কতোদিন খাবার বিতরণ করে যাবে। তাই কর্মের আশায় বেরিয়ে পরতে ই হবে তাদের।
এইসব মানুষগুলোর মধ্যে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। তাই অনেক প্রচার প্রয়োজন ।
কিভাবে স্বাস্থ্য বিধি মেনে বাইরে যাবে, কেন যাবে , তা আরও বেশি করে প্রচার করতে হবে। এখানে মিডিয়াগুলোর বিশাল ভূমিকা রয়েছে । কারণ সাধারণ মানুষ কিন্তু পেপার পত্রিকা না পড়তে পারলেও টিভি দেখে, রেডিও শুনে। নিজের না থাকলেও অন্যের বা রাস্তায় দাড়িয়ে হলেও টিভি দেখে। সুতরাং বিধিনিষেধগুলো যতবেশি তুলে ধরবে ততই মানুষ জানতে পারবে, সচেতন হবে। জাতি বিপদমুক্ত হবে। আবারও বলি ব্যাপক প্রচার, সাবধানতা ও সচেতনতা প্রয়োজন ।
যেটুকু প্রচার শুরু থেকে ছিল তা অপ্রতুল। শুরু থেকে মিডিয়া বা প্রচার মাধ্যমগুলো নিজেরা আরও সচেতন হলে জনগণ আরও সচেতন , সজাগ থাকতো।
শুরুতে সাধারণ মানুষকে নয়, শিক্ষিতজনদের ও কোয়ারেন্টিন, কমিউনিটি ট্রান্সমিশন আইসোলেশন, লকডাউন বুঝে উঠতে সময় লেগেছে। যাক যা গেছে যাক। পেছনে কি হয়নি এই নিয়ে ভেবে , একে অন্যকে দোষারোপ না করে, কি করা যায় তা নিয়ে ভাবতে হবে অনেক বেশি। আসলে আর ভাবার সময় নেই কাজে নেমে পরতে হবে।
এখনো শেষ হয়নি কিছুই , যে কারণে করোনার বিস্তার রোধে বিটিভিসহ সকল গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার প্রয়োজন , আরও আগে থেকেই প্রচারের বিষয়টি মাথায় রাখা দরকার ছিল। আজকে ও খবরে করোনার প্রকোপ ২% বাড়ার কথাই প্রকাশ পেল। তার মানে বিপদ এখনো মাথার উপরেই আছে। আমাদের সংগ্রাম কিন্তু বেঁচে থাকার জন্য। এই মুহুর্তে বেঁচে থাকতে হলে যুদ্ধটা করতে হবে সচেতনভাবে। একটু অসাবধানতাই জীবনের পতন ডেকে আনবে।
প্লিজ এবারের ঈদ হউক আনন্দের তবে যে যেখানে আছি। বাড়ি যাবার অতিমাত্রায় পাগলামিগুলো বন্ধ রাখুন। মনে রাখবেন আপনার , আপনার সন্তান, আপনার বাবামার জীবন আগে,
তারপর আনন্দ উৎসব।আপনি যদি না থাকেন বা তারা ই না থাকে একবার ভাবুন কি দুর্বিষহ হয়ে উঠতে পারে আপনার জীবন!
সরকারেরও উচিত এই ব্যাপারে কঠোর নির্দেশনা দেয়ার। আমাদের অসচেতনতাই দীর্ঘায়িত হবে করোনা, বাড়াবে ঘরে থাকার কষ্ট, বাড়াবে মানসিক বিপর্যয় ।
বিশেষ করে বয়স্ক এবং শিশু কিশোরদের জন্য যা মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে মারাত্মক।
সবশেষে বলবো যারা সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন আপনারা ভাবুন আর যারা এখনো সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেননি আপনারা বিশেষভাবে ভাবুন কতোটা ভয়াবহ অবস্থায় দেশবাসী আছে। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করুন । আপনি বাঁচুন অন্যকেও বাঁচিয়ে রাখতে দায়িত্ব নিন। দেশটা যেমন আমাদের সবার দায়িত্বও সবার। সকলকে ঈদ মুবারক ।
মাসুদা তোফা সহযোগী অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ। কুমিল্লা ভিক্টোরিয়া কলেজ