বানভাসিদের নিরাপত্তায় চাঁদপুর নৌ পুলিশের নিরলস প্রচেষ্টা

এইচ এম সিরাজ।।
দেশের পূূর্বাঞ্চলে স্মরণকালের বন্যায় আক্রান্তদের সহায়তায় নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছে চাঁদপুর নৌ পুলিশের সদস্যরা। গত ২৩ আগস্ট থেকে গোমতীপাড়ের কুমিল্লা জেলার বুড়িচং উপজেলাসহ বিভিন্ন এলাকায় চাঁদপুর নৌ পুলিশ বানভাসিদের উদ্ধার, পুনর্বাসন, সহায়তায় মানবিকতার দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে।
টানা ভারী বর্ষণ, উজান (ভারতের ত্রিপুরা) থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলের পানির প্রভাবে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যা কবলিত হয় গোমতীপাড়ের কুমিল্লাসহ দেশের পূর্বাঞ্চলের কয়েকটি জেলা। এরই মাঝে পানির প্রবল তোড়ে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়া এলাকায় গোমতী নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পরিস্থিতিকে আরো নাজুক করে তুলে। বন্যার ফলে কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন এলাকার মানুষ ঘরবাড়ি ছেড়ে আশ্রয় নেয় বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে। এহেন নাজুক পরিস্থিতিতে বাংলাদেশ নৌ পুলিশ চাঁদপুর সার্কেলের পক্ষ থেকে বন্যা কবলিত এলাকার মানুষদের উদ্ধার, পুনর্বাসন, সহায়তায় এগিয়ে আসে নৌ পুলিশ সদস্যরা। বন্যা কবলিতদের দ্রুত উদ্ধার ও সহায়তায় প্রতিটি থানা ও পুলিশ ফাঁড়িতে গঠন করা হয় কুইক রেসপন্স টিম। বানভাসিদের মাঝে শুকনো খাবার, পানি বিশুদ্ধকরণ ট্যাবলেট, খাবার স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় ওষুধ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করে।
এদিকে কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক তদারকির জন্য একজন পুলিশ কর্মকর্তার (মো. ইমতিয়াজ আহমেদ পিপিএম,  সহকারি পুলিশ সুপার) নেতৃত্বে ১৫ সদস্য বিশিষ্ট ‘বন্যা মনিটরিং সেল’ গঠন করা হয়। চাঁদপুর নৌ পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি, মোহাম্মদ কামরুজ্জামান বন্যাদুর্গত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং বানভাসি মানুষের সার্বিক খোঁজখবর নেন। তিনি ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন। অপরদিকে বুড়িচং উপজেলার বুড়বুড়িয়ায় গোমতি নদীর বাঁধ ভাঙ্গনের ফলে দুর্গত এলাকায় চাঁদপুর অঞ্চলের নৌ টহল পুলিশ দল দায়িত্ব পালন করে। বুড়িচং থানার পুলিশ পরিদর্শকের নিকট  চাঁদপুর নৌ পুলিশের ১০ জন এবং বুড়বুড়িয়া বাঁধ ভাঙ্গা এলাকায় নৌ পুলিশের স্পিড বোটসহ পাঁচজন বাঁধ ভাঙ্গার দিন হতে দায়িত্ব পালন করেন। টানা এক সপ্তাহ যাবৎ কুমিল্লার বন্যা কবলিত এলাকায় বাংলাদেশ নৌ পুলিশ চাঁদপুর সার্কেলের সহকারি পুলিশ সুপার ইমতিয়াজ আহমেদের নেতৃত্বে দুর্গত এলাকায় চুরি-ডাকাতি রোধসহ আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির তদারকির দায়িত্বও পালন করেন। বন্যা কবলিত মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে নিরাপত্তা দিতে নিরলসভাবে কাজ করে যাওয়া চাঁদপুর নৌ পুলিশের সদস্যদের এই মহতি উদ্যোগে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন স্থানীয় জনগণ।
কুমিল্লার বুড়িচং উপজেলার বন্যা পরিস্থিতির সার্বিক তদারকির জন্য গঠিত ১৫ সদস্যের ‘বন্যা মনিটরিং সেল’র প্রধান সহকারি পুলিশ সুপার মো. ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, ‘বন্যার শুরু থেকে আজ অবধি বানভাসিদের দ্রুত উদ্ধার, পুনর্বাসন, সহায়তা প্রদানসহ এলাকার আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে আমরা কাজ করছি। মানুষের জীবনযাত্রা স্বাভাবিক অবস্থায় ফেরা নাগাদ আমাদের এই প্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে।’