যেভাবে অ্যাম্বুলেন্স ও দালালমুক্ত উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স

সানোয়ার হোসেন,চৌদ্দগ্রাম।।
২০ নভেম্বর কর্মস্থলে যোগদান করেন চৌদ্দগ্রাম স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রশিদ আহমেদ চৌধুরী। কর্মস্থলে যোগদানের ১৫ দিনের মধ্যে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতরে নিয়মিত অবস্থান করা ব্যক্তিমালিকানাধীন অ্যাম্বুল্যান্স মুক্ত করেছেন। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগ ও ওয়ার্ডে কমেছে দালালের উৎপাত। নিয়মে আনা হয়েছে ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের।
এর আগে সবসময় স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের প্রবেশপথসহ এলোমেলোভাবে পার্কিং করে রাখা হতো অ্যাম্বুল্যান্স। এসব অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা অবস্থান করতেন জরুরি বিভাগ ও এর আশেপাশে। তারা ঘুরে বেড়ান রোগীদের ওয়ার্ডে। জরুরি বিভাগে কোন রোগী এলে অথবা কোনো রোগী অন্যত্র স্থানান্তরের প্রয়োজন দেখা দিলে ভিড় লেগে যেত সেখানে। ব্যাহত হতো স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের বহির্বিভাগে দালালদের বিচরণ ছিল স্বাভাবিক ব্যাপার। বহির্বিভাগের প্রবেশ মুখে ও ডাক্তারদের কক্ষের বাইরে এদের বিচরণ করতে দেখা যায় বেশি। কেউ চিকিৎসা নিতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলেই প্রথমে তাদের প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হয়। অথবা কোন রোগী ডাক্তারদের কক্ষ থেকে বের হলেই শুরু হয় এদের জিজ্ঞাসাবাদ, হাতে নিয়ে দেখে প্রেসক্রিপশন। এরপর রোগীকে নিয়ে যান নির্দিষ্ট ডায়াগনস্টিক সেন্টারে।
নিয়ম করা হয়েছে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের আসা-যাওয়ায়। এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে শুধু বুধবার আসতে পারবেন তারা।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এ্যাম্বুল্যান্স, দালাল ও বিক্রয় প্রতিনিধিদের আসা-যাওয়া সীমিত করায় খুশি চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা। সন্তানকে নিয়ে বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে আসা নাসরিন আকার বলেন- আগে হাসপাতালে প্রবেশ মুখ থেকেই কিছু মানুষ বিরক্ত করতো, ডাক্তার কোনো পরীক্ষা দিলে প্রেসক্রিপশন নিয়ে তারা টানাটানি শুরু করতো। এখন সেরকম কিছু নেই।
জামাল হোসেন নামের আরেকজন রোগী বলেন, বর্তমান পরিবেশ সন্তোষজনক। আগের মতো কোলাহল নেই, সিএনজি অটোরিকশা, হকার ও অ্যাম্বুল্যান্স নেই। বহির্বিভাগের পরিবেশও সুশৃঙ্খল।
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সংশ্লিষ্টরা বলছেন অনেক মুমূর্ষু রোগীকে এখান থেকে কুমিল্লা বা ঢাকায় নেয়ার প্রয়োজন পড়ে। তখন রোগী নিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের প্রতিযোগিতা রোগীকে স্থানান্তরে আরো বিলম্ব হয়। বর্তমানে এই অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা দুপুর পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকেন টিএস ডাঃ রশিদ আহমেদ চৌধুরীর চলে যাওয়ার। তিনি চলে গেলে অ্যাম্বুল্যান্স চালকরা এক এক করে ফিরে আসেন স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স আঙ্গিনায়।
যোগাযোগ করলে ডা. রশিদ আহমেদ চৌধুরী বলেন- স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে রোগীদের স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করার জন্য যা যা করতে হবে তিনি তা-ই করবেন। ইতোমধ্যে দালাল ও অ্যাম্বুল্যান্স মুক্ত করা হয়েছে। ঔষধ কোম্পানির বিক্রয় প্রতিনিধিদের জন্য নিয়ম করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভেতর ও বাইরের পরিবেশ পরিচ্ছন্ন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মূল ফটকে নিরবিচ্ছিন্ন নিরাপত্তার জন্য আরেকজন নিরাপত্তাকর্মী বাড়িয়ে দুইজন করা হয়েছে।

inside post
আরো পড়ুন