বাঞ্ছারামপুরে দুই ছেলেসহ প্রবাসীর স্ত্রীকে জবাই করে হত্যা

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুরের শাহ আলম সৌদিআরব প্রবাসী। দুই ছেলে মাহিন এবং মহিনকে নিয়ে নিজ বাড়িতেই থাকতেন তার স্ত্রী জেসি আক্তার। ঘরে ঢুকে ওই প্রবাসীর স্ত্রী ও দুই সন্তানকে গলাকেটে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার (১৭ অক্টোবর) সকালে ঘটনাটি জানাজানি হয়। এর আগে সোমবার রাতে উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চর ছয়ানী গ্রামে ঘটে এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা।
নিহতেরা হলেন, বাঞ্ছারামপুর উপজেলার আইয়ুবপুর ইউনিয়নের চর ছয়ানী গ্রামের সৌদিআরব প্রবাসী শাহ আলমের স্ত্রী জেসি আক্তার (৩৫), তার বড় ছেলে মাহিন আলম (১৪) ও ছোট ছেলে মহিন আলম (৭)। পুলিশ নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে পাঠায় মর্গে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। ঘটনার রহস্য উদঘাটনে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছেন বলে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করেছেন।
স্থানীয় এলাকাবাসী এবং পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, বাড়ির মালিক চর ছয়ানী গ্রামের সুলতান হাজীর ছেলে শাহ আলম। তিনি সৌদিআরব প্রবাসী। বাড়িতে তার স্ত্রী জেসি আক্তার দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করতেন। মঙ্গলবার সকালে গৃহপরিচারিকা জেসমিন আক্তার (৩৫) এসে দেখেন বিল্ডিংয়ের গেইট লাগানো। অনেক ডাকাডাকি করলেও গেইট খুলছিল না। পরে গৃহকত্রীর জা খালেদা আক্তারের কাছ থেকে চাবি নিয়ে গেইট খুলে ঘরে প্রবেশ করে মেঝেতে মৃত দেহ দেখে চিৎকার শুরু করে। এসময় অন্যান্য লোকজন ভেতরে গিয়ে দেখেন ঘরের মেঝেতে ও বাথরুমে শাহ আলমের স্ত্রী ও দুই সন্তানের গলা কাটা রক্তাক্ত মরদেহ পড়ে আছে। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে নিহতদের মরদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রস্তুতের পর ময়না তদন্তের জন্য ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
প্রবাসী শাহ আলমের বাবা সুলতান সরকার বলেন, ‘যারা আমার পুত্রবধূ ও দুই নাতিকে গলা কেটে হত্য করে করেছে আমি তাদের ফাঁসি চাই।’
নিহত জেসির বাবা আবুল হোসেন বলেন, ‘আমার মেয়ের বিয়ের পর তার শ্বশুরবাড়ি এলাকার কারো সাথে ঝগড়া হয়েছে আমরা দেখিনাই, শুনিওনি। যারা এই ঘটনার সাথে জড়িত তাদেরকে আইনের আওতায় আনা জরুরি। আমার মেয়ে ও ২ নাতি  হত্যার বিচার চাই।’
প্রতিবেশী শফিকুল ইসলাম বলেন,  ‘এটা একটা নজিরবিহীন ঘটনা। এই ঘটনায় দোষীদের আইনের আওতায় এনে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক।
স্থানীয় আইয়ুবপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো.নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এটি একটি জঘন্য এবং হৃদয়বিদারক ঘটনা। অবুঝ দুটি শিশু এবং একজন নারীকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। আমরা এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য দ্রুত উন্মোচনসহ খুনিদের আইনের আওতায় দেখতে চাই এবং তাদের দৃষ্টান্তমূলক বিচার দাবি করছি।’
বাঞ্ছারামপুর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি) মোহাম্মদ নূরে আলম ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘নিহতদের শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে সুরতহালের পর ময়না তদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।’
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (নবীনগর সার্কেল) সিরাজুল ইসলাম বলেন, এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ধার করতে পুলিশের একাধিক টিম কাজ করছে।’