কুমিল্লার শতভাগ মাদক ও ধূমপানমুক্ত গ্রাম ধনপুর
মহিউদ্দিন মোল্লা।।
কুমিল্লার শতভাগ মাদক ও ধূমপানমুক্ত গ্রাম হিসেবে ধনপুরের নাম ঘোষণা করা হয়েছে। বুধবার বিকালে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলার ধনপুর গ্রামে এই ঘোষণা দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিস ঘোষ। গ্রামের পাঠাগার প্রাঙ্গণে আয়োজিত অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন ওসি দেবাশিষ চৌধুরী,উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল হাই বাবলু,ইউনিয়ন চেয়ারম্যান জামাল প্রধান,ইউনিয়ন সদস্য আবুল কাশেম,লাল সবুজ সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা কাউসার আলম সোহেল,গ্রামের বাসিন্দা মনির হোসেন ও মেডিকেল কলেজের ছাত্র এস এম ফরহাদ প্রমুখ।
বিভিন্ন সূত্র জানায়, কুমিল্লার ৫টি উপজেলা ভারত সীমান্তবর্তী। সীমান্তের অধিকাংশ গ্রাম গুলোতে মাদক আগ্রাসনের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি জেলার ব্রাহ্মণপাড়ার গঙ্গানগর গ্রামে অভিযান চালাতে গিয়ে হামলার শিকার হন টাস্কফোর্স সদস্যরা। গঙ্গানগর গ্রামের অধিকাংশ মানুষ মাদক ব্যবসায় জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। সেখানে সদর দক্ষিণ উপজেলার গলিয়ারা দক্ষিণ ইউনিয়নের ধনপুর গ্রাম ভারত সীমান্তবর্তী। তবে এটি শতভাগ ধূমপান ও মাদকমুক্ত। গ্রামের লোকজন শতভাগ শিক্ষিত। মাতৃ মৃত্যুর হার শূন্যভাগ।
ওসি দেবাশিষ চৌধুরী বলেন,সদর দক্ষিণ থানায় কর্মকালীন সময়ে দেখেছি,ধনপুর গ্রামের মানুষের নামে কোন মামলা নেই। তাদের মাদকের সাথে কোন সংশ্লিষ্টতা নেই। এই গ্রামের মানুষ শান্তিপ্রিয়।
সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়,পাঠাগার ও মসজিদের মাঝে একটি ছোট মাঠ। সেখানে আলোকিত গ্রাম ঘোষণার সভা বসেছে। মাঠের দক্ষিণ পাশে একটি ছায়া ছড়ানো বট গাছ। দখিনা মিষ্টি হাওয়ায় বটের পাতা দুলছে। তার মাঝ দিয়ে বিকালের সূর্যের আলো মাঠে বসা মানুষদের গায়ে পড়ছে। ধনপুর গ্রাম আলোকিত গ্রাম ঘোষণায় মাঠে বসা মানুষদের খুশির আভা সূর্যের সাথে মিশে নতুন দীপ্তি ছড়াচ্ছে। তবে গ্রামাবাসী খুশির মাঝেও আক্ষেপ সড়কের বেহাল অবস্থা নিয়ে। তাদের দাবি গ্রামের সড়ক গুলো পাকাকরণের।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শুভাশিস ঘোষ বলেন, ধনপুর গ্রামে একটি পাঠাগার উদ্বোধন করতে এসেছিলাম। তখন জানতে পারি-এখানে কেউ মাদকের সাথে জড়িত নয়। ৬জন ধূমপানের সাথে জড়িত। তাদের আমরা ১৩মাস ধরে কাউন্সিলিং করেছি। গত ঈদে তারা ঘোষণা দিয়েছেন ধূমপান ছেড়েছেন। তাই এই গ্রামটিকে আলোকিত গ্রাম হিসেবে ঘোষণা করেছি। আমরা চাই এই গ্রামের মতো বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম মাদক মুক্ত হোক।