হেফাজতের হরতাল;  নতুন ৪ মামলা দায়েরসহ ২৩৭ জন গ্রেপ্তার

এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
হেফাজতের বিক্ষোভ মিছিল, হরতাল ঘিরে সৃষ্ট তাণ্ডবে ব্রাহ্মণবাড়িয়া কার্যত অচল। গোটা জেলা শহরটি এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে ধ্বংসের ক্ষতচিহ্ন। ত্রিশটিরও বেশি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ঘটিয়ে নারকীয় তাণ্ডব চালায় হামলাকারীরা। এসব ঘটনায় নতুন করে মামলা হয়েছে চারটি এবং গ্রেপ্তার হয়েছে আরও ৩০ জন। এই নিয়ে মামলার সখ্যা ৫৫ এবং গ্রেপ্তারের সংখ্যা ২৩৭ জনে উন্নীত।
প্রকাশ, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশ সফরকে ঘিরে আন্দোলনে নামে হেফাজতে ইসলাম। এই ঘটনায় চট্টগ্রামে মাদ্রাসাছাত্র নিহতের জেরে ২৬ মার্চ বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তাণ্ডব চালায় হেফাজতের কর্মী-সমর্থকেরা। নিহত হয় এক যুবক। এর জেরে ২৮ মার্চ আহুত হরতালে চালানো হয় আরও নারকীয় তাণ্ডব। হামলা-ভাঙচুর থেকে বাদ যায়নি ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রেস ক্লাব এমনকি সাংবাদিকরাও। ত্রিশটিরও বেশি সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে হামলা-ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসব ঘটনায় এ পর্যন্ত ৫৫ টি মামলা দায়ের এবং গ্রেপ্তার হয়েছে ২৩৭ জন।
পুলিশ জানায়, বুধবার (১৪ এপ্রিল) বিকেলের পর থেকে পুলিশ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে নতুন করে আরো ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করে। এই নিয়ে গ্রেপ্তারের সংখ্যা উন্নীত হলো ২৩৭ জনে। সহিংস ঘটনাসমূহের প্রাপ্ত স্থিরচিত্র এবং ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনা করেই অভিযুক্তদের সনাক্ত করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছে পুলিশ। এদিকে ২৬-২৮ মার্চ তাণ্ডবের ঘটনায় নতুন করে আরো চারটি মামলা দায়ের হয়েছে এবং চারটিই হয়েছে সদর মডেল থানায়। এই নিয়ে মামলার সংখ্যা ৫৫তে উন্নীত হলো।  ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় ৪৯টি, আশুগঞ্জ থানায় তিনটি, সরাইল থানায় দুইটি এবং আখাউড়া রেলওয়ে থানায় একটিসহ মোট ৫৫ টি মামলা দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ বাদী হয়ে এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের পক্ষে দায়েরকৃত এসব মামলায় আসামী করা হয়েছে ৩৫ সহস্রাধিক মানুষকে। তবে এসবে নামোল্লেখ করা হয় মাত্র ৪১৪ জনের। বাকি সবাই ‘অজ্ঞাতনামা দুস্কৃতিকারী’ হিসেবে উল্লেখ করা হয় মামলার আরজিতে। এ সকল মামলার বিপরীতে এখন পর্যন্ত ২৩৭ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জেলা পুলিশ নিশ্চিত করেছেন।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার পুলিশ সুপার মো. আনিসুর রহমান বলেন, পুলিশ ভিডিও ফুটেজ ও স্থিরচিত্র দেখেই আসামীদের গ্রেপ্তার করছে। এছাড়াও যাদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগ রয়েছে তাদের গ্রেপ্তারে অভিযান চালানো হচ্ছে, যাতে কোনো নিরীহ মানুষ হয়রানির শিকার না হন।’