মাঠে সুবাস ছড়াচ্ছে জামাই পাগল
আল আমিন কিবরিয়া।
সুগন্ধি চালের ধান চিকন কুটি। কুমিল্লার প্রান্তিক গ্রামাঞ্চলের লোকেরা চিনেন জামাই পাগল ধান নামে। এক সময় দেবিদ্বারের কৃষকরা চাষ করতেন শতশত বিঘা জমিতে। বর্তমান আধুনিকতায় উচ্চ ফলনশীল জাতের ধান উদ্ভাবন হওয়ার পর প্রায় হারিয়ে যাচ্ছে দেশীয় জাতের সুগন্ধী চালের ধানটি।
দেবিদ্বার উপজেলার উজানীকান্দি গ্রাম। এ গ্রামের সৌখিন কৃষক আবুল কাশেম। এক প্রকার শখেই তিনি তার ১২ শতাংশ জমিতে চিকন কুটি ধানের চারা রোপণ করেছেন আড়াই মাস আগে। তিনি জানান, স্থানীয় কৃষি বীজ-ডিলারের থেকে এবছর ধানের বীজ সংগ্রহ করেছে সে। সঠিক পরিচর্যা ও যত্ন করায় ফলন ভালো হয়েছে। লাভ হবে কয়েক গুণ। ফসল কেটে ধান ঘরে তুলবে আজ বা পরশু। ১২ শতাংশ জমিতে ধান ফলাতে এবার তার খরচ হয়েছে ৬০০০ টাকা।
কৃষক আব্দুল আউয়ালসহ আরো তিনজন বলেন, এক সময় উপজেলাজুড়ে কালো জিরা, চিনিগুড়া ও তুলসীমালাসহ এই জাতের বেশকিছু ধানের চাষ হতো ব্যাপক। স্থানীয়রা এই চিকন চালের ধানকে চেনেন জামাই ধান বা কুটি ধান নামে। সুগন্ধী ও ছোট হওয়ায় ব্যবহার হয় পোলাও, বিরিয়ানি ও পায়েস রান্নায়। বিশেষ করে উৎসব ও অনুষ্ঠানে অতিথি আপ্যায়নে বেশি ব্যবহৃত। জামাই আপ্যায়নে এই ধানের চাল ব্যবহার বহুকাল আগে থেকে।
দেবিদ্বার উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা বানিন রায় বলেন, সুগন্ধি চালের ধান চিকন কুটি ও কালো জিরাসহ রাজামন ধান। বোরো মৌসুমে দেবিদ্বারে চাষ করে অনেক প্রান্তিক কৃষক। ধানটি দেশীয় জাতের৷ তবে কৃষকরা এই ধান চাষ করে নিজেরা খাওয়ার জন্য। গুণগত মান ভালো হওয়ায় এই সুগন্ধি চালের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। আমার কাছে কেউ এই ধান চাষের বিষয়ে পরামর্শ চাইলে আমি সর্বোচ্চ সহযোগিতা করব।