হারিয়ে যাচ্ছে গ্রামের মাটির ঘর

হাসিবুল ইসলাম সজিব।।
এঁটেল বা আঠালো মাটির, দেয়ালে কাট বা বাঁশের শিলিং,ওপর খর বা টিনের ছাউনি দিয়ে তৈরি হতো মাটির ঘর। বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন গৃহিণীরা। সময়ের বিবর্তনে ও আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রাম বাংলা থেকে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে এসব মাটির তৈরি ঘর। যা দেখা মিলতো কুমিল্লা জেলার প্রতিটি গ্রামেই।
জানা যায়, গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যের অন্যতম নিদর্শন ছিল মাটির তৈরি ঘর। এঁটেল বা আঠালো মাটির কাঁদায় পরিণত করে ২-৩ ফুট চওড়া করে এসব ঘরের দেয়াল বা ব্যাট তৈরি করা হয়। যার উচ্চতা ১০-১৫ ফুট। দেয়ালে কাট বা বাঁশের শিলিং তৈরি করে তার ওপর খর বা টিনের ছাউনি দেওয়া হয় এ সব ঘর । গৃহিনীরা বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মাটির দেয়ালে বিভিন্ন রকমের আল্পনা এঁকে ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করতেন কিন্তু প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বর্ষা মৌসুমে মাটির বাড়ি ঘরের ক্ষতি হয় এবং মানুষের আর্থিক অবস্থার পরিবর্তন হওয়ায় বর্তমান সময়ে গ্রামের মানুষরা ইটের বাড়ি নির্মাণের আগ্রহী হচ্ছেন।
বিজয়পুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মোঃ মমিনুল ইসলাম মজুমদার জানান,বেশি দিন আগের কথা নয়, কুমিল্লার প্রতিটি গ্রামে নজরে জড়তো এই মাটির বাড়ি-ঘর। এক সময় বিভিন্ন গ্রামের অনেক বিত্তবানও মাটির দ্বিতল বাড়ি তৈরি করতেন। তারা অনেক অর্থ ব্যয় করে মজবুত মাটির দ্বিতল বাড়ি তৈরি করতেন। যা এখনও কিছু কিছু গ্রামে চোখে পড়ে। এখন গ্রামের মানুষের অনেক উন্নতি হয়েছে। বেশি ভাগ মানুষই এখন প্রবাসী। বর্ষাকালে মাটির ঘরের ক্ষয় ক্ষতি হয়ায় রড সিমেন্ট দিয়ে দালান কোটা তৈরি করে বসবাস করছে।
আদর্শ সদর উপজেলার মানিক মিয়া জানান, এক সময়ে আসেপাশে সকল গ্রামে মাটির তৈরি ঘরে বসবাস করতো মানুষজন। আধুনিকতার সাথে তাল মিলিয়ে মানুষ এখন রড সিমেন্ট দিয়ে দালান কোটা তৈরি করে বসবাস করছে। আমাদের মাঝে থেকে হারিয়ে যাচ্ছে গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য নিদর্শন মাটির তৈরি ঘর-বাড়ি গুলো।