পরিবারের অজান্তে বিয়ে, পরদিন রহস্যজনক মৃত্যু

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
পরিবারের কাউকে না জানিয়ে তৃষাকে বিয়ে করে ইয়াছিন আরাফাত আবিদ। কিন্তু বিয়ের পরদিনই তার রহস্যজনক মৃত্যুকে ঘিরে জন্ম দিয়েছে নানা কাহিনীর। পুলিশ একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে নিহতের মরদেহ উদ্ধার করে মর্গে পাঠানোর পাশাপাশি নববধূ তৃষাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের।
শুক্রবার দুপুরে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে ময়না তদন্তের পর নিহতের মরদেহ হস্তান্তর করা হয় স্বজনদের কাছে। এর আগে বৃহস্পতিবার রাতে জেলার আশুগঞ্জ উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতাল থেকে পুলিশ মরদেহটি উদ্ধার করে। নিহত ইয়াসিন আরাফাত আবিদ (২১) ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের পশ্চিমপাইকপাড়া ট্যাঙ্কেরপাড় এলাকার হেলাল মিয়ার ছেলে।
আশুগঞ্জ থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার একটি বেসরকারি হাসপাতালে মরদেহের খবর পেয়ে পুলিশ পাঠানো হয়। সেখানে গিয়ে ইয়াছিন আরাফাত আবিদ নামের ওই যুবকের মরদেহ মেলে। হাসপাতালে মরদেহের সাথে তৃষা নামের এক তরুণী ছিলো। সে প্রাথমিক অবস্থায় পুলিশকে জানায়, আবিদের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক ছিলো। বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) তারা পরিবারের অজান্তে বিয়ে করে পরিচিত এক বাসায় আশ্রয়ে ছিলো। বৃহস্পতিবার সকালের পর তৃষা টয়লেট থেকে এসে দেখে আবিদ আত্মহত্যা করেছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক আবিদকে মৃত ঘোষণা করেন। পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে  সুরতহাল রিপোর্টের পর ময়না তদন্তের জন্য রাতেই আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এর পাশাপাশি জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নববধূ তৃষাকে আটক করা হয়।
এদিকে নিহত আবিদের চাচা জাকির হোসেন বলেন, আবিদ বুধবার (২২ ফেব্রুয়ারি) সকালে জন্ম নিবন্ধন সংশোধনের জন্য বাসা থেকে বের হয়ে যায়। এরপর আর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিলো না। পরদিন বৃহস্পতিবার খবর পাওয়া যায়, আশুগঞ্জের একটি হাসপাতালে আবিদ মারা গেছে। খবর পেয়ে আমরা সেখানে গিয়ে দেখি আবিদের মরদেহের পাশে এক মেয়ে বসা। মেয়েটি জানায় সে আবিদের স্ত্রী এবং মৃতাবস্থায় আবিদের লাশ সেই হাসপাতালে নিয়ে এসেছে। সে আরও জানায়, আবিদ ফাঁসি দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মেয়েটির কথা অনুযায়ী আমরা যে বাসায় তারা ছিল সেখানে যাই। সেখানে গিয়ে দেখি ফাঁসিতে ঝুলানোর মতো ঘরে কিছুই নেই, শুধু দুইটি জানালা ছিল।সেখানে আমরা জানতে পেরেছি, আরাফাতের বন্ধু সৌদি প্রবাসী আশুগঞ্জের লালপুর এলাকার নোমানের পরামর্শে ওই তরুণীসহ শরীফপুর এলাকার ইয়াছিন আরফাতকে সাথে নিয়ে আশুগঞ্জে হযরতের বাড়িতে উঠেছিল। আমরা ধারণা করছি আবিদকে পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করা হয়েছে।
আশুগঞ্জ থানার ওসি আজাদ রহমান জানান, মরদেহ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্যে হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করেছি। ময়না তদন্তের রিপোর্ট আসার পর কিভাবে তার মৃত্যু হয়েছে তা বলা যাবে। তৃষাকে আমরা জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে এসেছি।