ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৩ বছরের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা


এইচ.এম. সিরাজ, ব্রাহ্মণবাড়িয়া।।
ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ৩৩ বছরের পুরনো রাস্তায় প্রতিবন্ধকতার কারণে দুর্ভোগে স্থানীয় বাসিন্দারা। বাড়ি নির্মাণকালে পাঁচ ফুট প্রশস্তের এজমালি রাস্তা রাখার বিষয়টি দুই পরিবার ভূমি ক্রয়ের দলিলে উল্লেখক্রমে ওয়াদাবদ্ধের পরও চলাচলের রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির বিষয়ে ভূক্তভোগীদের প্রতিবাদ, স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যাক্তিদের হস্তক্ষেপেও প্রতিকার না পেয়ে শেষতক পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন ভূক্তভোগী এক পরিবার। এহেন চিত্র জেলা শহরের কাউতলীস্থ নিয়াজ মুহম্মদ স্টেডিয়াম পাড়ায়।
জেলা শহরের কাউতলি মৌজায় প্রায় ৩৫ বছর আগে একই দাগে সমপরিমাণ জায়গা ক্রয়, বাড়ি নির্মাণ করে নিকটতম প্রতিবেশী হয়ে সপরিবারে বসবাস, ত্রিশ বছর অতিক্রান্তে চুক্তি লঙ্ঘন করতে থাকায় রুষ্ট হয়ে ওঠেন প্রতিবেশীরা। শেষতক রাস্তায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করায় দুর্ভোগের শিকার হয়ে প্রতিকার পেতে ‘মফিজ কুটির’র মালিক মো. মঞ্জুরুল হুদা নিকটতম প্রতিবেশী মো. শফিকু্ল ইসলাম গংয়ের (বাড়ি নং ১৪৫০) বিরুদ্ধে গত ৫ মে পৌর প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেছেন।
দাখিলকৃত অভিযোগ সূত্র এবং অভিযোগকারী ও সরেজমিন প্রত্যক্ষকালে স্থানীয় এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে, প্রায় ৩৫ বছর আগে কাউতলী মৌজার ২৬ নং খতিয়ানের ১১ দাগের সমপরিমাণ (পাঁচ শতক করে) জায়গা কিনেন মসজিদ রোডস্থ ইসলামিয়া লাইব্রেরির স্বত্ত্বাধিকারী মঞ্জুরুল হুদা এবং টি.এ রোডের অধুনা লুপ্ত বইঘর লাইব্রেরির স্বত্ত্বাধিকারী শফিকুল ইসলাম। দলিল রেজিস্ট্রিকালে উভয়ের চলাচলের সুবিধার্থে সামনের অংশের এক পাশে পাঁচ ফুট প্রশস্তে ৫০ ফুট দৈর্ঘের রাস্তা এজমালি রাখার বিষয়ে চুক্তিবদ্ধ হন। সে মোতাবেকই ক’বছর পর বাড়ি নির্মাণ করে নিকট প্রতিবেশী হিসেবে সপরিবারে বসবাস করতে থাকেন মঞ্জুরুল হুদা ও শফিকুল ইসলাম। পাঁচ ফুট প্রশস্তের এজমালি রাস্তা ব্যবহার করতে থাকেন নির্বিবাদে। পরবর্তীত মঞ্জুরুল হুদার বাড়ির লাগোয়া দক্ষিণাংশে ‘নীড়’ নামীয় ১৪৪৮ নং বাড়ি নির্মাণকালে রাস্তা রাখায় পূর্বেকার পাঁচ ফুট প্রশস্তের রাস্তাটি ১০ ফুট প্রশস্ত হয়। ত্রিশ বছর অতিক্রান্তে ১৪৫০ নং বাড়ির মালিক শফিকুল ইসলাম গং চুক্তি লঙ্ঘন করতে থাকেন। প্রচলিত আইন অমান্য করে একতলা ভবনের বর্ধিতাংশ নির্মাণ, বাথরুম ও পয়:নিষ্কাশনের ময়লা পানি এজামালী রাস্তার ড্রেইনে ফেলে পরিবেশ নোংরাকরণ, এজমালি রাস্তাটির প্রায় পাঁচ ফুট প্রশস্তাংশে পরিত্যাক্ত মালামাল রেখে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন। বর্ধিত বিল্ডিংয়ের সানসেড রাস্তার উপরে বাড়ানো, কাঠের জানালার কপাট বাইরের দিকে রেখে তৈরি করায় রাস্তায় চলাচলে বিঘ্ন ঘটাসহ দৃষ্টিকটু পরিবেশে রূপান্তর করেন। বারংবার প্রতিবাদ করেও সুরাহা না পেয়ে এলাকার গণ্যমান্যদের অবহিত করায় সরদার মাতব্বরগণ অভিযুক্তদের তলবক্রমে জানালার কপাট ভেতরের দিকে স্থাপনসহ ড্রেইন থেকে ময়লার পাইপ সরাতে বলাকেও শফিকুল ইসলাম গং পরোয়া করেননি। তৎপ্রেক্ষিতেই দুর্ভোগের শিকার ১৪৪৯ নং ‘মফিজ কুটির’র মালিক মো. মঞ্জুরুল হুদা তার নিকট প্রতিবেশী মো. শফিকু্ল ইসলাম গংয়ের বিরুদ্ধে গত ৫ মে পৌর প্রশাসক বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করে সরেজমিনে তদন্তক্রমে অভিযুক্তদের অবৈধভাবে নির্মাণকৃক্ত জানালার কপাট, সানসেড ও ময়লার পাইপ ড্রেইন হতে সরিয়ে নেয়াসহ আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
লিখিত অভিযোগ দাখিলকারী মো. মঞ্জুরুল হুদা বলেন, ‘বিগত ১৯৯২ সালে বাড়ি নির্মাণ করে আমি ও আমার ছোট ভাই সপরিবারে বসবাস করে আসছি। দীর্ঘ ৩৩ বছরের পুরনো রাস্তায় এভাবে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করা, বাথরুম ও পয়:নিষ্কাশনের ময়লা পানি এজমালি খোলা ড্রেইনে ফেলাসহ নানাবিধ অন্যায় কার্যক্রমের বিষয়ে প্রতিবাদ জানানো এমনকি স্থানীয় গণ্যমান্যদের হস্তক্ষেপেও কোনোরকম সুরাহা পাইনি। শফিকুল ইসলামের পরিবার সবকিছু অগ্রাহ্যে বেপরোয়া হতে থাকায় উপযুক্ত এবং আইনগত প্রতিকার পেতে পৌরসভায় লিখিত অভিযোগ জানাতে বাধ্য হয়েছি।’