কুমিল্লা নগরীর ২০০টন বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় হিমশিম

মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লা নগরীতে প্রতিদিন মানুষ বাড়ছে। ধারণা করা হচ্ছে তা ১০লাখ ছাড়িয়েছে। এই ১০লাখ মানুষ প্রতিদিন ফেলছেন ২০০টনের বেশি বর্জ্য। যা জনবল ও গাড়ি সংকটে অপসারণে হিমশিম খাচ্ছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশন কর্তৃপক্ষ। তাদের জনবল ও গাড়ির চাহিদা পূরণের দাবি জানিয়েছেন সচেতনরা।
সিটি করপোরেশনের সূত্র জানায়,সিটি করপোরেশনের ২৭টি ওয়ার্ডের একেকটি ভবন যেন একেকটি গ্রাম। ১৫৫টি ডাস্টবিন ও ১০০টি স্থানে প্লাস্টিকের বক্স দেয়া হয়েছে। এদিকে সিটি এলাকায় রাজগঞ্জ,চকবাজার,পদুয়ার বাজার,চৌয়ারাসহ ১০-১২টি বাজার রয়েছে। বাসা ও বাজারের এসব বর্জ্য টানছেন ২৫৪জন জনবল। তা সাড়ে তিনশ’ হলে কাজে আরো গতি আসবে। এদিকে ৩২টি গাড়ি আছে। তার মধ্যে ট্রাক্টর ৫টি,কমপেক্ট ৪টি ও ট্রাক ২৩টি। গাড়ি গুলোর অধিকাংশ পুরাতন। ৩টি বেকু রয়েছে। কোনটা সকালে নষ্ট হয় তো কোনটা বিকালে নষ্ট হয়। কাজ করতে হয় জোড়াতালি দিয়ে। সেখানে নগরীর ২৭টি ওয়ার্ডের বর্জ্য অপসারণ করতে সচল মোট ৪৮টি গাড়ি প্রয়োজন।
সরেজমিন বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বাসা থেকে বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় বর্জ্য সংগ্রহ করা হয়। কোথাও তারা বেশি ফি দাবি করেন। এতে অনেকে যেখানে সেখানে বর্জ্য ফেলেন। এছাড়া বর্জ্য ফেলে বিদ্যুতের থামের গোড়াকেও অনেকে ডাস্টবিন বানিয়ে ফেলেছেন। কেউ কেউ ড্রেন ও খালকে ডাস্টবিন বানিয়েছেন। যাতে খাল ড্রেন বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এছাড়া পরিবেশ দূষিত হচ্ছে।
কুমিল্লা কমার্স কলেজের অধ্যক্ষ হুমায়ুন কবির মাসউদ বলেন, নাগরিক হিসেবে আমাদের দায়িত্বও কম নয়। অবহেলা করে আমরা কোন রকমে নাকে হাত দিয়ে ময়লা নির্দিষ্ট স্থানে না ফেলে বাইরে ফেলছি। এই ময়লা আমাদের কারণেই মূল রাস্তায় চলে আসে। এছাড়া সিটি করপোরেশনের জনবল ও গাড়ি সংকটও দূর করতে হবে। তিনি আরো বলেন,দিনে ময়লা পরিষ্কার না করে রাতেই সরিয়ে নিলে কমবে যানজট এবং দুর্গন্ধের ভোগান্তি।
বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা মো. আলমগীর হোসেন বলেন, দুই বছর আগেও দেড়শ’ টন বর্জ্য ছিলো,এখন তা ২০০টন। ফলের মৌসুম ও কুরবানির সময় আমাদের বেশি বেকায়দায় পড়তে হয়। ফলের মৌসুমে বর্জ্য ৫০ টন বেড়ে যায়। এদিকে গত ঈদে চারদিন আমাদের টানা কাজ করতে হয়েছে। সে তুলনায় গাড়ি ও জনবলের সংকট আছে।
ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ মামুন বলেন, কুমিল্লা নগরীতে প্রতিদিন মানুষ বাড়ছে। নগরীতে বর্তমানে ১০লাখের বেশি মানুষ রয়েছে। আমাদের সীমিত অস্থায়ী জনবল ও গাড়ি দিয়ে বর্জ্য অপসারণ অনেক কঠিন কাজ।
তিনি আরো বলেন, অনেকে ডাস্টবিনে বর্জ্য না ফেলে যেখানে সেখানে ফেলেন। এতে আমাদের কাজে বেশি সময় লেগে যায়। নাগরিকদের আরো আন্তরিক সহযোগিতা পেলে আমাদের দায়িত্ব পালন সহজ হবে।

inside post
আরো পড়ুন