চুরি ছিনতাইয়ে অতিষ্ঠ বিসিকের ব্যবসায়ী-শ্রমিকরা

 

কার্যালয়ে চুরিতে বিসিকের কর্তৃপক্ষের অভিযোগ, পুলিশ ফাঁড়ির দাবি

মহিউদ্দিন মোল্লা ।।
কুমিল্লা নগরীর ঠাকুরপাড়া,রানীর বাজার ও ধর্মপুর এলাকা সংলগ্ন কুমিল্লা বিসিক(বাংলাদেশ ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন)। সম্প্রতি মাস খানেক সময় ধরে এখানে চুরি ছিনতাই বেড়ে গেছে। এতে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছেন ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা। তারা কর্র্তৃপক্ষ জানালে বিসিক জেলা পুলিশ সুপার ও শিল্প পুলিশের নিকট চিঠি দিয়ে সহযোগিতা চায়। এদিকে বিসিক কার্যালয়ের মালামাল চুরি নিয়েও রবিবার কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানায় একটি অভিযোগ দেয়া হয়েছে। ব্যবসায়ীরা বিসিক এলাকায় পুলিশ ফাঁড়ি স্থাপনের দাবি জানিয়েছেন।

বিভিন্ন সূত্রমতে, কুমিল্লা বিসিকে ১৩৩টি প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে। এগুলোর অধিকাংশ খাদ্য পণ্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান। এখানে কর্মরত আছেন ১০হাজারের বেশি শ্রমিক। তার মধ্যে নারী শ্রমিক ৩৫০০জন। নারী শ্রমিকরা পথ চলতে বিসিক সংলগ্ন এলাকায় ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছে। শনিবার রাতে বিসিকের পুরাতন অফিসের ছাদ থেকে দুই হাজার লিটারের পানির ড্রাম চুরি হয়। এছাড়া জানালার গ্রিল কেটে নেয়া হয়। ১৬ অক্টোবর বিসিক এলাকায় অবস্থিত প্রয়াত দানবীর আলহাজ্ব নুরুল হকের প্রতিষ্ঠিত স্কাইল্যাব ফার্মাসিটিক্যালসের পুরাতন ভবনের মালামাল চুরির সময় দুই চোরকে আটক করা হয়। তাদেরকে একই মালিকানাধীন এবিএস ক্যাবলের প্রধান ফটকের ভেতরে এনে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছিল। এসময় দা-ছেনিসহ অস্ত্র হাতে ১০/১২ জনের একটি দল এসে ফ্যাক্টরির লোকজনের উপর হামলা চালায়। তারা সিকিউরিটি গার্ড আবু বকরকে কুপিয়ে আহত করে করে দুই চোরকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
এবিএস ক্যাবল কোম্পানির পরামর্শক আতিকুল ইসলাম বলেন, চুরির সময় দুই যুবককে আটকের আধাঘন্টার মধ্যেই সন্ত্রাসীরা এসে হামলা চালিয়ে ছিনিয়ে নিয়ে যায়। কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানা পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
এছাড়া বিসিকের পশ্চিম পাশে এস আলম মিলের নিকটের জলা বলে খ্যাত এলাকায় রাত নামলে শ্রমিক কর্মকর্তারা ছিনতাইয়ের শিকার হচ্ছেন। এখানে মাদক ব্যবসায়ী ও সেবীদের আখড়া বসে। সন্ধ্যায় ওই এলাকায় আতংক নেমে আসে।

সরেজমিন গিয়ে জানা গেছে,অনেকে মুখ খুলতে চান না। তবে তারা চুরি ছিনতাই নিয়ে উদ্বিগ্ন। তারা নিরাপত্তা বৃদ্ধির বিষয়ে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
বিছমিল্লাহ মুড়ি মিলের পরিচালক ইরফান মাহমুদ বলেন,এখানে চুরি ছিনতাইয়ের কারণে ব্যবসায়ীরা ভালো নেই। পুলিশ ফাঁড়ি হলে মালিক-শ্রমিক নির্বিঘ্নে চলাচল করতে পারতো।
বিসিক কুমিল্লার ডিজিএম এসএম আলমগীর কাদেরী বলেন,আমরা ব্যবসায়ীদের থেকে চুরির কিছু অভিযোগ পেয়েছি। সেই বিষয়ে জেলা পুলিশ সুপার ও শিল্প পুলিশ সুপারের নিকট চিঠি দিয়ে সহযোগিতা চেয়েছি। এছাড়া আমাদের কিছুৃ মালামাল চুরি হয়েছে,সেজন্য থানায় অভিযোগ দিয়েছি।
কুমিল্লা কোতয়ালী মডেল থানার ওসি আহমেদ সনজুন মোর্শেদ বলেন,আমরা বিভিন্ন সময়ে বিসিক এলাকায় গিয়ে টহল দিয়ে আসছি। এবিষয়ে আমরা নজরদারী বাড়ানো হবে।
শিল্প পুলিশ কুমিল্লার পুলিশ সুপার একেএম জহিরুল ইসলাম বলেন, ব্যবসায়ীদের কমিউনিটি পুলিশিংয়ের মাধ্যমে নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে আমরা পরামর্শ দিয়ে থাকি। এছাড়া বিসিকে জেলা পুলিশ ও আমরা আরো তৎপরতা বাড়াবো।