মাতৃভাষা দিবসে লালমাই পাহাড়ে ককবরক মাতৃভাষা স্কুল
মহিউদ্দিন মোল্লা ।।
কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার সালমানপুর লালমাই পাহাড় এলাকায় বসবাসরত ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের শিশুদের তাদের মাতৃভাষায় কথা বলা ও লেখা শিখানোর উদ্দেশ্য ককবরক মাতৃভাষা স্কুলের নির্মাণ কাজ শুরু করা হয়েছে।
সোমবার মাতৃভাষা দিবসে নির্মাণ কাজের সূচনা করেন কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুভাশিস ঘোষ। এসময় উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু, সহকারী কমিশনার(ভূমি) আবদুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে সকালে শহীদ বেদীতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। মার্চ মাসে এ স্কুলটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান উদ্বোধন করবেন।
সূত্রমতে, ত্রিপুরা পল্লীতে একশতক খাস জমি ককবরক মাতৃভাষা স্কুল প্রতিষ্ঠা করার জন্য নির্বাচন করা হয়েছে। এখানে প্রাথমিকভাবে এককক্ষ বিশিষ্ট একটি ক্লাস রুম নির্মাণ করা হবে। সেখানে ২৫-৩০ জন শিশু ককবরক ভাষা শেখার সুযোগ পাবে। স্কুল প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি উপজেলা প্রশাসনের পৃষ্ঠপোষকতায় ককবরক ভাষা শেখার বই প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে একজন অবসর প্রাপ্ত সরকারি কর্মকর্তা ও ককবরক ভাষার কবিকে এই স্কুলের শিক্ষক হিসেবে স্বেচ্ছায় দায়িত্বপালনের আগ্রহ প্রকাশ করেছেন।
স্থানীয় ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের নেতৃবৃন্দ বলেন, তাদের মাতৃভাষা ককবরক পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য উপজেলা প্রশাসন উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তাদের এই উদ্যোগের জন্য আমরা কৃতজ্ঞতা জানাই।
সদর দক্ষিণ উপজেলার উপজেলা নির্বাহী অফিসার শুভাশিস ঘোষ বলেন, কুমিল্লার সদর দক্ষিণ উপজেলার সালমানপুর এবং জামুড়া এলাকায় ৪৫-৫০ টি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের লোক বসবাস করে। কালের বিবর্তনে ত্রিপুরা অধ্যুষিত এই এলাকায় এখন এই সম্প্রদায়ের ভাষা ও সংস্কৃতি প্রায় বিলুপ্তির পথে। তাদের জন্য জেলা প্রশাসক মহোদয়ের নির্দেশনায় স্কুল নির্মাণের উদ্যোগ নেয়া হয়।
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ কামরুল হাসান বলেন, ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের মাতৃভাষা ককবরক ভাষা শেখার লিখিত কোন বই এমুহূর্তে নেই। ককবরক ভাষা শেখার বই প্রকাশের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। তাদের মাতৃভাষা ককবরক পরবর্তী প্রজন্মের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ার জন্য আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। স্কুলের কাজ মার্চে শেষ হবে।