গোমতীপাড়ের বাসিন্দাদের নির্ঘুম রাত
পানিবন্দি দক্ষিণ কুমিল্লার ১০লক্ষ মানুষ
অফিস রিপোর্টার।
কুমিল্লার গোমতীপাড়ের বাসিন্দাদের নির্ঘুম রাত কাটছে। তাদের আতংক- কখন নদীর বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করে। এদিকে পানিবন্দি অবস্থায় দিন কাটছে দক্ষিণ কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলার ১০লক্ষাধিক বাসিন্দার।
সূত্রমতে, বুধবার রাত থেকে বাড়ছিলো কুমিল্লার গোমতী নদীর পানি। আদর্শ সদর, বুড়িচং ব্রাহ্মণপাড়া, দেবিদ্বার, মুরাদনগর ও দাউদকান্দি উপজেলার গোমতীর তীরবর্তী মানুষজন ঘুমহীন রাত কাটিয়েছে। বৃহস্পতিবারও তাদের উৎকন্ঠা নিয়ে দিনটি পার হয়। এখন আতংক রাত নিয়ে। কখন বাঁধ ভেঙে যায়।
কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলার জালুয়াপাড়া, টিক্কারচর,চাঁনপুর,বানাশুয়া, বুড়িচং উপজেলার কামারখাড়া,ভান্তি, মিথিলাপুর, গোবিন্দপুর এলাকায় ঘুরে দেখা যায়, পানি গোমতীর তীর ছুঁই ছুঁই করছে। গোমতীর তীরবর্তী দুইপাড়ের মানুষজন নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে বেড়িবাঁধে অবস্থান করছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা। বুড়িচং উপজেলার খামারখাড়া ব্রিজের পশ্চিম পাশে সেচের জন্য তৈরি করা নালা দিয়ে গোমতী নদী থেকে পানি প্রবাহিত হচ্ছিলো। এ সময় শতাধিক স্থানীয় মানুষজনের সাথে অর্ধশত স্বেচ্ছাসেবী পানি নির্গতের জায়গাটিকে বাঁধ দিয়ে রাখার চেষ্টা চালায়। অপর দিকে গোমতীর পাড়ে বাঁধ মেরামত,খাবার বিতরণ ও উদ্ধার কাজে জেলা প্রশাসন,বিজিবি, ফায়ার সার্ভিস,বিএনপিসহ বিভিন্ন সংগঠনের তৎপরতা দেখা গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লা পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্বাবধায়ক প্রকৌশলী আবদুল লতিফ জানান, গোমতীর পানি বিপৎসীমার ১ দশমিক ০২ মিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিলো। যে কোন সময় পাড় ছাপিয়ে প্লাবিত হতে পারে গোমতী পাড়ের জনপদ।
এদিকে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম, নাঙ্গলকোট,লাকসাম ও মনোহরগঞ্জে ১০ লাখের বেশি মানুষ পানিবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। দুই তৃতীয়াংশ বাড়ি-ঘর ডুবে গেছে। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তাদের কাছে পর্যাপ্ত ত্রাণ সামগ্রী পৌছায়নি।
কুমিল্লা জেলা প্রশাসক খন্দকার মু.মুশফিকুর রহমান জানান, বন্যার্তদের জন্য শুকনো খাবার ও চিকিৎসা সামগ্রী পৌছানোর চেষ্টা চলছে। পাশাপাশি উদ্ধার তৎপরতার জন্য নৌবাহিনীকে চিঠি দেয়া হয়েছে।