করোনার কাছে হেরে গেলেন কসবার  আবদুল করিম 

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
আবদুল করিম। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলা এলাকার ইতিহাসের একটি অংশ। নিজে যেমন ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা, তেমনি স্বাধীনতার পরও অর্ধ শতাব্দি ধরে অর্ধশত শহীদ মুক্তিযোদ্ধার সমাধির রক্ষক ছিলেন। জীবনের পড়ন্ত বেলায় এসে মহামারি করোনার কাছে হেরে গেলেন। মুক্তিযুদ্ধের তীর্থভূমি নামে খ্যাত ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার বায়েক ইউনিয়নের কোল্লাপাথর ‘শহীদ সমাধিস্থল’ ছিলো মুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিমের প্রাণ, তিনি ছিলেন এই সমাধিস্থলের পাহাড়াদার।
মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) রাতে রাজধানী ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল করিম ইন্তেকাল করেন, ইন্না লিল্লাহি——– রাজিউন। তিনি কসবা উপজেলার সীমান্তবর্তী বায়েক ইউনিয়নের কোল্লাপাথর গ্রামের আবদুল মান্নানের পুত্র। নিজে যেমন বীর মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন তেমনি নিজ গ্রামের পৈত্রিক ভূমির উপর চিরনিদ্রায় শায়িত থাকা ৫০ জন শহীদ মুক্তিযোদ্ধার গণকবরের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করতেন। তাঁর মৃত্যুর খবর কোল্লাপাথর এলাকায় পৌঁছালে শোকের ছায়া নেমে আসে।
পরিবারের সদস্যরা জানান, বার্ধক্যজনিত নানান রোগে অসুস্থ হয়ে পড়লে গত ১৮ জুলাই তাকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে ২৩ জুলাই তার শরিরে করোনা পজেটিভ ধরা পড়ে। পরে শ্বাসকষ্ট বেড়ে গেলে আইসিইউতে নেয়া হয়। দুই দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে তিনি ওই হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তার বাবা আবদুল মান্নান কোল্লাপাথর গণকবরের জায়গাটি দিয়েছিলেন। মোট ৫০ জনের গণকবরটি আবদুল করিম নিজের সন্তানের মতো দীর্ঘ ৫০ বছর ধরে রক্ষণাবেক্ষণ করেছিলেন। বুধবার (২৮ জুলাই) বাদ জোহর নামাজে জানাজা শেষে কোল্লাপাথরেই তাঁকে সমাহিত করা হয়। এদিকে বায়েক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আল-মামুন ভূইয়া জানান, তিনি আমাদের এলাকার একজন সর্ব্বজন শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি ছিলেন। কোল্লাপাথর গণকবরটি তিনি রক্ষণাবেক্ষণ করতেন। তাঁর মুত্যুতে আমরা একজন সত্যিকারের দেশপ্রেমিক ও অভিভাবককে হারালাম।