রহস্যময় ১৬টি নতুন কবরের সন্ধান!

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট আবেদন, ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি
প্রতিনিধি ।।
কুমিল্লার দেবিদ্বারে ১৬টি নতুন কবরের সন্ধান মিলেছে! বাড়ি ও আশ পাশের লোজন এবং স্থানীয়দের চোখে এ নতুন কবরের দৃশ্য চমকে দেয়। কবরবাসী কারা ? কখন কে কে মারা গেলেন ? জানাযা কারা দিলেন ? এ নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে কৌতুহলের শেষ নেই। স্থানীয় রমিজ মোল্লা নামে এক ব্যক্তি ১৬টি নতুন কবর এবং কবরের ভেতরের মানুষগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। ওই আবেদনের প্রেক্ষিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা উপজেলা সহকারি কমিশনার ভূমিকে আহবায়ক, পৌর উপ-সহকারি ভূমি কর্মকর্তা মোঃ আলাউদ্দিন ও উপজেলা ভূমি অফিসের সার্ভেয়ারকে সদস্য করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেন। ঘটনাটি ঘটে কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর সদরের প্রাণকেন্দ্রের নিউমার্কেটস্থ মোল্লা বাড়ির পুকুর পাড়ের গোরস্তানের পাশে। সোমবার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।
নিউমার্কেটের প্রবীণ ব্যবসায়ী হাজী আব্দুল লতিফ মোল্লা বলেন, আমি প্রায় ৪০ বছরেরও আগে দেবিদ্বার নিউমার্কট মোল্লা বাড়ির পুকুর পাড়ে বাঁশঝাড়ের জমি কিনে মার্কেট তৈরি করে ব্যবসা করে আসছি। আমার মার্কেটের পাশে হঠাৎ এতগুলো নতুন কবর দেখে শঙ্কিত হয়ে পড়ি। কারা মারা গেলেন, কারা কবর দিলেন? জানাযা, মৃত্যুর বিষয়ে প্রচার- প্রচারণার সংবাদও পাইনি।
দেবিদ্বার মোল্লা বাড়ির রমিজ উদ্দিন মোল্লা জানান, আমার পূর্ব পুরুষদের কবরস্থান যৌথ মালিকানাধীন সম্পত্তির উপর নির্দিষ্ট করা রয়েছে। গোরস্তানের পাশে আমার প্রায় ২ শতাংশ জমি রয়েছে। উক্ত জমি আর এস, সিএস-এ পুকুরপাড় উল্লেখ রয়েছে। এ জমির উপড়ে থাকা বাঁশঝারটি প্রায় ৫০ বছর পূর্বে কেটে পরিস্কার করে রেখেছি। তাছাড়া পূর্বে এখানে কোন কবর ছিলনা। এরই মধ্যে কে বা কারা আমার জমির উপরের সীমানা প্রাচীর ভেঙ্গে ওই জমিতে সারিবদ্ধ ভাবে ১৬টি নতুন কবর তৈরি করে রেখেছে। আমার ৬৫ বছর বয়সে গোরস্তানের বাইরে আমার জমিতে কাউকে কবর দিতে দেখি নাই, বাড়ির মুরুব্বিরাও দেখেননি। নতুন কবর এবং কবরের ভেতরের মানুষগুলোর পরিচয় নিশ্চিত করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত আবেদন করেছি।
এ ব্যাপারে মোল্লা বাড়ির নজরুল ইসলাম মোল্লা জানান ভিন্ন কথা, ১৮ শতাংশ জমির উপর এ গোরস্তান দু’শত বছরের পুরনো। এখানে নতুন কোন কবর নেই, আমার পৈর দাদা-দাদী, বড় বাবা-বড়’মা, চাচা-চাচী, জেঠা-জেঠিসহ স্বজন ও বাড়ির লোকজনের কবর রয়েছে। আমরা পূর্বপুরুষ ও নারীদের কবরগুলো মাটি দিয়ে উঁচু করে রেখেছি মাত্র।
দেবিদ্বার থানার অফিসার ইনচার্জ কমল কৃষ্ণ ধর জানান, ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। অভিজ্ঞতা হল দেবিদ্বারের কেউ কবরের জায়গা বিক্রি করতে প্রস্তুত, আবার কেউ গায়েবি কবর সৃজন করেছেন। এ কবরের রহস্য উদঘাটনে ইউএনও মহোদয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছেন।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নিগার সুলতানা বলেন, বিষয়টা স্পর্শকাতর, তাই এসিল্যান্ডকে আহবায়ক করে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছি। রিপোর্ট পেলেই কবর সঠিক নাকি গায়েবি কবর তা নিশ্চিত হওয়া যাবে।