কোরবানপুরে আতংক কাটেনি, ফিরে আসেনি দুটি পরিবার

 

inside post

আমোদ প্রতিনিধি।

ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে হামলার ঘটনায় ১৩দিনেও আতংক কাটেনি কুমিল্লার মুরাদনগর উপজেলার কোরবানপুরে। ভয়ে এখনো বাড়ি ফিরেনি দুটি পরিবার। পোড়া বাড়িতে আতংকেই দিন কাটছে ক্ষতিগ্রস্থদের। তাদের চেহারায় আতংকের ছাপ স্পষ্ট।

স্থানীয়রা জানান, গত ১ নভেম্বর ধর্মীয় ইস্যু নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয় সাতটি বাড়ি, মন্দির ও ভোজনালয়। ভয়ে এখনো ভিটেয় ফিরেননি মনিলাল দেবনাথ ও শংকর দেবনাথের পরিবার। যারা বসতভিটেয় আছেন তাদের মাঝে এখনো আতংক রয়েছে।

পূর্ব ধৈইর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বন কুমার শিব বলেন, গত ১ নভেম্বরের ঘটনায় আমার বাড়িসহ ছয়টি বাড়ি মন্দির পুড়িয়ে দেয় একদল দুর্বৃত্ত। এ ঘটনার পরে স্থানীয়রা ক্ষতিগ্রস্থদের কিছু সহযোগিতা করেছে। এখনো সরকারি সহয়োগিতা আসেনি। ক্ষতিগ্রস্থ সবাই আতংকেই আছে। এমন আতংকের কারণে এখনো দুটি পরিবার ভিটায় ফিরেনি।

ক্ষতিগ্রস্থদের সরকারি সহযোগিতার বিষয়ে মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা অভিষেক দাশ জানান, ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য টিন এসেছে। নগদ অর্থ আসার বাকি। আগামী দু এক দিনের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য টিন ও নগদ অর্থ সহায়তা আসবে। তখন ক্ষতিগ্রস্থদের হাতে নগদ অর্থ ও টিন তুলে দেয়া হবে। তবে ক্ষতিগ্রস্থদের বলা আছে তাদের যে কোন সমস্যায় স্থানীয় চেয়ারম্যানের কাছে জানাতে। উপজেলা প্রশাসন সব ধরণের সহযোগিতার জন্য প্রস্তুত রয়েছে।

এদিকে কোরবানপুরে সহিংসতার ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১৯ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাঙ্গরা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা কামরুজ্জামান তালুকদার। তিনি বলেন, অন্যান্য আসামিদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত আছে।

উল্লেখ্য, গত ১ নভেম্বর শনিবার মহানবীকে (সা.) ব্যঙ্গ করে কোরবানপুর ও আন্দিকুটের দুইজন ব্যক্তি স্ট্যাটাস দিয়েছেন-এমন ঘটনা ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে কোরবানপুরে বিক্ষোভ শুরু হয়। ওইদিন বিকেলে বাঙ্গরা বাজার থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করেন কোরবানপুরের ধনমিয়া নামে এক ইউপি সদস্য। এ ঘটনায় রাতেই দুই অভিযুক্ত কোরবানপুর গ্রামের রায় মোহন দেবনাথের ছেলে স্থানীয় বøু বার্ড কিন্ডারগার্টেনের প্রধান শিক্ষক শংকর দেবনাথ ও আন্দিকুট গ্রামের জীবন ভৌমিকের ছেলে অনিক ভৌমিককে আটক করে। পরের দিন ২ নভেম্বর সকালে তাদের জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। বিকেল ৩টায় কোরবানপুর বাজারে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও মসজিদের ইমামদের নিয়ে এ ঘটনার সুষ্ঠু সমাধানে মিটিং শুরু হয়। মিটিং চলাকালীন সময়ে কয়েকটি বাড়িতে আগুন দেয় একদল লোক। এসময় তার বাড়িতে ব্যাপক ভাঙচুর করা হয়। পুড়ে ছাই হয়ে যায় বাড়ির সমস্ত মালামাল।

আরো পড়ুন