লালমাই পাহাড়ের অর্গানিক চা যাবে ইংল্যান্ড জাপান

মহিউদ্দিন মোল্লা ।।
কুমিল্লার লালমাই পাহাড়ে জৈব সার দিয়ে বিষমুক্তভাবে উৎপাদন করা হচ্ছে চা। এই বাগানের চা পাতা রপ্তানির পরিকল্পনার কথা জানালেন উদ্যোক্তা তারিকুল ইসলাম মজুমদার। রপ্তানি হতে পারে ইংল্যান্ড ও জাপান।
সদর দক্ষিণ উপজেলার বড় ধর্মপুর এলাকায় গিয়ে দেখা যায়,পাশাপাশি দুইটি মাঝারি উচ্চতার পাহাড়। পাহাড়ের উপরে ও ঢালুতে চা গাছের সারি। তালপাকা ভাদ্র মাসের গরমেও ¯স্নিগ্ধতা ছড়াচ্ছে সবুজ চা গাছ। পাহাড়ের উপরে বসানো হয়েছে পানির ট্যাংকি। সেখান থেকে পাইপ দিয়ে পানি বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হয়। চা বাগানে শেড ট্রি হিসেবে কড়ই ও সজনে গাছ লাগানো হয়েছে। কয়েকজন নারী পুরুষ চা পাতা সংগ্রহ করছেন।


উদ্যোক্তা তারিকুল ইসলাম মজুমদার জানান, তার খুব ইচ্ছে ছিলো চা বাগান ক্রয় করার। সেটা আর ব্যাটে বলে হয়ে উঠেনি। তার এক বন্ধু মৌলভীবাজার কমলগঞ্জ উপজেলার খাসিয়া সম্প্রদায়ের একটি পুঞ্জীর মন্ত্রী জিডি সান। তিনি একদিন উদ্যোক্তার লালমাই পাহাড়ের ভূমি ঘুরে দেখেন। জিডি সান মতামত দেন এখানে চা চাষ সম্ভব। তার পরামর্শে তিনি ২০২১সালের মার্চে তিন হাজার চা গাছ লাগান। এগুলোর গ্রোথ ভালো দেখে তিন মাস পর আরো ছয় হাজার চারা লাগান। ২০২২সালে চা পাতা সংগ্রহ শুরু করেন। তিনি আরো জানান, এক একর পাহাড়ে তার বাগান। এখানে তার এক সাথে সাড়ে ছয় একর ভূমি আছে। তিনি পুরো ভূমিতে চা বাগান করবেন বলে পরিকল্পনা নিয়েছেন। এখন হাতে চা পাতা প্রস্তুত করছেন। চা পাতা প্রস্তুতের মেশিন সহসা স্থাপন করবেন।


তারিকুল ইসলাম মজুমদার বলেন, তার পরিকল্পনা রয়েছে বিষমুক্ত উপায়ে তৈরি চা পাতা তিনি রপ্তানি করবেন। ইংল্যান্ড ও জাপানের কিছু ব্যবসায়ীর সাথে তার ভালো যোগাযোগ আছে। উৎপাদনের পরিমাণ ও মান বাড়িয়ে ২০২৫সালে তিনি চা রপ্তানি করতে পারবেন বলে আশা করছেন।
স্থানীয় উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা এম এম শাহারিয়ার ভূঁইয়া বলেন, লালমাই পাহাড়ে প্রথমবারের মতো চা চাষ হয়েছে। এছাড়া এখানে জৈব সার ব্যবহার করা হচ্ছে। তিনি ভালো ফলন পাচ্ছেন। এদিকে তার চা বাগানের পাশে কাজু বাদাম ও কফির চাষও হয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর কুমিল্লার উপ-পরিচালক মো.আইউব মাহমুদ বলেন, তারিকুল ইসলাম মজুমদার একজন উদ্যোমী কৃষক। তাকে আমরা চা,কফি ও কাজু বাদাম চাষে পরামর্শ ও সহযোগিতা দিয়ে যাচ্ছি। তার সফলতা দেখে অন্যরাও চা চাষে আগ্রহী হবেন বলে আশা করছি।
বাংলাদেশ চা বোর্ডের চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল মো.আশরাফুল ইসলাম বলেন, গত মাসে ব্যক্তিগতভাবে লালমাই পাহাড়ের বাগানটি পরিদর্শন করেছি। নতুন জায়গায় চা বাগান করার উদ্যোগ ব্যতিক্রম। তবে সেখানের মাটি,আবহাওয়া পরীক্ষা করে আমরা মন্তব্য করতে পারবো।