যে ১০ শর্তে দেশে চালু হচ্ছে খেলাধুলা
অনলাইন ডেস্ক।।
দেশের করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলেও স্বাস্থ্যবিধি মেনে দশ শর্তে খেলাধুলা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রাম শুরুর অনুমতি দিয়েছে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সাথে পরামর্শ করে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সোমবার (১০ আগস্ট) সচিবালয়ে এ সংক্রান্ত এক জরুরি সভা শেষে যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল এ সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, বিশ্বের অনেক দেশে করোনা সংক্রমণ কমে যাওয়ার প্রেক্ষিতে স্বাস্থ্যবিধি মেনে খেলাধুলা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম শুরু করেছে। আমাদের দেশেও করোনা সংক্রমণের হার নিম্নমুখী। এ অবস্থায় খেলাধুলা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালুর বিষয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মতামত চেয়ে পত্র প্রেরণ করা হয়।
তাদের চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় দশ শর্তে সীমিত আকারে খেলাধুলা আয়োজন ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালুর বিষয়ে মতামত দিয়েছে বলে জানিয়েছেন ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী।
শর্তগুলো হলো:
ক. খেলাধুলা শুরুর আগে খেলার মাঠ ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালুর পূর্বে মহামারি প্রতিরোধক সরঞ্জাম যেমন মাস্ক, গ্লাভস, জীবাণুনাশক এবং নন-কন্ট্যাক্ট ইনফ্রারেড থার্মোমিটার সংরক্ষণ করে সংক্রমণ প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণ কাজের পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। বিষয়টি তদারকি ও বাস্তবায়নের দায়িত্বের জন্য একজনকে নির্দিষ্ট করা এবং সংশ্লিষ্ট কর্মীদের স্বাস্থ্যবিধি প্রশিক্ষণ দিতে হবে।
খ. সীমিত আকারে প্রশিক্ষণ কার্যক্রম ও খেলাধুলার আয়োজন করা।
গ. খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক, ম্যানেজমেন্ট কমিটি এবং খেলাধুলা সংশ্লিষ্ট সবার নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখতে হবে। ক্যাম্প শুরুর পূর্বে প্রয়োজনবোধে সবার কোভিড-১৯ পরীক্ষা করা যেতে পারে।
ঘ. খেলোয়াড়দের প্রশিক্ষণকালীন ক্যাম্পে অবস্থানের সময় স্বাস্থ্যবিধি মেনে থাকার ব্যবস্থা ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারে পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের ব্যবস্থা করতে হবে। শারীরিক দূরত্ব বজার রেখে খাবার গ্রহণ ও খাবারের থালা-বাসন পরিষ্কার ও জীনাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে। সম্ভব হলে ডিসপোজেবল প্লেট ব্যবহার করাই ভালো। ধূমপান নিরুৎসাহিত করতে হবে। খেলোয়াড়দের ঘুম, বিশ্রাম এবং মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি নজর রাখতে হবে। ডিজিটাল/অনলাইনের মাধ্যমে পরিবার ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে যোগাযোগের ব্যবস্থা রাখা যেতে পারে।
ঙ. খেলা ও প্রশিক্ষণের সময় ব্যক্তিগত পানির বোতল ও তোয়ালে ব্যবহার করতে হবে। ব্যক্তিগত সরঞ্জাম এবং জামা-কাপড় নিজস্ব ব্যাগে রাখতে হবে। টিস্যু, রুমাল বা অন্যান্য ব্যবহৃত উপকরণ যেমন প্লাস্টার, ব্যান্ডেজ ইত্যাদি তাৎক্ষণিকভাবে উপযুক্ত পাত্রে (মুখবন্ধ ময়লার পাত্র) ফেলে দিতে হবে।
চ. অধিক জনসমাগম না করে সীমিত আকারে খেলাধুলার আয়োজন করা যেতে পারে। মাঠে প্রবেশ ও বাহির হওয়ার সময় দর্শকদের সারিবদ্ধভাবে পরস্পর হতে এক মিটারেরও বেশি দূরত্ব বজায় রাখতে হবে। মাঠে প্রবেশের পর নির্দিষ্ট দূরত্ব (১ মিটার) বজায় রেখে বসার ব্যবস্থা করতে হবে। পাশাপাশি দুইজন দর্শকের মাঝে এক সিট খালি রাখতে হবে।
ছ. খেলার মাঠে প্রবেশ পথে খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক, ম্যানেজমেন্ট কমিটি এবং বহিরাগত দর্শনার্থীদের (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে) শরীরের তাপমাত্রা মাপার ব্যবস্থা রাখতে হবে। এক্ষেত্রে যাদের শরীরের তাপমাত্রা ৯৮.৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি হবে, তাদের মাঠে প্রবেশ নিষিদ্ধ করে নিকটস্থ স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে পাঠাতে হবে।
জ. খেলোয়াড়, প্রশিক্ষক/কোচ এবং ম্যানেজমেন্ট কমিটির মধ্যে কোভিড-১৯ এর সন্দেহভাজন কোনো রোগী থাকলে তাৎক্ষিণকভাবে আইসোলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে।
ঝ. খেলার মাঠের আবর্জনা প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে এবং আবর্জনা সংরক্ষণকারী পাত্র প্রতিদিন জীবাণুমুক্ত করতে হবে।
ঞ. স্টেডিয়ামে আগত সবাইকে স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন করার জন্য সহজে দৃশ্যমান হয় এমন স্থানে বিলবোর্ড, রেডিও, ভিডিও ও পোস্টারের মাধ্যমে সচেতনতামূলক বক্তব্য প্রচার করার ব্যবস্থা করতে হবে।