পানির দরে শিক্ষকের ৩০বছর সেচ
মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লার দাউদকান্দি উপজেলার ইলিয়টগঞ্জ দক্ষিণ ইউনিয়ন। এখানের কয়েকটি গ্রামে ৩০ বছর ধরে ১৫০ বিঘা জমিতে নামমাত্র মূল্যে অনেকটা পানির দামে বোরো ধানের জমিতে সেচ দেয়া হচ্ছে। আদমপুর গ্রামের বাসিন্দা শিক্ষক মতিন সৈকত এই সেচের উদ্যোক্তা। তেলের দাম বাড়ে। বিদ্যুতের দাম বাড়ে। তবে তার সেচের মূল্য বাড়েনি ৩০বছরেও।
স্থানীয় সূত্র জানায়,অন্যত্র প্রতি বিঘা জমিতে প্রতি মৌসুমে সেচ দিতে দুই হাজার টাকা থেকে বাইশ শ’ টাকা ব্যয় করতে হয়। এদিকে এখানে বিঘা প্রতি দুইশ’ টাকা করে নেয়া হচ্ছে। এতে বিদ্যুতের দাম উঠে। তবে শ্রমিকসহ অন্যান্য খাতে মৌসুমে ৫০ হাজার টাকা লোকসান দিতে হয়। অন্যদের মতো মূল্য নিলে এখানে মৌসুমে লাভ হতো তিন লক্ষাধিক টাকা। এই সেচের উদ্যোক্তা মতিন সৈকত এলাকার একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক। শিক্ষকতার পরে জমিতে সেচ,মাছ চাষ, বিষমুক্ত ফসলের ফলানোর পরামর্শে সময় কাটে তার।
এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,শার্ট-প্যান্ট,জুতা মোজা পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যাত্রা করেছেন মতিন সৈকত। রাস্তায় চলতে তার নজরে পড়লে আইল ভেঙে পানি চলে যাচ্ছে। তিনি জুতা মোজা খুলে শার্টেও হাতা গুটিয়ে আইল মেরামতে নেমে পড়েন।
ভুর্তুকি দিয়ে স্বল্প মূল্যে সেচসহ অন্যান্য কাজ গুলোর বিষয়ে মতিন সৈকত বলেন, আমি কৃষকের সন্তান। আমার বাবা এই কার্যক্রম শুরু করেন। কৃষিকে এগিয়ে দিতে এই কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছি।
স্থানীয় কৃষক বিল্লাল হোসেন ও ঝন্টু দাস বলেন, মতিন সৈকতের কাজকে কেউ কেউ ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়ানো বলে মনে করেন। তবে কৃষি নিয়ে তার এসব উদ্যোগে এলাকার মানুষ অনেক উপকার পেয়েছে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো.মিজানুর রহমান বলেন, মতিন সৈকত কৃষি নিয়ে কাজ করায় শিক্ষিত তরুণরা কৃষিতে ঝুঁকছে। তিনি স্বল্প মূল্যে সেচ দিয়ে কৃষকদের রোরো চাষে উদ্বুদ্ধ করছেন। এই উদ্যোগের জন্য তাকে অভিবাদন জানাই।