নাসিরনগরে দুই বন্ধুর তর্কের জেরে দু’গোষ্ঠীর সংঘর্ষ : মহিলাসহ ৩৫ জন আহত-আটক ১৪
এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া
খেলা নিয়ে একই গ্রামের দুই বন্ধুতে হয় বাদানুবাদ। ক্রমশ তা গড়ায় তর্কবিতর্ক থেকে হাতাহাতির পর্যায়ে। আর এরই জেরে দুই গোষ্ঠীর লোকদের মধ্যে সৃষ্ট দফায় দফায় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষে আহত হয় মহিলাসহ অন্তত ৩৫ জন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আটক করে ১৪ জনকে। এই নিয়ে উভয় পক্ষের লোকদের মাঝে বিরাজ করছে উত্তেজনা। ঘটনাটি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলা এলাকার।
জেলার নাসিরনগর উপজেলার কুণ্ডা ইউনিয়নের কুণ্ডা গ্রামেরই দুই বন্ধুর মাঝে রোববার (০৯ অক্টোবর) সন্ধ্যায় প্রথমে বাদানুবাদ, পরে তর্কবিতর্ক এবং হাতাহাতির সূত্রপাত ঘটে। এরই জেরে রোববার রাতে দুই গোষ্ঠীর লোকদের মাঝে ঘটে দফায় দফায় সংঘর্ষ। পু্লিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনাসহ ঘটনার সাথে জড়িত ১৪ জনকে আটক করে।
দফায় দফায় সংঘর্ষের পর রোববার রাত সাড়ে ১০টার দিকে আহত মহিলাসহ ৩৫ জন আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন। আহতেরা হলেন, অ্যাডভোকেট এমদাদু্ল হক (৩৫), হাফেজ থন মিয়া (৫০), সালমা বেগম (৩৫), ওমর আলী (২৮),কাজল মিয়া (৪৮), জহির মোল্লা (৪৫), মামুন মোল্লা (৩০), কাউসার আহমেদ (৫০), লোকমান মোল্লা (৬০), সোহেল রানা (৩৮), শামসুল হক (৪৭), ইকবাল হোসেন (৩০), স্বপন মিয়া (২২), রিয়াদ মিয়া (১৭), জালাল উদ্দিন (২৮), তাকলিক মিয়া (৩৫), আবদুল আহাদ (৩৭), আম্বর আলী (২৫),আশাদুল ইসলাম (১৭), আমিনুল হক (২০), নয়ন মিয়া (২০), জাবেদ আলী (১৮), মনির হোসেন (১৭), আরমান মিয়া (১৮), জসিম উদ্দিন (২৬), রাসেল মিয়া (১৭), ছোরাপ মিয়া (৪৫), জসিম মিয়া (১৮), আশুক মিয়া (৩৫), ছোট্টু মিয়া (৩০), ইসমাইল হোসেন (৩৭), রাকিব উদ্দিন (২৩), কোশেন মিয়া (৪০), আংগুর মিয়া (৩০) এবং জহির মোল্লা (৪৫)। তাদের মধ্যে সাতজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, একই এলাকার আবদাল মিয়ার ছেলের রায়হানের সাথে হোসেন মিয়ার ছেলে জাবেদের বন্ধুত্বের সম্পর্ক।রোববার বিকেলে স্থানীয় একটি খেলাধুলাকে কেন্দ্র করে দু’জনের মধ্যে কথা-কাটাকাটি থেকে হাতাহাতি হয়। এরই জের ধরে দু’জনের গোষ্ঠীর লোকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে দফায় দফায় সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। রাত পর্যন্ত চলে এই সংঘর্ষ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এই ঘটনায় উভয় পক্ষের মহিলাসহ অন্তত ৩৫জন আহত হয়। আহতদের সকলেই আড়াইশ’ শয্যাবিশিষ্ট ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা নেন। এর মধ্যে গুরুতর অবস্থায় সাতজনকে ভর্তি করা হয়েছে।
নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (ওসি) হাবিবুল্লাহ সরকার ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘ঘটনার খবর পেয়েই পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ গিয়ে দীর্ঘক্ষণ চেষ্টা চালিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং জড়িত থাকার দায়ে ঘটনাস্থল থেকে ১৪ জনকে আটক করে। পরিস্থিতি বর্তমানে নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’