কেমন কাটছে স্বজনবিহীন রোগীদের দিনকাল

কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

হাসিবুল ইসলাম সজিব।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ(কুমেক) হাসপাতাল। কত শত মানুষ চিকিৎসা সেবা নিয়ে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন পরিবার পরিজনদের কাছে। কিন্তু এখানে এমন কিছু রোগী আছেন তাদের কোথায় আছেন মা-বাবা, কোথায় আছে পরিবার পরিজন কেউ জানেন তা। এমন অবস্থায় দিনের পর দিন কাটছে কুমিল্লা মেডিকেলে বারান্দায়। কারো গায়ে ছেঁড়া গেঞ্জি,আবার কারো গায়ে কিছুই নেই। শুধু মেডিকেলের একটা বেড কভার মুড়ানো। মাথার নিচে নেই কোন বালিশ। দেওয়া হচ্ছে না কোন ঔষধ । ব্যথায় কাতরাচ্ছেন। ডান ভাঙ্গা,বা’পায়ে এবং বা’চোখে ব্যথা পাওয়া এক মহিলা। পাশে শীতে কাঁপছে এক বৃদ্ধ। এমন দৃশ্য কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ক্যাজুয়েলটি বিভাগের করিডোর থাকা অজ্ঞাত রোগীদের।
জানা যায়, মেডিকেলে বর্তমানে অজ্ঞাত এগারো জন রোগীর ফাইল থাকলেও রোগী রয়েছে ০৪জন। দুইজন পরুষ, দুই মহিলা। একজন মহিলা রোগীর ডান হাত ভাঙ্গা, বামপায়ে এবং বামচোখে রয়েছে আঘাতের চিহ্ন। বাকি তিন জনের কি সমস্যা জানেন না কর্তব্যরত নার্সরা। শাহ আলম নামক একজন তাদের দেখবাল করলেও ডাক্তার কিংবা নার্স কেউ যাচ্ছেন তাদের নিকটে।
দায়িত্বে থাকা শাহ আলম জানান, তাদের খাওয়া-দাওয়া, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা,ঔষধ দেওয়া সব আমি নিজেই করি।
অন্য রোগীদের স্বজনরা জানান, ঐ রোগীদের নিকটে ডাক্তার কিংবা নার্স কেউ যায় না। শুধু একজন এসে খাবার এবং পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা করে। করিডোরে পড়ে থাকতে দেখে খারাপ লাগে, ব্যথায় সারা রাত চিল্লাচিল্লি করে। কেউ কাছে যায় না দিচ্ছে না কোন ঔষধ । তাদের জন্য একটি রুম, চিকিৎসা দেওয়ার জন্য ডাক্তার, নার্স থাকলে ভালো হবে।
কর্তব্যরত নার্সরা বলেন, অজ্ঞাত রোগীরা আমাদের ওয়ার্ডের না। তাদেরকে দেখার জন্য রয়েছে শাহ আলম। তিনি তাদের সব কিছু করেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ক্যাজুয়েলটি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, অজ্ঞাত রোগীদের করিডোরে পড়ে থাকতে দেখে আমাদেরও খারাপ লাগে। আমরাও অনেক সময় টাকা দিয়ে শাহ আলমের মাধ্যমে জামা-কাপড় কিনে দেই। তাদের জন্য একটি নিদিষ্ট রুম করে দিলে ভালো হয়। আমরা চাই তারাও সুস্থ হয়ে পরিবারের কাছে ফিরে যাক।
কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ সেখ ফজলে রাব্বি জানান, অজ্ঞাত রোগীদের থাকার জন্য রুম এবং চিকিৎসার বিষয়ে আমাদের মিটিং হয়েছে। দুই এক দিনের মধ্যে একটি সিদ্ধান্ত আসবে। সে সিদ্ধান্তের আলোকে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।