মেয়র- কাউন্সিলর আত্মগোপনে থাকায় ব্যাহত নাগরিক পরিষেবা

মহসীন কবির।।

কোনো ধরনের মামলা না থাকলেও ১০ দিন ধরে আত্মগোপনে রয়েছেন কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের (কুসিক) মেয়র ডা. তাহসীন বাহার সূচনা। তিনি এখন কোথায় আছেন এ বিষয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কেউ কিছু বলতে পারছেন না। তবে অসমর্থিত সূত্র জানায়, তিনি দেশে একটি বাহিনীর হেফাজতে রয়েছেন। আওয়ামী লীগ সমর্থিত ২৪ কাউন্সিলেরও দেখা মিলছে না। মূলত গত ০৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতনের পর থেকেই এসব জনপ্রতিনিধি গা ঢাকা দিয়েছেন বলে জানা গেছে। এতে করে বিঘ্নিত হচ্ছে নাগরিক সেবা। স্থবির রয়েছে প্রকল্পের কাজ। অভিভাবকহীন নগরীর সব কিছুই চলছে এলোমেলো। কারণ গত কয়েকদিনে অধিকাংশ ডাস্টবিন ও ড্রেন নিয়মিত পরিষ্কার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ উঠেছে। কুসিক কার্যালয়ে গিয়ে দেখা গেছে, মেয়রের কার্যালয় ও অধিকাংশ কাউন্সিলরদের কক্ষে তালা ঝুলছে। অবশ্য সাধারণ ও সংরক্ষিত ৩৬ কাউন্সিলরের মধ্যে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত ১২ কাউন্সিলর নগরভবনে নিয়মিত আসা-যাওয়া করছেন বলে জানা গেছে। এক্ষেত্রে তাদের মধ্যে ফুরফুরে ভাব দেখা গেছে। সিটি করপোরেশনের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা বিরাজ করছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর কুসিকের কার্যক্রমে কিছুটা ধীরগতি লক্ষ্য করা গেছে। কারণ মেয়র-কাউন্সিলর না থাকায় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে সমন্বয় হচ্ছে না। সভা আহ্বান করেও কাউন্সিলরদের সাথে বসতে পারেননি প্রধান নির্বাহী। মেয়রের সই করার সুযোগ না থাকায় বন্ধ রয়েছে টেন্ডার প্রক্রিয়া ও প্রকিউরমেন্ট। নতুন করে উন্নয়ন প্রকল্পের কাজেও হাত দেয়া যাচ্ছে না। ট্রেড লাইসেন্স শাখায়ও প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে। কারণ এসব ক্ষেত্রে মেয়রের অনুমোদনের ব্যাপার রয়েছে। অপরদিকে কাউন্সিলর কার্যালয় বন্ধ পেয়ে জন্ম ও মৃত্যু সনদের জন্য নগরভবনে ছুটে আসছেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ। তাদের সামাল দিতেও হিমশিম খাচ্ছেন কর্মকর্তা-কর্মচারীরা।
৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর একরামুল হক বাবু বলেন, হয়তো নিজেদের অপরাধী মনে করছেন, তাই পলাতক রয়েছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত কাউন্সিলররা। তিনি মেয়রের ব্যাপারে মন্তব্য করতে অস্বীকৃতি জানান।
সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) কুমিল্লার সাবেক সভাপতি শাহ মোহাম্মদ আলমগীর খান বলেন, নাগরিক সেবা নিশ্চিত করতে জনপ্রতিনিধিদের নিরাপত্তা দেয়া জরুরি। তবে কেউ দোষী হলে আইনকে নিজস্ব গতিতে চলতে দেয়া উচিত।
এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে কুসিক মেয়র তাহসীন বাহার সূচনার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
কুসিকের প্রধান নির্বাহী মো. ছামছুল আলম বলেন, একটি প্রেক্ষাপটে গত কয়েক দিন দফতরে আসেননি মেয়র। তবে দৈনন্দিন নিয়মিত কার্যক্রম স্বাভাবিকভাবেই চলছে বলে তার দাবি। অবশ্য টেন্ডার প্রক্রিয়া ও নতুন প্রকল্পের কাজ আপাতত স্থগিত রয়েছে বলে তিনি জানান।