চাঁদপুরে অর্ধশত গ্রামে উদযাপন হচ্ছে ঈদুল আযহা

inside post
চৌধুরী ইয়াসিন ইকরাম, চাঁদপুুর #  
 বিগত ৯৭ বছর ধরে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদরা দরবার শরীফের পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.) এর অনুসারীরা সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে প্রায় অর্ধশত গ্রামে আগাম ঈদ উদযাপন করে আসছে। এবারও তার ব্যতিক্রম নয়। দরবার শরীফসহ আশপাশের গ্রামগুলোতে আজ উদযাপন হচ্ছে ঈদুল আযহা।
শুক্রবার (৬ জুন) সকাল সাড়ে ৭টা থেকে দরবার শরীফের দুটি ঈদগাঁয়ে আসতে শুরু করে মুসল্লীরা। শিশু থেকে শুরু করে সব বয়সী লোকজন নতুন জামা কাপড় পড়ে ও সুগন্ধী মেখে ঈদের নামাজে অংশগ্রহণ করেন।
ঈদের নামাজের প্রথম জামায়াত সাদরা দরবার শরীফ মাঠে সকাল সাড়ে ৭ টায় অনষ্ঠিত হয়। এই জামায়াতে ঈমামিত করেন পীরজাদা মাওলানা মুফতি জাকারিয়া চৌধুরী।
এরপর দ্বিতীয় জামায়াত অনুষ্ঠিত হয় সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল (ডিগ্রি) মাদ্রাসা মাঠে সকাল ৮টায়। এই জামায়াতে ইমামতি করেন পীরজাদা মাওলানা মুফতি আরিফ চৌধুরী।
দুটি ঈদ জামায়াতের নামাজ শেষে মোনাজাতে ইমামগন বিশ্বের নির্যাতিত মুসলিমদের শান্তি ও সুরক্ষা এবং দেশের সুখ ও সমৃদ্ধি কামনা করেন।
নামাজ শেষে উপস্থিত মুসল্লিরা একে অপরের সাথে কুশল বিনিময়, কোলাকুলি ও করমর্দন করেন। কিছু সময় পরে দরবার শরীফ ও আশপাশের এলাকায় আল্লাহর নামে পশু কোরবানি করেন লোকজন।
গোপালগঞ্জে থেকে প্রথমবারের মতো চাঁদপুর দরবার শরীফে আগাম ঈদ করতে আসা মুসল্লী সাইফ বলেন, আমি সাদ্রা দরবার শরীফে এই প্রথম এই ঈদের নামাজ আদায় করেছি। আমার এখানে এসে ভালোই লাগছে। সামনেও ঈদ করতে আসতে চেষ্টা করবো।
ঈদ জামায়াতে আসা স্থানীয় যুবক ইমাম হোসেন বলেন, গতকাল (বৃহস্পতিবার) দিনটি ছিল সারা পৃথিবীর জন্য আরাফার দিন। যা বাংলাদেশের জন্য বা অন্য কোন দেশের জন্য আলাদা নয়। যেমন কেয়ামত সারা দুনিয়ায় একদিনেই হবে। সে হিসেবে গতকাল ছিল আরাফার দিন, আর আজ ঈদুল আযহার দিন। সেই কারণে আমরা ঈদ পালন করছি।
এদিকে পাশের উপজেলা ফরিদগঞ্জের টোর মুন্সীর হাট, সাচনমেঘ ও উভরামপুর গ্রামের একাধিক ঈদ জামায়াত অনুষ্ঠিত হয়।
এছাড়াও হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, শাহরাস্তি ও মতলব উত্তর উপজেলায় সকাল ৮টা থেকে ৯টার মধ্যে অনুসারীদের ঈদ জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
তবে এসব এলাকায় সরকার ঘোষিত নির্ধারিত তারিখে ঈদুল উদযাপন করেন এমন মুসল্লিদের সংখ্যাও কম নয়। তারা রীতিমত শনিবার (৭ জুন) পবিত্র ঈদুল আযহার নামাজ ও কোরবানি করবেন।
স্থানীয় তথ্য বলছে, ১৯২৮ সাল থেকে সাদ্রা দরবার শরীফের মরহুম পীর মাওলানা ইসহাক (রহ.) সৌদি আরবসহ অন্য আরব দেশগুলোর সঙ্গে মিল রেখে রোজা, ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা উদযাপনের প্রথা চালু করেন। এই রীতি তাঁর অনুসারী মুসল্লীরা চাঁদপুরসহ দেশের বিভিন্ন জেলায় একই সাথে পালন করে আসছেন। যার ফরে এখন সারাদেশেই এই পীরের অনুসারী সংখ্যা বাড়ছে।
চাঁদপুর জেলায় যেসব গ্রামে আগাম ঈদুল আযহা উদযাপন হবে সেগুলো হচ্ছে: হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বলাখাল, মনিহার, প্রতাপুর, বাসারা, ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, গল্লাক, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, উভারামপুর, উটতলি, মুন্সিরহাট, কাইতাড়া, মূলপাড়া, বদরপুর, আইটপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, পাইকপাড়া, নূরপুর, সাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা, গোবিন্দপুর, মতলব উপজেলার দশানী, মোহনপুর, পাঁচানি এবং কচুয়া ও শাহরাস্তি উপজেলাসহ অর্ধশতাধিক গ্রাম।
আরো পড়ুন