চাঙ্গিনীতে ব্যবসায়ী হত্যা; কাউন্সিলর ও তার স্ত্রীর হামলার ছবি ভাইরাল

আবু সুফিয়ান রাসেল।।

কুমিল্লা নগরীর ২৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর,মহানগর যুবলীগের সিনিয়র যুগ্ম আহবায়ক আলমগীর হোসেনসহ তার পরিবারের বিরুদ্ধে ব্যবসায়ী আক্তার হোসেনকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে। গত ১০ জুলাই নগরীর চাঙ্গিনীতে ওই হামলার ছবি ও ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। এতে কাউন্সিলর আলমগীর, তার স্ত্রী, ভাইসহ কয়েকজনকে হামলা করতে দেখা গেছে। তারা লাঠি, এসএস রড ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলায় অংশ নেয়। এই হত্যার ঘটনায় সদর দক্ষিণ থানায় কাউন্সিলর আলমগীরসহ ১০জনের নামে মামলা করেছেন নিহতের স্ত্রী। এদিকে আলোচনা উঠেছে হত্যার ঘটনায় মামলা ও ছবি ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পরেও কি আলমগীরের কাউন্সিলর পদ ও দলীয় পদ বহাল থাকবে?

নিহত ব্যবসায়ী আক্তার হোসেনের ভাই যুবলীগ নেতা আলাল হোসেন শাহজালাল বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে ঘুড়ি উৎসবের আয়োজন করি। উৎসবে কাউন্সিলরকে আমন্ত্রণ না করাতে সে পূর্ব পরিকল্পিত ভাবে এ হামলা করে। দীর্ঘ দশ বছর সে এ ওয়ার্ডে অনিয়ম করে আসছে। কেউ কথা বললে, হয়তো হামলা নয়তো মামলা করবে তার লোকজন। নতুন ভবন তৈরি করলে তাদের চাঁদা দিতে হয়। কাউন্সিলরের বড় ভাই গুলজার হোসেনের কনস্ট্রাকশন ও ছোট ভাই জাহাঙ্গীর হোসেনের টাইলস দোকান আছে। যদি তার ভাইদের দোকান থেকে বিল্ডিং এর মালামাল ক্রয় করে তাহলে চাঁদা দিতে হয় না। আবার তার আরেক ভাই ইঞ্জিনিয়ার তফাজ্জল হোসেন। যে কোন নতুন ভবনের ডিজাইন করাতে হলে তার মাধ্যমে করাতে হয়। তাকে অতিরিক্ত টাকা দিতে হয়।

কুমিল্লা সিটি কর্পোরেশন ৯ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র জমির উদ্দিন খান জম্পি বলেন, এ জাতীয় ঘটনায় আদালতের রায় আসার পূর্বে কোন সিদ্ধান্ত হয় না। যদি কোন জনপ্রতিনিধি হত্যা মামলার আসামি হন, তা যদি প্রমাণিত হয়। তবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জনপ্রতিনিধর পদ স্থগিত বা বাতিল করার ক্ষমতা রাখে।

মহানগর যুবলীগের আহবায়ক আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ সহিদ বলেন, এ ঘটনায় দুই রকম কথা শুনতে পেয়েছি। বাদী পক্ষ বলেছে, হত্যা করা হয়েছে। আসামি পক্ষ বলছে, তিনি স্ট্রোক করে মারা গেছেন। এখন মেডিকেল রিপোর্ট আসার পর বিষয়টি আদালত সিদ্ধান্ত নিবে। যদি কেউ হত্যাকা-ের সাথে জড়িত থাকে সেটার জন্য দল দায়ী না। কেন্দ্রীয় কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বহিষ্কার হতে পারেন। আর এটি রাজনৈতিক মারামারি না, এটি তাদের পারিবারিক ঝামেলা।

 

কুমিল্লা সদর দক্ষিণ থানার ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, ১০ জনের নামে মামলা হয়েছে। তিনজন আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। বাকী আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। আমরা মোবাইল ট্রেকিং করেছি। শহরসহ কয়েকটি স্থানে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে। যে তিনজন গ্রেফতার হয়েছে, তাদের মধ্যে জাহাঙ্গীর ও বিল্লালকে রিমান্ড দিয়েছে আদালত। আবুল হোসেনের বয়স বিবেচনায় কারাগারে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। রিমান্ড থেকে যে তথ্য পাওয়া যাবে, সে অনুযায়ী পরবর্তী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

উল্লেখ্য- নগরীর চাঙ্গিনী এলাকায় জমি ও রাজনৈতিক বিরোধে ব্যবসায়ী আক্তারকে হত্যা করা হয়। ১০জুলাই জুমার নামাজের পরে কয়েক শ’ লোকের সামনে মসজিদ থেকে টেনে হিঁচড়ে বের করে আক্তারকে কাউন্সিলরসহ তার পরিবারের সদস্যরা কুপিয়ে হত্যা করে বলে নিহতের পরিবারের সদস্যদের দাবি।

 

কাউন্সিলর আলমগীরের ত্রাসের রাজত্ব